বা আ ॥ গ্যাস/তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) ভিত্তিক ৩ হাজার ৪৭১ মেগাওয়াট সম্মিলিত উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন আটটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, নির্মাণাধীন গ্যাস/এলএনজি ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে কার্যক্রম শুরু করবে।
তিনি বলেন, ক্ষমতা গ্রহণের পর বর্তমান সরকার গত ১১ বছরে টেকসই, বাস্তবসম্মত এবং টেকসই পদক্ষেপের মাধ্যমে ১৮ হাজার ৬ শ’ ৬ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ১১ টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছে।
নসরুল হামিদ বলেন, বর্তমানে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৩,৫৪৮ মেগাওয়াটে পৌঁছেছে যা সরকারকে প্রায় ৯৮ শতাংশ মানুষকে বিদ্যুতের আওতায় আনতে সাহায্য করেছে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী ও গতিশীল নেতৃত্বের কারণে তা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিব বর্ষ’ উপলক্ষে নিরবচ্ছিন্ন, গুণগত ও সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করার পাশাপাশি দেশের সকল পরিবারকে আলোকিত করার লক্ষ্যে সর্বাত্মক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।
নসরুল হামিদ বলেন, বিদ্যুতের গ্রাহক সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৮৭ কোটি এবং মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন ৫১২ কিলোওয়াট পৌঁছেছে, যা ২০০৯ সালে ছিল মাত্র ২২০ কিলোওয়াট। ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের মেগা পরিকল্পনার অংশ হিসাবে সরকার ইতোমধ্যে ক্যাপটিভ এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানিসহ বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৪ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছে।
নসরুল হামিদ বলেন, আমরা সৌর শক্তি ভিত্তিক বিদ্যুতের উপর জোর দিচ্ছি, যার লক্ষ্য হচ্ছে মোট জনগোষ্ঠির ১০ শতাংশের ওপর নবায়নযোগ্য জ্বালানী অবদান রাখতে পারে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জান গেছে, ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ঘোড়াশাল ইউনিট-৪ পুনর্নির্মাণ, ১০০ মেগাওয়াট শাহজিবাজার, ৩৮৩ মেগাওয়াট বিবিয়ানা দক্ষিণ, ২০৬ মেগাওয়াট ঘোড়াশাল ইউনিট-৩ পুনর্নির্মাণ আগামী মাস থেকে কাজ শুরু করবে। আশুগঞ্জ ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র ২০২১ সালের জুন মাসে উৎপাদনে যাবে এবং সময় অনুযায়ী ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত রূপসা ৮৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে।
এদিকে মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্য বলছে, ২০২২ সালের জুলাই মাসে মেঘনাঘাট ৫৮৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং ২০২২ সালের আগস্ট মাসে মেঘনাঘাট ৭১৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হবে। পাওয়ার সেক্টর মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী, প্রাথমিকভাবে উচ্চ আয়ের দেশগুলোর মধ্যে পৌঁছাতে ২০১৬ থেকে ২০২০ সময়কালে দেশটিকে বার্ষিক ৭ দশমিক ৪ শতাংশ নিরবচ্ছিন্ন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে।
বাসস-এর সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে পাওয়ার সেল প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসেন বলেন, বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় ৮ হাজার ৫৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন আরও পাঁচটি গ্যাস/এলএনজি ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করছে।
আমরা আশাকরি প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলো ২০২৪ সালের জুন থেকে ডিসেম্বর ২০৩৩ পর্যায়ক্রমে কার্যকর হবে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ৩ হাজার ৪৭১ মেগাওয়াট ক্ষমতার আটটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে।
বর্তমান সরকার বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং প্রতিটি বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছাতে সহায়াতা করতে বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে।