নামের সঙ্গে নবাব জুড়ে দিয়ে হাসান আলীর প্রতারণা

প্রশান্তি ডেক্স ॥  হাসান আলী আসকারী। নবাব বংশের উত্তরাধিকার দাবি করে নামের সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন নবাব। তাই তিনি এখন নবাব খাজা আলী হাসান আসকারী।

এই পরিচয়ে মন্ত্রী, এমপি থেকে শুরু করে সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন তিনি। আর এই সখ্যকে পুঁজি করে ভয়াবহ প্রতারণার ফাঁদ গড়ে তোলেন এই ব্যক্তি।

সঙ্গে নেন আরও বেশ কয়েকজনকে। এই চক্র চাকরি ও বিদেশে পাঠানোর কথা বলে মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছিল বিপুল অংকের টাকা।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে শেষ পর্যন্ত বেরিয়ে আসে ভদ্রবেশী এই প্রতারকের সব অপকর্ম। শেষ পর্যন্ত ধরাও পড়ে গেছেন।  

ছবি: সংগৃহীত

গত বুধবার নবাব খাজা আলী হাসান আসকারীসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

গ্রেফতারকৃত অন্যরা হলেন- রাশেদ ওরফে রহমত আলী ওরফে রাজা, মীর রাকিব আফসার, সজীব ওরফে মীর রুবেল, আহম্মদ আলী ও বরকত আলী ওরফে রানা।

রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে সিটিটিসির ইকোনমিক ক্রাইম অ্যান্ড হিউম্যান ট্রাফিকিং টিম।

এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত নবাব পরিবারের অ্যামবুশ সিল, ওয়াকিটকি সেট, বেতার যন্ত্র, ভিওআইপি সরঞ্জাম, ল্যাপটপ, একাধিক মোবাইল, সিমকার্ড, মেডিকেল রিপোর্ট, পাসপোর্টের কপি ও বিভিন্ন ভুয়া কোম্পানির লিফলেট উদ্ধার করা হয়।

সিটিটিসির অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার তৌহিদুল ইসলাম জানান, বিদেশে চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে ২৪ অক্টোবর মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা হয়।

অভিযোগে বলা হয়, করোনা পরিস্থিতিতে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ৫০০ লোক নিয়োগ দেয়া হবে। এজন্য মামলার বাদীকে বিদেশ যেতে আগ্রহী ৪০০ লোক সংগ্রহ করতে বলেন নবাব খাজা আলী হাসান আসকারী।

তার কথা বিশ্বাস করে বাদী বিদেশ যেতে আগ্রহী ৪০০ লোকের কাছ থেকে ৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা নিয়ে আসকারীকে দেন। পরে কাউকে বিদেশে না পাঠিয়ে বাদীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন আসকারী।

সিটিটিসি কর্মকর্তা আরও জানান, এই চক্রটি প্রতারণা করে ১০ কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছে। প্রতারক চক্রের প্রধান গ্রেফতার নবাব খাজা আলী হাসান আসকারী নিজেকে নবাব সলিমুল্লাহ খানের নাতি হিসেবে পরিচয় দেন।

গণভবনে তার অবাধ যাতায়াত আছে, দুবাইয়ে গোল্ডের কারখানা আছে, বাবা ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ইত্যাদি তিনি প্রচার করে বেড়ান।

তাছাড়া তার বাবা থাকেন নিউইয়র্কে, সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের মালিকানায় তার বাবার অংশীদার রয়েছে বলে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করেন আসকারী। বাবার ব্যবসা তিনি নিজেই দেখভাল করেন বলেও প্রচার করা হয়। সিটিটিসি কর্মকর্তা জানান, আসকারী মন্ত্রী-এমপিসহ সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলে তা ফেসবুক প্রোফাইলে দিয়ে প্রতারণার কাজে ব্যবহার করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.