করোনা বিশ্ব পরিস্থিতিকে বেসামাল করে রেখেছে। বিশ্ব ব্যবসা ব্যবস্থায় নতুনত্ব এসেছে করোনাকে কেন্দ্র করে। কোন কোন দেশের রাজনীতিরও আমুল পরিবর্তন হয়েছে এই করোনাকে কেন্দ্র করেই। কিন্তু করোনা ভীতির বিন্দুমাত্র লেশ কি কমেছে? বা কমার কি সম্ভবনা উকি দিতে পারে? যদিও আমাদের দেশে করোনাকে মোকাবেলা করতে যা যা প্রয়োজন ছিল সবই রয়েছে এমনকি করোনাকে নিয়ে বসবাস করার মানসিকতায় স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে আগামীর করনীয় ঠিক করে ফেলেছে। যার যার অবস্থান থেকে করোনাকে মোকাবেলা করার সকল আয়োজন এমনকি সরঞ্জাম নিয়ে এগুচ্ছে। তবে শিক্ষা ব্যবস্থার উপর করোনা ভুত আরো গভীরভাবে চেপে ধরেছে। যাতে করে আগামীর প্রজন্ম একটি অন্ধকারের মধ্যদিয়ে বেড়ে উঠে অন্ধকারে হাতড়িয়ে বেড়াবে। করোনা ছিল; আছে এবং থাকবে। কিন্তু এর মধ্যদিয়ে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে এটাই বাস্তবতা। করোনায় হারিয়েছি বিশ্ব বিভেক, ধর্মীয় নেতা, রাজনৈতিক নেতা, সাংস্কৃতিক নেতা, সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ছাত্র, শিক্ষক, শ্রমিক এমনকি অতি সাধারণ জনগণ। যারা এই আতঙ্ক বিরাজে সহায়তা করেছে বা করোনাকে বিশ্বভিতিতে পরিণত করেছে তাদের কেউ কি গত হয়েছে বা হবে?
করোনা প্রতিষেধক এর ব্যবসা সফল করার জন্য এবং বিশ্ব জনবল কমানোর জন্য যে কৌশলে এখন বিশ্ব এগুচ্ছে তা খুবই দু:খের। তবে প্রতিষেধক বিহীনভাবে যারা জীবনের সঙ্গে সংগ্রাম করে জয়ী হয়েছে ও হবে এমনকি করোনামুক্ত থেকে সামনে এগিয়ে যাবে সেই…… সেই বীর সেনানীদের বিপ্লবি জীবন নিয়ে গল্প কথা ও গণমাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজে কেউ কি এগিয়ে আসবেন না এই সত্য উপলব্দির এখনও কি সময় হয়নি অথবা ঐ ধনীক এমনকি ক্ষমতাধরদের সহযোগীতার নিমিত্তেই কাজ করে যাবেন। জন্মিলে মরিতে হইবে এই কথাটি চিরন্তন সত্য কিন্তু এর বাইরে কি কিছু আছে বলে মনে হয়। তবে আমাদের বিশ্বাস ও ঈমানের দুর্বলতার জন্য এই করোনা নামক ব্যধি এমনকি বিভিন্ন রোগ-জীবানুর আভির্ভাব ঘটেছে যুগে যুগে। তবে বিশ্বাস ও ঈমানের চর্চা ও এর গভীরতার মূলে কুঠারাঘাত করে এগিয়ে গেলে কোন ভীতিই ভীতি নয়। বরং আছে আশা; শান্তি; নিশ্চয়তা; নিরাপত্তা। মহান আল্লাহ তায়ালা যুগে যুগে নবী ও রাসুলগণকে পাঠিয়েছেন এই রোগ-ব্যধি নামক মহামারি এমনকি পাপের পঙ্কিলতা থেকে মুক্ত করতে। সেই ইতিহাস যদি পর্যালোচনা করি এমনকি ইতিহাস যদি দেখি তাহলে নিশ্চিতভাবেই বলা যায় এই করোনাকে মোকাবেলা করা এবং বিতারিত করা সহজ। এই সহজ কাজটুকু করতে স্বয়ং আল্লাহ আমাদেরকে ক্ষমতা দিয়েছেন, সুযোগ দিয়েছেন এমনকি পৃথিবীকে শান্ত করতে, নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তা দিতে আর শান্তির নিরন্তর ছায়াতলে ভালবাসার বন্ধনে আবদ্ধ করতে ব্যবস্থা জাগ্রত ও সচল রেখেছেন। আমাদের দৈনতা ও দু:খ হল যে, আমরা সেই ক্ষমতা ও এর ব্যবস্থাকে ব্যবহার করছি না বরং অগ্রায্য করে জীবনের কাছে পরাজয় বরন করে নিচ্ছি। সৃষ্টিকর্তার অমীয় বাণীকে ভুলে যাচ্ছি এবং সৃষ্টিকর্তার সান্নিদ্ধ থেকে দুরে সরে যাচ্ছি।
ধর্মীয় উপাসনালয়গুলো বন্ধ করে দিচ্ছে; সমগ্র পৃথিবীর মানুষগুলোকে একঘরে বা বন্ধী করে ফেলেছে। কর্মে এবং জীবনের গতীময়তাকে বন্ধী করে সকল ইতিবাচক গতিশীলতা স্তব্ধ করে দিয়েছে। এর পিছনে কিন্তু সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাকলুকাতরাই নিয়োজিত। করোনা থেকে বিশ্বকে যদি মুক্ত করতে হয় তাহলে আজ বিশ্বকে সার্বজনীন ঐক্যে আবদ্ধ হতে হবে। সমস্ত পৃথিবীকে এক কাতারে এসে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। ঐক্যবদ্ধ পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতিটি মানুষের প্রয়োজনে ২০দিনের জন্য সমগ্র বিশ্ব সমন্বিতভাবে যোগান দিতে হবে। সমগ্র পৃথিবী এই ২০দিন লকডাউনে আবদ্ধ থাকবে এবং সমগ্র পৃথিবী মিলেই ঐ ২০ দিনের প্রয়োজনীয় যোগান যোগাবে। ২০দিন সমগ্র পৃথিবী একযোগে লকডাউন নামের কঠোর ও কঠিন বন্ধী অবস্থায় থাকবে। ধনী-গরীব, উঁচু-নীচু ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সমান্তরাল দৃষ্টিভঙ্গি ও ইতিবাচক ফল প্রকাশ করতে হবে। তাহলে ঐ ২০দিন পর পৃথিবী থেকে করোনা বিতাড়িত হবে। পরীক্ষার আওতার বাইওে কোন মানুষ থাকবে না এমনকি সমস্ত পৃথিবীর বায়ুমন্ডল ও স্থল ও জল পরিচ্ছন্ন করে ফেলতে হবে এমনকি গাছপালা ও জীবজন্তু পর্যন্ত পরিস্কার ও পরিচ্ছন্নের আওতায় থাকবে। এইসকলের জন্য বিশ্ববাসী মিলে একত্রে অর্থভান্ডার ঘরে তুলে তা থেকে প্রতিটি মানুষকে ২০দিনের প্রয়োজনীয় যোগানে নিশ্চিত করে ঘরে আবদ্দ করতে পারলেই করোনা ভীতি পৃথিবী থেকে বিতাড়িত হবে। একটা উদাহরণ দিয়ে বলতে চাই হযরত নূহ আ: কিভাবে পৃথিবীকে নি:ষকলুস করেছিল মনে করে দেখুন। আমরাও কি পারিনা খোদার ইচ্ছা ও অভিপ্রায় অনুযায়ী এগিয়ে যেতে এবং এই করোনাকে পৃথিবী থেকে বিতাড়িত করতে। হযরত ঈসার অনুসারীরা আজ কোথায়? ঈসার আদেশ ও হুকুমানুযায়ী করোনাকে ধমক দিয়ে বিতাড়িত করার অধিকার ও প্রাপ্ত ক্ষমতা ব্যবহারে কেন আজ অক্ষম? ভাবুন এবং উপযুক্ত কাজে নেমে পড়ুন। সময় থাকতে মনা হুসিয়ার।
