প্রশান্তি ডেক্স ॥ দুই পয়েন্টের সমীকরণ মিলিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে স্প্যানিশ ফুটবলের সিংহাসনে বসতে যেন তর সইছিল না রিয়াল মাদ্রিদের। গত বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) রাতেই শিরোপা উদযাপন করতে চান বলে জানিয়ে রেখেছিলেন অধিনায়ক সার্জিও রামোস। যেই কথা সেই কাজ। ২০১৯-২০ মৌসুমের লা লিগা জিতে দুই বছর পর আবারও স্পেনের ‘রাজা’ রিয়াল মাদ্রিদ। আলফ্রেদো দে স্তেফানো স্টেডিয়ামে গত বৃহস্পতিবার ভিয়ারিয়ালকে ২-১ গোলে হারিয়ে উৎসবে মেতে ওঠে জিদানের দল। শিরোপা জয়ের ম্যাচে নায়ক করিম বেনজেমা; দুই অর্ধে করেন একটি করে গোল। শেষ দিকে ব্যবধান কমান ইবোরা। প্রতিযোগিতার ইতিহাসে রেকর্ড চ্যাম্পিয়ন রিয়ালের এটি ৩৪তম শিরোপা। এর আগে ২০১৬-১৭ মৌসুমে শেষবার লিগের মুকুট পরেছিল তারা। ফরাসি কিংবদন্তি জিদানের কোচিংয়ে এই নিয়ে একাদশ শিরোপা জিতল ইউরোপের সফলতম ক্লাবটি। প্রথম মেয়াদে ৯টি; আর এবার এটি দ্বিতীয়। গত জানুয়ারিতে উয়েফা সুপার কাপ জিতেছিল তারা। এদিকে ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে আক্রমণাত্মক শুরু করা রিয়াল প্রথম সাত মিনিটে ভালো দুটি আক্রমণ করে; তবে সাফল্য মেলেনি। তৃতীয় মিনিটে দানি কারভাহালের দুর্বল লবের চার মিনিট পর লুকা মদ্রিচও দুর্বল শট নেন। খানিক পর লক্ষ্যভ্রষ্ট শটে হতাশ করেন বেনজেমাও। ২৯তম মিনিটে গোলের দেখা পায় রিয়াল। মাঝমাঝে প্রতিপক্ষের পাস ধরে কাসেমিরো বাড়ান সামনে। মদ্রিচ বল ধরে একটু এগিয়ে ডান দিকে বাড়ান বেনজেমাকে। ডি-বক্সে জায়গা বানিয়ে কোনাকুনি শটে গোলরক্ষকের দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা। ২০০৯ সালে লিওঁ থেকে বের্নাবেউয়ে যোগ দেওয়া বেনজেমা এই প্রথম লা লিগায় টানা দুই মৌসুমে ২০ বা তার বেশি গোল করলেন। গত মৌসুমে করেছিলেন ২১টি। দ্বিতীয়ার্ধের অষ্টম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সম্ভাবনা জাগান কারভাহাল। তবে একজনকে কাটিয়ে তার নেওয়া শট রুখে দেন গোলরক্ষক সের্হিও আসেনহো। ৬৬তম মিনিটে বাঁ দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়া চাভি কিনতিয়াকে রুখতে ছুটে যান কোর্তোয়া। বল নিয়ন্ত্রণে নিলেও প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারের হাঁটুতে মাথায় আঘাত পান বেলজিয়ান গোলরক্ষক। তবে, মাঠেই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে খেলা চালিয়ে যান তিনি। ৭৭তম মিনিটে ঘটনাবহুল পেনাল্টি গোলে শিরোপা অনেকটাই নিশ্চিত করে ফেলেন বেনজেমা। রামোস ডি-বক্সে ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টিটি পায় রিয়াল। স্পট কিক নিতে এসে আলতো টোকায় বল একটু সামনে বাড়ান অধিনায়ক রামোস, ছুটে এসে জোরালো শটে লক্ষ্যভেদ করেন বেনজেমা। প্রতিবাদ জানায় সফরকারীরা। অবশ্য রামোসের ঢোকার আগেই বেনজেমা ডি-বক্সে ঢুকে পড়ায় আবার পেনাল্টি শট নিতে হয় রিয়ালকে। এবার আর কোনো বাড়তি ঘটনা নয়, নিচু শটে আসরে নিজের ২১তম গোলটি করেন ফরাসি ফরোয়ার্ড। চার মিনিট পর তারা পেতে পারতো আরেক গোল। কিন্তু টনি ক্রুসের দূরপাল্লার জোরালো শট ক্রসবারে বাধা পায়। ৮৩তম মিনিটে ডান দিক থেকে সতীথের ক্রসে হেডে ইবোরা ঠিকানা খুঁজে পেলে নাটকীয়তার সম্ভাবনা জাগে। ব্যবধান কমিয়ে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে ভিয়ারিয়াল। ৮৮তম মিনিটে সমতাও টানতে পারতো তারা; তবে মুহূর্তের ব্যবধানে দুটি সুযোগ হারায় দলটি। করোনাভাইরাস বিরতির পর পুনরায় মাঠে গড়ানো লিগে শুরুতে বার্সেলোনার চেয়ে ২ পয়েন্ট পিছিয়ে ছিল রিয়াল। ‘নতুন রূপে’ ফেরা লিগে তারাও যেন ফেরে নতুন চেহারায়; ১০ ম্যাচ খেলে সবকটিতেই জিতল দলটি। ৩৭ ম্যাচে ২৬ জয় ও আট ড্রয়ে তাদের পয়েন্ট ৮৬। একই সময়ে ক্যাম্প ন্যুয়ে শুরু হওয়া ম্যাচে ওসাসুনার বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরে গেছে বার্সেলোনা। আসরে এটি তাদের ষষ্ঠ পরাজয়। ২৪ জয় ও সাত ড্রয়ে কাতালান ক্লাবটির পয়েন্ট ৭৯। গেতাফের মাঠে ২-০ গোলে জেতা আতলেতিকো মাদ্রিদ ৬৯ পয়েন্ট নিয়ে আছে তিনে। ২ পয়েন্ট কম নিয়ে চতুর্থ স্থানে আছে সেভিয়া। আগামী মৌসুমে এই চার দল খেলবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে।
Share on Facebook
Follow on Facebook
Add to Google+
Connect on Linked in
Subscribe by Email
Print This Post