জাতির পিতার অসম্পন্ন কাজ আমরা সম্পন্ন করবো… প্রধানমন্ত্রী

প্রশান্তি ডেক্স ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতার অসম্পন্ন কাজ আমরা সম্পন্ন করবো, এটাই আমাদের লক্ষ্য। জাতির পিতা শোষিত, বঞ্চিত, নির্যাতিত মানুষের মুক্তি, গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বঙ্গবন্ধুর বাংলা ভাষণ স্মরণে আয়োজিত আলোচনা এবং ফরেন সার্ভিস একাডেমির নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি ভেবেছি, করোনা ভাইরাসের কারণে হয়তো বিশ্বে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। তাই সতর্ক ছিলাম বাংলাদেশে যেন কোনোভাবেই সেই দুর্ভিক্ষের প্রভাব না পড়ে। যতটুকু পারি খাদ্য উৎপাদন করা, খাদ্য বিতরণ করা, দরিদ্র মানুষকে বিনা পয়সায় খাদ্য দেওয়া এবং খাদ্যের নিশ্চয়তা দেওয়া, সেই প্রচেষ্টা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, বিশ্বে করোনা ভাইরাস নামে এখন যে মহাদুর্যোগ চলছে, তা থেকে বিশ্ববাসী শিগগিরই মুক্তি পাক এটাই আমাদের আকাঙ্ক্ষা। মানুষ আবার সম্পূর্ণভাবে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারুক এটাই আমরা চাই। এই সময় আমাদের সাধারণত জাতিসংঘে থাকার কথা। কিন্তু যেতে পারিনি করোনা ভাইরাসের কারণে। প্রতিবার আমি জাতিসংঘে ভাষণ দিয়েছি। এবার আমার ১৭তম ভাষণ আমি দিতে পারছি না, এটা দুঃখজনক। আসলে জাতিসংঘে সব দেশের নেতাদের সঙ্গে দেখা হওয়ার একটা সুযোগ তৈরি হয়। পরস্পরের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় হয়। একে অপরকে কীভাবে সহযোগিতা করা যায়, কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়, একে অপরকে জানতে পারি। এখন বিশ্বে কূটনীতি পরিবর্তন হয়েছে। আগে ছিল রাজনৈতিক কূটনীতি। এখন হয়েছে অর্থনৈতিক কূটনীতি। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটানো, কীভাবে উন্নয়ন করা যায়, পরস্পরকে কীভাবে সহযোগিতা করা যায়, এসব।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর, ওই দিনটিও শুক্রবার ছিলো, তিনি বাংলায় ভাষণ দিয়েছিলেন। তা যদি আমরা পর্যালোচনা করি, তিনি যে কথাগুলো বলেছিলেন, তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। দুর্যোগে যদি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এর জন্য সহযোগিতা করা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, মানুষের সামাজিক উন্নয়ন, গরিব মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন, রোগ-শোক মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার অসম্পন্ন কাজ আমরা সম্পন্ন করবো, এটাই আমাদের লক্ষ্য। জাতির পিতা শোষিত, বঞ্চিত, নির্যাতিত মানুষের মুক্তি, গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন। জাতির পিতা এদেশের মানুষকে যে মর্যাদার আসনে বসিয়েছিলেন, তাকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে তা ভূলুণ্ঠিত হয়। আমি যখন আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নিয়ে বিদেশ থেকে ফিরে এলাম, তখন আমার লক্ষ্য ছিলো এদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। তখন দেশে কোনো গণতন্ত্র ছিলো না, মানুষের অধিকার ছিল না, মুখে গণতন্ত্র ছিলো। এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে। সেই ভাগ্য পরিবর্তন করাই আমার লক্ষ্য ছিলো। সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি রমনার ইস্কাটনে নবনির্মিত ফরেন সার্ভস একাডেমীর ভবন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। ফরেন সার্ভিস একাডেমীতে উপস্থিত ছিলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, পররাষ্ট্রসচিবসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published.