প্রশান্তি আন্তজার্তিক ডেক্স ॥ ভারতের উত্তরপ্রদেশের হাথরসে ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষকদের গ্রেপ্তারের দাবিতে উত্তাল গোটা দেশ। সরব হয়েছেন প্রত্যেকে। এরই মধ্যে ঘটলো এক চমকে দেওয়ার মতো ঘটনা। মধ্যরাতে মেয়ের দেহ ঘিরে তখন বসে আছে শোকস্তব্ধ পরিবার। আচমকা পুলিশ এসে নিয়ে গেলো সেই মেয়ের মৃতদেহ। আত্মীয়রা গাড়ি আটকালেও কোনো লাভ হলো না।
জানা যায়, টানা ১৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে গত মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে মৃত্যু হয় দলিত পরিবারের ওই তরুণীর। পরে হাসপাতাল থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় বাড়িতে। পুলিশের সঙ্গে মেয়েটির পরিবারের তর্ক চলে।
রাত ১০টা ১০ মিনিটে হাসপাতাল থেকে দেহটি ছেড়ে দেওয়া হলে, তাদের কিছু না জানিয়েই পুলিশ দেহটি নিয়ে চলে যায় বলে অভিযোগ করেন মেয়েটির বাবা ও দাদা। হাসপাতালের বাইরে ধর্নায়ও বসেন তারা। পরে সেখান থেকে তাদের সঙ্গে নিয়ে হাথরসের উদ্দেশে রওনা দেয় পুলিশ।
দেহটি হাথরসে বাইরে পৌঁছাতে নির্যাতিতার পরিবারের লোকজন, আত্মীয়রা পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। সুবিচার না পাওয়া পর্যন্ত মেয়েকে দাহ করবেন না বলে জানিয়ে দেন তারা। কিন্তু এরই মাঝে রুদ্রমূর্তি ধারণ করে পুলিশ। রাতেই দাহ করতে হবে বলে চাপ সৃষ্টি করে নির্যাতিতার পরিবারের উপর। নির্যাতিতার বাবা ও দাদার অভিযোগ, তাদের আপত্তি সত্ত্বেও পুলিশ দেহ তুলে নিয়ে যায় ও পুড়িয়ে দেয়।
পুলিশকে পরিবারের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, হিন্দু রীতি মেনেই মেয়েকে দাহ করবেন, তবে রাতে নয়। এরপরেই পুলিশ তাদের উপর জোর খাটাতে শুরু করে বলে অভিযোগ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, নির্যাতিতার পরিবারকে এক পুলিশকর্মী বলছেন, ‘সময়ের সঙ্গে রীতি-নীতি বদলায়। তবে আপনারাও ভুল করেছেন। সেটা মেনে নিন।’
এরপরই নির্যাতিতার পরিবারের লোকজন, আত্মীয়-স্বজন এবং গ্রামবাসীদের তালাবন্ধ করে রেখে দেহটি নিয়ে শশ্মানের উদ্দেশে বেরিয়ে পডে় পুলিশ। মেয়েটির বাবাকেও গাড়িতে তুলে নেয়। রাত আড়াইটার দিকে নির্যাতিতার সৎকার করে ফেলে তারা। সৎকারের সময় শশ্মানের আলো নিভিয়ে রাখা হয়েছিল বলেও অভিযোগ।
মেয়েটির দাদা অভিযোগে করে জানান, জোর করে বোনের দেহ তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। শশ্মানে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বাবাকেও। বোনের দেহ একবার বাড়ির ভিতরে নিয়ে আসতে চাই বলে অনুরোধ জানানো হলেও তা শোনেনি পুলিশ।
পুলিশ যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তাদের দাবি, পরিবারের সম্মতিতেই নির্যাতিতাকে দাহ করা হয়েছে।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন রাহুল গান্ধী। তিনি টুইটারে লিখেছেন, ভারতের এক কন্যাকে ধর্ষণ করে খুন করা হলো। সমস্ত তথ্য চেপে দেওয়া হলো, এমনকি মেয়ের সৎকারের অধিকারও কেড়ে নেওয়া হলো পরিবারের কাছ থেকে, যা অত্যন্ত অপমানজনক এবং অন্যায়। সূত্র: কলকাতা২৪।