মানুষের সমর্থন ছিল বলেই মুক্তি পেয়েছিলাম…শেখ হাসিনা

প্রশান্তি ডেক্স ॥ এক যুগ আগে জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থনে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্ববধায়ক সরকারের সময়ে ১১ মাসের কারাবাস থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) গণভবনে জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান-২০২০ এবং মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে সারাদেশে এক কোটি গাছের চারা বিতরণ ও বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এই কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের দিনটা একটা বিশেষ দিন, কারণ ২০০৭ সালে তদানিন্তন তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমাকে গ্রেপ্তার করেছিল, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছিল। আমি কৃতজ্ঞতা জানাই আমার বাংলাদেশের জনগণের প্রতি, প্রবাসীদের প্রতি এবং বিশ্ব নেতাদের প্রতি। সেই সাথে আমি ধন্যবাদ জানাই আমাদের সংগঠন, বিশেষ করে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ থেকে শুরু করে সকল সংগঠন এবং সহযোগী সংগঠন, তারা প্রতিবাদ করেছিলেন। ওই সময় ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ২৫ লাখ মানুষের স্বাক্ষর সংগ্রহ করে তত্ত্ববধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার অফিসে দিয়েছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের এই সমর্থন আমি পেয়েছিলাম বলেই এবং জাতীয়, আন্তর্জাতিক চাপে আমাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। যদিও আমার বিরদ্ধে বিএনপির আমলে ১২টা মামলা দেওয়া হয় আর তত্ত্ববধায়ক সরকারের আমলে আরো পাঁচটা মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। প্রতিটি মামলা.. আমি বলেছি তদন্ত করে দেখতে হবে যে আমি কোনো দুর্নীতি করেছি কিনা। ঠিক সেটাই করা হয়েছে। কাজেই আল্লাহর রহমতে সবকিছু থেকেই আমি খালাস পেয়েছি এবং জনগণের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা যে তাদের অকুণ্ঠ সমর্থনে আমি মুক্তি পেয়েছিলাম ২০০৮ সালে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশের জন্য, জাতির জন্য কাজ করা এটা আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছ থেকে আমি শিখেছি। যেকোনো অবস্থা মোকাবেলা করা, প্রতিকূল অবস্থা মোকাবেলা করে চলা আর সৎপথে থেকে দেশ ও জাতির কল্যাণ করা। জাতির পিতা বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার আদর্শে বাংলাদেশকে গড়তে চাই। ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ হিসেবে। ইনশাল্লাহ বাংলাদেশকে আমরা ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ হিসেবে আমরা গড়ে তুলবো। তিনি বলেন, যদিও করোনা হয়ত আমাদের সকল অগ্রযাত্রা সাময়িকভাবে থামিয়ে দিয়েছে তবে আমি আশা করি যে জনগণ এর থেকে মুক্তি পাবে, আবার আমরা এগিয়ে যাবো। বিএনপি ২০০৬ সালে ক্ষমতা ছাড়ার পর ২০০৭ সালে রাজনৈতিক সংঘাতের মধ্যে সেনা নিয়ন্ত্রণে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা নিয়েছিল, তারা গ্রেপ্তার করে দুই নেত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে। ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই নিজস্ব বাসভবন ধানমন্ডির সুধা সদন থেকে বঙ্গবন্ধু কন্যা এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রায় ১১ মাস তাকে রাখা হয় সংসদ ভবন এলাকার বিশেষ কারাগারে। কারাগারে থাকাকালে শেখ হাসিনা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। সে সময় চিকিৎসার জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে তার মুক্তির জোরালো দাবি ওঠে। চাপের মুখে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০৮ সালের ১১ জুন শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। ওই বছরই ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। গ্রেপ্তারের সেই দিনটিকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘কারাবন্দি দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.