কসবায় সংখ্যালঘু পরিবারের উপর হামলা, ভাংচুর লুটপাট ও জমি দখলের চেষ্টা

ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ কসবার শিমরাইলে একটি হিন্দু পরিবারকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ ও তাদের জায়গায় ঘর নির্মাণ করতে গভীর রাতে হামলা চালিয়ে নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকার লুটপাট করেছে একটি ভূমিদস্যুচক্র। হিন্দু পরিবারটির নিজস্ব সম্পত্তি জবরদখল করে রাতেই শুরু করেছিল গৃহ নির্মাণ। খবর পেয়ে কসবা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দু’জনকে গ্রেফতার করে এবং হামলার শিকার সংখ্যালঘু পরিবারের ২ সদস্যকে উদ্ধার করে কসবা হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনার ভয়াবহতা সংখ্যালঘু বেশ কিছু পরিবার আতংকে দিন কাটাচ্ছে। কসবা থানা পুলিশ ও শিমরাইল গ্রামের অধিবাসীরা জানায় শিমরাইল গ্রামের স্বর্গীয় নগেন্দ্র চন্দ্র চন্দের বাড়ির পাশে ৪৩৮১/৪৩৮২ দাগের ২০ শতক ভূমি দখল করার জন্য প্রতিবেশী একটি ভূমিদস্যুচক্র যথাক্রমে জনি আলম (৪৫), নাজমুল হোসেন (৩৫), দুলু মিয়া (৩০), আনোয়ার হোসেন (২৫)সহ ২০/২৫ জনের একটি সংখবদ্ধ সন্ত্রাসী দল গত ১০ জুলাই রাতের প্রথম প্রহর আনুমানিক ২টায় নগেন্দ্র চন্দ্র চন্দের বাড়িতে হামলা, ঘরদোর ভাংচুর ও লুটপাট করে। অন্যদিকে পার্শ্ববর্তী ভূমিতে জোরপূর্বক ঘর উঠানোর চেষ্টা করে। পরিবারের সদস্যরা বাধাদিলে তাদেরকে বেদম প্রহার ও রক্তাক্ত জখম করে। খবর পেয়ে কসবা থানা থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরবর্তী গ্রাম শিমরাইলে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে দু’জন ভাড়াটিয়া মাস্তানকে গ্রেফতার করে এবং ৪টি রামদাসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করে। গ্রেফতারকৃত ভাড়াটিয়া মাস্তানরা হলো (১) জামাল মিয়া (৩৬), কামরুজ্জামান (৩৬)। জামালের বাড়ি শিমরাইলে অন্যদিকে কামরুজ্জামানের বাড়ি নবীনগর উজেলার বলে জানা গেছে।
স্বর্গীয় নগেন্দ্র চন্দের পুত্র শংকর চন্দ্র চন্দ, অজিত চন্দ্র চন্দ জানান, এক সময়ের হিন্দু অধ্যুষিত শিমরাইল গ্রামেই তাদের পূর্বপুরুষ থেকে বসবাস। পার্শ্ববর্ত জনি আলম গংরা গ্রামের অন্য প্রান্ত থেকে এসে এখানে পুকুরপাড়ে বাড়িঘর করেছে। দীর্ঘদিন যাবত তাদেরকে উচ্ছেদ করার জন্য নানা ধরণের ফন্দিফিকির করছে। মিথ্যা মামলা করে হয়রানী করছে। জায়গা জমির জাল দলিল করে বিভিন্ন অপকৌশল চালাচ্ছে। সর্বশেষ গত ১০ জুলাই শুক্রবার রাতের প্রথম প্রহর অর্থাৎ রাত ২টার দিকে এই নৃশংস হামলা চালায় লুটপাট করে এবং ওই জায়গায় ঘর উঠানোর চেষ্টা করে।
এব্যপারে কসবা থানা অফিসাার ইনচার্জ মোহাম্মদ লোকমান হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি জানান, ওই রাতে ফোন পেয়ে তিনি তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে এসআই সঞ্জয় এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ পাঠান। তারা ঘটনাস্থল থেকে এই দু’জনকে গ্রেফতার করেন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় শংকর চন্দ্র চন্দের একটি মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। মামলা নং ২১, তারিখ ১০/০৭/২০২০ ইং।
এঘটনায় শিমরাইলের ১৭০টি হিন্দু পরিবার এখন আতংকের মধ্যে দিনাতিপাত করছে। তারা আইনমন্ত্রীসহ সরকারের সংশ্লীষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তান্তর কামনা করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.