পলকে পদ্মায় হারিয়ে গেল দৃষ্টিনন্দন বিদ্যালয়টি

প্রশান্তি ডেক্স ॥ চরাঞ্চলের বাতিঘর হিসেবে দীর্ঘদিন ঐতিহ্য ধরে রেখেছিল মাদারীপুরের শিবচরের বন্দরখোলার এস.ই.এস.ডি.পি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়। মেধাবী শিক্ষার্থী গড়ার কারিগর এ বিদ্যালয়ের সেই ঐতিহ্য আর রইল না। পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে বহু বছরের পুরোনো বিদ্যালয়টি। গত বুধবার মধ্যরাতে চোখের পলকে এস.ই.এস.ডি.পি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ভবনটি গিলে খায় সর্বনাশা পদ্মা নদী। ভবনের মাঝ বরাবর ফেটে গিয়ে হেলে পড়ে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বিদ্যালয় ভবনের সামান্য অংশই নদীর বুকে মাথা তুলে থাকতে দেখা গেছে। এর আগে সপ্তাহখানেকের টাকা বর্ষণ ও পদ্মার অব্যাহত ভাঙনে পানি ঢুকে পড়ে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। জানা গেছে, ২০০৯ সালে স্থাপিত হয় নরুদ্দিন মাদবরের কান্দি এস.ই.এস.ডি.পি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়। এটিই ছিল চরাঞ্চলের একমাত্র দৃষ্টিনন্দন, বহুতল ভবন ও আধুনিক সুবিধা সম্বলিত উচ্চ বিদ্যালয়। শিবচরের বন্দরখোলা ইউপির মমিন উদ্দিন হাওলাদারকান্দি, জব্বার আলী মুন্সিকান্দি, বজলু মোড়লের কান্দি, মিয়া আজম ব্যাপারীর কান্দি, রহমত হাজীর কান্দি, জয়েন উদ্দিন শেখ কান্দি, মসত খাঁর কান্দিসহ প্রায় ২৪টি গ্রাম ও ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার চর নাসিরপুরসহ কয়েকটি গ্রামের শিক্ষার্থীরা এ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতো। এদিকে পদ্মায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় চরাঞ্চলে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। ঘরবাড়ি ভেঙে নিরাপদ স্থানে ছুটছে মানুষ। এছাড়া ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় পানিবন্দী জীবনযাপন করছে হাজারো পরিবার। স্থানীয়রা জানায়, পদ্মার নিকটবর্তী হওয়ায় প্রতি বছরই বন্যার পানিতে ডুবে যেত বিদ্যালয়সহ আশপাশের এলাকা। গত বছর পদ্মা নদী ভাঙতে ভাঙতে পেছন দিক দিয়ে বিদ্যালয়টির কাছে চলে আসে। এরপর ওই এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকিয়ে রাখে। চলতি বর্ষা মৌসুমেও ভাঙন ঠেকাতে ডাম্পিং চালানো হয়। তবে পদ্মার প্রচন্ড স্রোতের কারণে জিও ব্যাগের ডাম্পিং কোনো কাজে দেয়নি। বুধবার রাতে তিনতলা ভবনটি হেলে পড়ে। গত বৃহস্পতিবার পুরোপুরি তলিয়ে যায় বিদ্যালয়টি। বন্দরখোলা ইউপির ৩ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার মো. ইসমাইল জানান, বুধবার মধ্যরাতে হঠাৎ করেই বিদ্যালয় ভবনের ভেতর থেকে বিকট শব্দ হতে থাকে। খবর পেয়ে অসংখ্য মানুষ ট্রলারে করে বিদ্যালয়টি দেখতে আসে। চোখের সামনেই বিদ্যালয়টি মাঝখান থেকে ফেটে গিয়ে পেছন দিকে নদীর বুকে হেলে পড়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.