সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফ্রান্সের প্রশংসায় ভারতীয়রা

আন্তজার্তিক ডেক্স ॥  ফ্রান্সে সম্প্রতি শ্রেণিকক্ষে মহানবীর (সা.) এর ব্যাঙ্গচিত্র দেখানোর সূত্র ধরে একজন স্কুলশিক্ষকের শিরচ্ছেদের ঘটনা ঘটে। এরপর ইসলাম ধর্ম নিয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রঁর সাম্প্রতিক কিছু মন্তব্যের বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্বে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে ও ফরাসি পণ্য বয়কটের ডাক দেওয়া হচ্ছে। ঠিক এমন সময় ভারতে ম্যাক্রঁর সমর্থনে নানা হ্যাশট্যাগের ট্রেন্ড চলছে।

গত  বুধবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের দেশ ভারতে হাজার হাজার ভারতীয় ফ্রান্সের ভূমিকাকে সমর্থন করছেন। প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁর ‘বীরোচিত’ নেতৃত্বকে তারিফ জানাচ্ছেন।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রঁ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

ফ্রান্সের প্রতি সংহতিসূচক #আইস্ট্যান্ডইউথফ্রান্স এবং #উইস্ট্যান্ডউইথফ্রান্স ভারতে গত বাহাত্তর ঘন্টা ধরেই ‘টপ ট্রেন্ড’গুলোর মধ্যে উঠে এসেছে।  ক্ষমতাসীন দল বিজেপি’র নেতা ও পশ্চিম দিল্লির এমপি পরভেশ সাহিব সিং টুইট করেছেন, ‘সহিষ্ণুতাও ধর্মনিরপেক্ষ হওয়া উচিত। #আইস্ট্যান্ডইউথফ্রান্স। ফরাসি প্রেসিডেন্ট, আপনি দারুণ কাজ করেছেন।’

প্রথম সারির জাতীয় নিউজ চ্যানেল টিভি-নাইনের সম্পাদক ও অ্যাঙ্কর প্রিয়াঙ্কা দেও জৈন টুইটারে লিখেছেন, ‘একজন খ্রিস্টান/হিন্দু/ইহুদী শিক্ষক যদি ক্লাসে মেরি/কৃষ্ণ/যীশুর কার্টুন দেখান ও তারপর একজন খ্রিস্টান/হিন্দু/ইহুদী তার শিরশ্ছেদ করে তাহলে অবশ্যই সেটা ওই ধর্মের উগ্র মৌলবাদ হিসেবে গণ্য হবে। ইসলাম কেন এর ব্যতিক্রম হবে?’

‘ভারত কা রক্ষক’সহ বিভিন্ন দক্ষিণপন্থী গোষ্ঠী, যারা নিজেদের কট্টর দেশপ্রেমী বলে পরিচয় দেয়, তারাও এই বিতর্কে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁর সমর্থনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা পোস্ট করেছে।

#ওয়েলডানম্যাক্রঁ কিংবা #ম্যাক্রঁদ্যহিরো-এর মতো নতুন নতুন নানা হ্যাশট্যাগও ভারতে উঠে আসছে। অনেকে এখন আরও বেশি করে ফরাসি জিনিসপত্র কেনারও ডাক দিচ্ছেন।

ফ্রান্স ও ইসলামকে কেন্দ্র করে এই চলমান বিতর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারত সরকার অবশ্য এখনো কোনো বিবৃতি দেয়নি। তবে ভারতে গত ছয় বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে অনেকবার মুসলিমবিরোধী নীতি অনুসরণ করার অভিযোগ উঠেছে।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে ভারত সরকার ৩৬টি অত্যাধুনিক রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার জন্য ফ্রান্সের সঙ্গে একটি বিতর্কিত প্রতিরক্ষা চুক্তিও করেছিল। সেই যুদ্ধবিমানগুলোর প্রথম ব্যাচের পাঁচটি মাসকয়েক আগেই ভারতে এসে পৌঁছেছে। আর সেগুলো আঞ্চলিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ভারতকে বিরাট সুবিধা এনে দেবে বলেই সামরিক বিশেষজ্ঞরা দাবি করছেন।

এই পটভূমিতে ভারত যে এখন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁর সমালোচনা করে কোনো পদক্ষেপ নেবে না, পর্যবেক্ষকরাও সে বিষয়ে একমত।

Leave a Reply

Your email address will not be published.