প্রশান্তি ডেক্স ॥ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে লক্ষ্মীপুরে দলের দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে রামগঞ্জ উপজেলার পানপাড়া বাজারে লক্ষ্মীপুর-রামগঞ্জ সড়কে এ সংঘর্ষে অন্তত ৬ জন আহত হয়েছেন।
রামগঞ্জ উপজেলার লামচর ইউনিয়নের দুই সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. ফয়েজ উল্যা জিসান ও মো. মিজানুর রহমান সোহাগের কর্মী সমর্থকরা এ সংঘর্ষে জড়ায় বলে দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে।
দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুরুতর আহত চেয়ারম্যানপ্রার্থী মো. মিজানুর রহমান সোহাগ গ্রুপের কর্মী যুবলীগ নেতা মো. শাওন হোসেন ,মো. রবিন ভুইয়া, ছাত্রলীগ নেতা সাকিল হোসেন, অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী জিসান গ্রুপের কর্মী যুবলীগ নেতা নূরে আলম, মো. কাউছার হামিদ দুঃখী ও ছাত্রলীগ নেতা মো. রতন হোসেনকে সন্ধায় রামগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
![](http://shaptahikproshanti.com/wp-content/uploads/2020/12/full-b-a.jpg)
এদিকে ঘটনাস্থলে থাকা মোহাম্মদিয়া বাজার ফাঁড়ি থানার এএসআই ফখরুল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা না করে নিজের মোবাইল ফোনে পুরো ঘটনার ভিডিও ধারণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। খবর পেয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আকম রুহুল আমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কিছু না বলেই ফিরে গেছেন বলে নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন।
আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, গত বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা শেষে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হারুনুর রশিদ, লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য একেএম শাহজাহান কামাল বিকেলে রামগঞ্জ হয়ে ঢাকা ফিরছিলেন। যাওয়ার পথে লক্ষ্মীপুর-রামগঞ্জ সড়কের পানপাড়া বাজার এলাকায় রামগঞ্জ উপজেলার লামচর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক উপজেলা যুবলীগ নেতা ফয়েজ উল্যাহ জিসান ও লামচর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান সোহাগ পৃথক পৃথক দুইটি স্থানে কেন্দ্রীয় নেতাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে সড়কের দুইপাশে অবস্থান করেন।
কেন্দ্রীয় নেতারা ওই এলাকার অতিক্রম করার পর পরই দুই গ্রুপের সমর্থকরা স্লোাগান দিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের অন্তত ৬ জন গুরুতর আহত হন।
লামচর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও দলীয় চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী মিজানুর রহমান সোহাগ বলেন, ফয়েজ উল্যাহ জিসান সমর্থকদের নিয়ে আমাদের স্থান থেকে দুইশত গজ দূরে দাঁড়িয়ে তার লোকজন নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের শুভেচ্ছা জানায়। আমার সমর্থকেরা দাঁড়িয়ে থাকা স্থানে কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত হলে ফুলেল শুভেচ্ছা জানায়। নেতারা আমাদের ফুলেল শুভেচ্ছা নিয়ে চলে যাওয়া মাত্রই জিসান তার লোকজন নিয়ে আমার কর্মী ও সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়।
সাবেক যুবলীগ নেতা ও সম্ভাব্য লামচর ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী ফয়েজ উল্যাহ জিসান বলেন, মিজানুর রহমান সোহাগের সমর্থকেরা রাস্তা বন্ধ করে স্লোগান দিতে থাকায় কর্মীদের ভীড়ের কারণে কেন্দ্রীয় নেতাদের গাড়ি যেতে পারছিলো না। আমি ও আমরা লোকজন গাড়ির সামনে থেকে লোকজন সরিয়ে দিতে গেলে ক্ষুব্ধ হয়ে মিজানুর রহমান সোহাগের লোকজন আমার লোকজনের ওপর হামলা চালায়।
লামচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল খায়ের পাটোয়ারী ও সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হক টুনা বলেন, আমরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে মিজানুর রহমান সোহাগের সমর্থকরা অবস্থান নেওয়ায় স্থানের গিয়ে অগ্রসর হওয়ায় মাত্রই সংঘর্ষ শুরু হয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ফাড়ি থানা পুলিশের এএসআই ফখরুল জানান, আমরা মাত্র ২ জন পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম। কিন্তু অনেক নেতাকর্মীর উপস্থিতির কারণে পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে নিজের মোবাইল ফোনে ভিডিও করে রেখেছি। পরে সেই ভিডিও দেখে ব্যবস্থা নেয়া যাবে।