বা আ ॥ পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে পরিবারসহ হত্যা এবং ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতা হত্যাকাণ্ডের মূল ষড়যন্ত্রের গভীরতা বিশ্লেষণ এবং কুশীলবদের পরিচয় প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন বুদ্ধিজীবীরা। পাশাপাশি ৭৫ পরবর্তী সময়ে মুক্তিযোদ্ধা এবং সেনা সদস্যদের হত্যার মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র যারা রচনা করেছিল তাদের মুখোশ উন্মোচনে জাস্টিস কমিশন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
গত শুক্রবার (৬ নভেম্বর) রাতে আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘রক্তাক্ত নভেম্বর: কিছু ঐতিহাসিক বাস্তবতা’ শিরোনামের ওয়েবিনারে এই দাবি জানান বুদ্ধিজীবীরা।
সুভাষ সিংহ রায়ের সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে যুক্ত হয়েছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দীন, লেখক ও গবেষক সৈয়দ বদরুল আহসান, জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সৈয়দ সাফায়েত ইসলাম, সাংবাদিক জায়েদুল আহসান পিন্টু।

আলোচনার শুরুতে সাংবাদিক জাহেদুল হাসান পিন্টু বলেন, “বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড, জাতীয় চার নেতা হত্যাকাণ্ডের পর ১২ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যার পেছনে কারা ছিলেন? পনের অগাস্টের পর কারা পাকিস্তানের আদলে বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চেয়েছিল? রাজনীতির এই দৗর্ঘ পরিকল্পনা বের করে আনা দরকার।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের আমলে যারা গণফাঁসির শিকার হয়েছিলেন, সেসব ফাঁসির সাক্ষীদের বয়ান নিয়ে জাস্টিস কমিশন গঠন করা দরকার।
সৈয়দ সাফায়েত ইসলাম বলেন, “পনের অগাস্ট থেকে সাত নভেম্বর, ইতিহাসের এক রক্তাক্ত অধ্যায়। সেদিনের সেসব কুশীলবরা এখনও বেঁচে আছেন, যারা পেছন থেকে সব কলকাঠি নেড়েছিলেন। আমাদের সামনে আজকে যে বাস্তবতা, আমরা কি ওই দিনের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েছি? আমরা কি সেদিনের ঘটনা বাস্তবিকভাবেই উপলব্ধি করতে পেরেছি? নতুন প্রজন্মের কাছে বিষয়গুলো নিয়ে যেতে পেরেছি কি না- এটাও বিবেচ্য বিষয়।”
নতুন প্রজন্মের কাছে পঁচাত্তরের ইতিহাস উপস্থাপনে ভূমিকা রাখার জন্য ইতিহাস গবেষকদের প্রতি আহ্বান জানান ডা. মোস্তফা জালাল। তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ধারাবাহিকতাতেই জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। খুনিরা জানতেন, বঙ্গবন্ধুর সাথে যে চার নেতা দেশের জন্য সংগ্রাম করেছেন তারা বেঁচে থাকলে আগামীতে বাংলাদেশকে অভীষ্ট লক্ষ্যে নিয়ে যেতে পারবেন।”
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও লেখক সৈয়দ বদরুল আহসান বলেন, “খন্দকার মোশতাক, জিয়াউর রহমানের পাশাপাশি তাহেরউদ্দিন ঠাকুর, মাহবুব আলম চাষীদের ভূমিকা কী ছিল, তাও গবেষণা করতে হবে। পনেরই আগস্টের পর তিন ও সাত নভেম্বরে হত্যাকাণ্ডের কুশীলবদের অনেকে মারা গেছেন। তাদের মরণোত্তর বিচার করতে হবে। সেদিনের সব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন অনেক সেনা সদস্য। তাদের ছেড়ে দেওয়া যাবে না। তাদের বিচার করতে হবে।”