করোনা ভীতিতে ঈদের স্মৃতি

ঈদুল আযহা উদযাপিত হয়েছে বহুল আলোচিত ও সমালোচিত ভীতিকর নৈরাজ্যকারী করোনাকে ভেদ করে। বিশেষ করে বাংলাদেশে করোনা ভীতি ঈদকে কাবু করতে পারেনি। বরং করোনা ভীতিকে ঈদ আনন্দ কাবু করে দিয়েছে। শহরের মানুষের মনে কিছুটা ভীতির সংকোচ থাকলেও গ্রামের মানুষের মনে কোন প্রকার সংকোচ ছিল না বরং করোনা ভীতিকে জয় করে ঈদ আনন্দকে পুরোপুরি উপভোগ করেছে।
ঈদ শপিং থেকে শুরু করে ঈদ মোলাকাত এমনকি কোলাকুলিতেও কমতি ছিল না। করোনা ভীতির কোন ছাপই মানুষের মনে এমনকি আচরণে অথবা বেশভুশায় পরিলক্ষিত হয়নি। আমি গ্রামে গিয়ে এক বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি। যখন মাক্স ব্যবহার করেছি তখনই মানুষের হাসি ও তামাশায় পরিণত হয়েছি। গ্রামে অতিতে এবং বর্তমানে করোনার কোন অস্তিত্ব ছিল না এমনকি থাকবেও না। বরং গ্রামের মানুষ শহুরেদের দায়ী করে যাচ্ছে করোনা ভীতি ছড়ানোর জন্য। ইতোমধ্যে যাদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রচারিত হয়েছে তারা সবাই গ্রাম্য চিকিৎসায় সুস্থ্য হয়েছে এমনকি এই রোগের কোন ছাপ তাদের মনে স্থান করে নিতে পারেনি বরং শহুরে ভীতি ও চিকিৎসা অব্যবস্থাপনা এমনকি ডাক্তারের অনিহা অথবা অনাগ্রহ ও ভীতির কারণে মনুষ্য সৃষ্ট বাণিজ্যিক দুবৃত্তায়নের দুভিক্ষ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। শয়তানের ফাদ হিসেবে জনসম্মুখ্যে প্রকাশিত হয়েছে তবে এই ফাঁদে ফেসে যাওয়াদের নিয়ে অনেক রসিকতাও কম হয়নি।
সর্বোপরি করোনা পরিস্থিতিতে এমনকি বণ্যার ছোবলে বিপযস্ত মানুষগুলো ধর্মীয় বিশ্বাস ও উন্মাদনায় মেতে উঠে সকল অপকৌশল ও অপশক্তিকে মোকাবিলা করে কোরবানীর ত্যাগে ও বন্যার ছোবলে করোনা ভীতিকে ভাসিয়ে দিয়েছে। মানুষ মানুষের আনন্দের মহামিলনে সাম্যের দৃষ্টান্তে একীভুত হয়েছে। সকলের ঘরে একই খাবার এমনকি একই আয়োজনে মেতে ছিল বাংলার আকাশ ও বাতাশ। তবে এই ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ থেকে শিক্ষা নেয়াত মত দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে। যা বিশ্ববাসীর আগামীর জন্য পাথেয় হয়ে থাকবে।
ধর্মীয় উন্মাদনায় রাষ্ট্রীয়, সামাজিক, পারিবারিক আনন্দের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিয়েসহ সকল সামাজিক আয়োজন। দাওয়াত খাওয়ানো ও খাওয়ার রেওয়াজ যেন বাস্তবায়িত হয়েছে সকল প্রতিবদ্ধকতাকে পরাজিত করে। মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে ঐক্যের কাতারে একত্রিত হয়েছে। করোনার ভীতিতে সৃষ্টি হওয়া দূরত্ব দুরীভুত হয়ে ঐক্যের সুদৃঢ় বন্ধনের গাথুনী আরো মজবুত হয়েছে। তাই করোনা ভীতিতে ঈদের স্মৃতি হয়েছে মধুময় ও অম্লান এবং যুগের চাহীদায় শ্রেষ্টতের দাবিদারে অগ্রগামী।

Leave a Reply

Your email address will not be published.