প্রশান্তি ডেক্স ॥ নারী সহকর্মীর করা ডিজিটাল নিরাপত্তা ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় বেসরকারি টেলিভিশন এটিএন নিউজের এক সাংবাদিককে একদিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত গত সোমবার (২০ জুলাই) এই আদেশ দেন। ওই সাংবাদিক হলেন এটিএন নিউজের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক ইমরান হোসেন সুমন। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাকে হাজির করে পল্লবী থানায় পর্নোগ্রাফি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের সোশ্যাল মিডিয়া ক্রাইম অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন টিমের পরিদর্শক কাজী মো. নাসিরুল আমীন। অপরদিকে সাংবাদিকের পক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক জামিনের আবেদন খারিজ করে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন। এর আগে রোববার রাতে সাংবাদিক সুমনকে গ্রেপ্তার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সিরিাস ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, রাজধানীর ফু-ওয়াং ক্লাবের কর্মচারী চঞ্চল পালমাকে দিয়ে সিম কিনিয়েছিলেন সাংবাদতিক ইমরান হোসেন সুমন। এরপর সিমটি নিজেই ব্যবহার করতেন তিনি। আর এই সিমের মাধ্যমে তারই নারী সহকর্মীর নামে আপত্তিকর এসএমএস ও ছবি পাঠানোর তথ্য প্রমাণ পেয়েছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সিরিয়াস ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। এ কাজে ইমরান হোসেন সুমনের বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণ পাওয়া সাপেক্ষে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাংবাদিক ইমরান হোসেন সুমনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে সিরিয়াস ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের এডিসি মনিরুল ইসলাম বলেন, আমরা শুধুমাত্র কারো দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ইমরান হোসেন সুমনকে গ্রেপ্তার করিনি। আমাদের কাছে থাকা তথ্যের সব প্রমাণ জোগাড় করার পর তাকে গ্রেপ্তার করেছি। বিভিন্ন নাম্বার ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুক্তভোগী সম্পর্কে তার স্বামী, দেবর, মা ও স্বামীর বন্ধুদের কাছে আপত্তিকর এসএমএস ও ছবি পাঠানোর অভিযোগে গত ১২ জুলাই পল্লবী থানায় মামলা দায়ের করা হয়। ২০১২ সালের পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের ৮ (৩) ও ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫/২৯ ধারায় মামলাটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী। পরবর্তীতে মামলাটি তদন্ত শুরু করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সিরিয়াস ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিএমপির একজন উপ কমিশনার পদমর্যাদার কর্মকর্তা জানান, তদন্তে চঞ্চল পালমার নাম আসে। তাকে গ্রেপ্তারের পর বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত যাচাই-বাচাই ও জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, চঞ্চল পালমাকে দিয়ে সিম কিনিয়েছিলেন ইমরান হোসেন সুমন। সিমটি সুমন নিজেই ব্যবহার করতেন। বিভিন্ন জনের কাছে এসএমএস ও ছবি পাঠানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে। সব তথ্য প্রমাণ যাচাই করে সুমনের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।