প্রশান্তি ডেক্স ॥ কথিত গণমাধ্যম (মিডিয়া) প্রতিষ্ঠানের আড়ালে সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সিল ব্যবহার চাকরি দেওয়ার নামে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গত মঙ্গলবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানীর মগবাজার ও পুরানাপল্টনে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, ‘নিউজ ২১ টিভি’ এবং ‘এবি চ্যানেলের’ মালিক মো. শহিদুল ইসলাম ও সাপ্তাহিক সময়ের অপরাধ চক্রের মালিক আমেনা খাতুন। ওই দুটি অফিস থেকে বিপুল পরিমাণ ভুয়া নিয়োগপত্র ও জাল সিল জব্দ করা হয়েছে। পরে অফিস দুটি সিলগালা করেছেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন র্যাব-৩ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু। র্যাব কর্মকর্তারা বলছেন, অনুমোদনহীন টিভি চ্যানেল ও পত্রিকার সাইনবোর্ড ব্যবহার করে ১০ থেকে ১২টি সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার প্রলোভনে প্রায় এক হাজার বেকার যুবকের কাছ থেকে আড়াই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। অভিযান শেষে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, অনুমোদনহীন টিভি চ্যানেল ও পত্রিকার সাইনবোর্ডে স্বাস্থ্য বিভাগ, কারিগরি ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, বিআইডব্লিটিএ ও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোতে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করে চক্রটি এক হাজার বেকার যুবকের কাছ থেকে প্রায় আড়াই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সরকারি ওই প্রতিষ্ঠানগুলোতে যখন আসল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হতো, তখন চক্রটি তাদের অফিসের ঠিকানা দিয়ে তাদের মতো করে বিজ্ঞপ্তি দিতো। তাদের দালাল নেটওয়াকের মাধ্যমে হাজার হাজার বেকার যুবককে টার্গেট করতো। এমনকি তারা স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব ও তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের যুগ্ম সচিবের সিল জালিয়াতি করে নিয়োগপত্র দিতো, যা ভুয়া। পলাশ কুমার বসু আরো বলেন, ব্রাই অ্যাসোসিয়েট লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্যাডে তারা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিগুলো দিতো। কিন্তু অ্যাসোসিয়েট লিমিটেড নামের কোনো প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব নেই। সাপ্তাহিক সময়ের অপরাধ চক্রের অফিস থেকেই এই প্রতারণামূলক কার্যক্রম চালানো হতো এবং ভুক্তভোগীরা টাকা লেনদেন করেছেন এই অফিসেই। অভিযানে দেখা যায়, তাদের অফিসের ডায়েরিতে লেখা কবে কার কাছ থেকে কত টাকা নিয়েছে। এ ছাড়া সাপ্তাহিক সময়ের অপরাধ চক্রের সারাদেশের বিভাগ, জেলা ও উপজেলার অফিসে একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি তারা প্রকাশ করেছে, যাতে ৫৭০ জনের নিয়োগ দেওয়া হবে। কিন্তু তাদের বিভাগ-জেলা-উপজেলায় কোনো অফিস নেই। এটি মূলত প্রতারণামূলক। তিনি বলেন, এই চাকরির বিজ্ঞপ্তি দেখিয়ে সারা দেশ থেকে বেকার যুবকদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। কারো কাছ থেকে চার লাখ, তিন লাখ আবার কারো কাছ থেকে দুই লাখ পর্যন্ত টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। দুজনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান র্যাব কর্মকর্তারা।
Share on Facebook
Follow on Facebook
Add to Google+
Connect on Linked in
Subscribe by Email
Print This Post