নিজেদের মধ্যে আর বিভেদ নয় বরং নিজেরা সংশোধিত হয়ে আগামীর কল্যাণ সাধনে নিয়োজিত থাকি। প্রতিটি কাজ ও চিন্তা এবং উপযুক্ত যোগান যোগাতে খোদার অভিপ্রায়ে নিয়োজিত থাকাই হলো বর্তমান সময়ের জন্য ফরজে আইন। খোদার আগমন তরান্বিত করার কজে শয়তানের বাধা বা বিলম্ব দূর করতে সজাগ হউন এবং উপযুক্ত কালামের আশ্রয় নিয়ে সামনে অগ্রসর হউন। পৃথিবী এখন শেষের প্রান্তে কিন্তু শয়তান সেই শেষের প্রান্তেই বিলম্ব ঘটানোর চক্রান্তে লিপ্ত। এই চক্রান্ত থেকে বের হওয়ার জন্য আমরা সকলেই আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে খোদার ইচ্ছা ও অভীপ্রায় বাস্তবায়িত করতে সদা অনুগত ও প্রস্তুত। খোদা তার ৯৯ভাগ ভালবাসা আমাদের মুক্তির জন্য রেখেছেন এবং এই ভালবাসায়ই আজ আমরা মুক্ত। শুধু একভাগ ভালবাসা পৃথিবীর জন্য দিয়েছেন আর এতেই এতো আবেগ ও ভালবাসা যার জন্য আমরা একে অন্যের জন্য প্রাণ দিতে কোন্ঠা বোধ করি না। তাই ঐ ৯৯ভাগ যে কত গভীর ও মহব্বতের তা শুধু খোদার সঙ্গে সম্পৃক্তরাই জানেন। তিনি আমাদেরকে এত ভালোবাসে যে, আমাদের অপরাধকে তিনি আপরাধ মনে করেন না এবং আমাদেরকে তিনি ভয়ও দেখান না বরং আমাদেরকে হুশিয়ার করার জন্য আসমানকে ধমকিয়ে ও শাসিয়ে আল্লাহ বলেন, “হে আসমান এই দেখে হতভম্ব হও; আমার বান্দারা দুটো গুনাহ করেছে; জীবন দায়ী পানির ঝড়না যে আমি; সেই আমাকেই তারা ত্যাগ করেছে আর নিজেদের জন্য ফুটো পাত্রে পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করেছে…যা অল্প পড়েই ফুড়িয়ে যাবে।” পরিশেষে খোদা সুবহানু তায়ালার বানি উচ্চারণ করে আগামীর আশা পোষণ করি। “তোমাদের জন্য আমার পরিকল্পনার কথা আমিই জানি, তা তোমাদের উপকারের জন্য, অপকারের জন্য নয়, সেই পরিকল্পনার মধ্যদিয়েই তোমাদের ভবিষ্যতের আশা পূর্ন হবে”। হ্যা তাই হউক। খোদার পরিকল্পনার বাইরে কোন কিছুই আমাদের জীবনকে ঘ্রাস করতে না পারুক। সেই পরিকল্পনায় আমরা অগ্রসর হতে চেষ্টা করি এবং পরিকল্পনা অনুসন্ধান করি। নির্ধারিত সময়ের একদিন আগে বা পরে আমাদের মৃত্যু হওয়ার কোন কারণ নেই। তাই নির্ভয়ে জীবনের গতিময়তাকে ফিরিয়ে আনি এবং খোদার স্বাণে হামদ ও নাত পাঠ করি, শুকরিয়া আদায় করি এবং গুনগান ও প্রশসংসায় পঞ্চমুখ থাকি। নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তার আবডালে নিজেদেরকে আবদ্ধ রাখি এবং অন্যদেরকে উৎসাহিত করে যাপিত জীবনে সুখানুভবে ভরিয়ে তুলি। করোনাকে ভুলে যাই এবং খোদাকে নিয়ে যার যার অবস্থান থেকে সরব থাকি। খোদার পবিত্রতাই সকল অপবিত্র, অমঙ্গল এবং অপছায়া ও ব্যাধি দুরীভুত হউক।