ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার কাইমপুর ইউনিয়নে ১৪ বছরের সহজ ও সরল প্রকৃতির এক প্রতিবন্ধি শিশুকে জোরপূর্বক ধর্ষনের অভিযোগ উঠেছে একই এলাকার সুমন মিয়া (২৪) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে । এই ঘটনায় ওই প্রতিবন্ধি কিশোরীর মা বাদী হয়ে কসবা থানায় সুমনের বিরুদ্ধে ধর্ষনের অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগটির প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় গতকাল শনিবার থানায় ধর্ষনের মামলা হিসাবে অন্তর্ভূক্ত করেছে পুলিশ। ধর্ষনের ঘটনাটি কিছু লোকজন স্থানীয়ভাবে মিমাংসার চেষ্টা করে। পরে ইউপি চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলী ভূইয়াকে জানানোর পর তিনি ধর্ষণের বিষয় মিমাংসা যোগ্য নয় বলে থানায় প্রেরণ করেন। অভিযোগ, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কসবা উপজেলার কাইমপুর ইউনিয়নের ওই প্রতিবন্ধি কিশোরী তার মায়ের সাথে গত বুধবার (১ জুলাই) দুপুরে তাদের গ্রামের উত্তর পাশে একটি মৎস্য খামারের পাড়ে লাকড়ী কুড়াতে যায়। দীর্ঘ সময় পর মেয়েটির মা তাকে ওই খামারের পাড়ে রেখে বাড়িতে দুপুরের খাবার খেতে আসে। ওই সময় তাদের পাশ্ববর্তী বাড়ির সুমন মিয়া (২৪) মেয়েটিকে একা পেয়ে জোরপর্বক ধর্ষন করে। এ সময় শিশুটি অজ্ঞান হয়ে পড়লে সুমন পালিয়ে যায়। পরে মেয়েটির মা খাবার শেষে ফিসারির পাড়ে গিয়ে দেখতে পায় তার মেয়ে বস্ত্রহীন রক্তাক্ত ও অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে আছে। পরে তার মা ও পরিবারের অন্যান্য লোকজন মাথায় পানি দিলে ঘন্টাখানেক পরে কিশোরীর জ্ঞান ফিরে আসে। ঘটনার পর থেকেই সুমন মিয়া এলাকা থেকে পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় কিশোরীর মা বাদী হয়ে গত শুক্রবার সুমন মিয়াকে আসামী করে থানায় একটি ধর্ষনের মামলা করে। পুলিশ গতকাল শনিবার মামলাটি ধর্ষনের মামলা হিসাবে থানায় ডাইরি করে। গতকাল শনিবার দুপুরে ওই কিশোরীর বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, অসুস্থ অবস্থায় শুয়ে আছে ওই কিশোরী। মা বলেন, তাকে রেখে বাড়িতে আসার পর সুমন মিয়া তার মেয়েকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে। উলঙ্গ রক্তাক্ত এবং অজ্ঞান অবস্থায় তার মেয়েকে পেয়েছেন। পরে কাপড় পড়িয়ে ঘন্টাখানেক মাথায় পানি ঢালার পর সুস্থ হয়। সহজ ও সরল ভাষায় শিশুটি বলেন, সুমন মিয়া তাকে গলায় চিপা দিয়ে ধরে কাপড় খুলে খারাপ কাজ করেছে। সাহেব সর্দারগন মিমাংসার কথা বলায় মামলা করতে দেরী হয়েছে। ধর্ষক সুমনের বাবা জানায় এ ঘটনায় পুলিশ আসার পর থেকেই তার ছেলে বাড়ি থেকে চলে গেছে। কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ লোকমান সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মেয়েটি সহজ ও সরল প্রকৃতির। ঘটনার দুইদিন পর শিশুটির মা থানায় এসে সুমনের বিরুদ্ধে ধর্ষনের অভিযোগ করেছে। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় গতকাল শনিবার থানায় মামলাটি রেকর্ড হয়েছে। ৫ জুলাই রোববার ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য শিশুটিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে এবং আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ২২ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হবে।