‘ভাস্কর্য ভাঙার দায় চাপিয়ে হেফাজতকে ঘায়েল করার চেষ্টা হচ্ছে’

সংগৃহীত ছবি

প্রশান্তি ডেক্স ॥  কুষ্টিয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙার দায় হেফাজতে ইসলামের ওপর চাপিয়ে তাদের ঘায়েল করার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে সংগঠনটি। ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনার সিসিটিভি ভিডিও এবং তার ভিত্তিতে কুষ্টিয়ার দুই মাদরাসাছাত্রকে গ্রেপ্তার নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে হেফাজতে ইসলাম আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করা হয়। এসময় সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ভাস্কর্য নিয়ে উদ্ভূত সমস্যার সমাধানের প্রত্যাশার কথা জানান হেফাজত নেতারা। তারা বলেন, আলেমরা এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের নায়েবে আমির মাওলানা নুরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, দেশবরেণ্য আলেমদের শান্তিপূর্ণ ও যৌক্তিক উপদেশ এবং দাবিকে বিতর্কিত করার জন্য কুষ্টিয়ায় কে বা কারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার মাধ্যমে একটি ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করেছে।

হেফাজতে ইসলাম আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া বা গোপন তৎপরতার পথ অনুসরণ বা অনুমোদন করে না-দাবি করে নুরুল ইসলাম বলেন, এটা জানা থাকার পরও সরকার, ক্ষমতাসীন দল ও তার সমর্থকদের মধ্যকার ইসলামবিদ্বেষী একটি মহল কুষ্টিয়ার ঘটনার দায় ওলামায়ে কেরাম ও হেফাজতের নেতাদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে তাদের ঘায়েল করার অপচেষ্টা করছে।

কুষ্টিয়ার ঘটনা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হেফাজতের মাওলানা নুরুল ইসলাম বলেন, কুষ্টিয়ার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত আমরা চাই। তবে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, চিকন দুজন মানুষ উঠেছে; কিন্তু ধরে আনল মোটা মোটা দাঁড়িওয়ালা দুজন। সিসিটিভি ফুটেজের দুজনকে উঠতে দেখা গেল, নামতে তো দেখা গেল না।

তিনি বলেন, ধোলাইপাড়ে নির্মিতব্য ভাস্কর্য নিয়ে দেশের সর্বত্র ব্যাপক বিতর্ক তৈরি করেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে শীর্ষ ওলামায়ে কেরামের পক্ষ থেকে যে কোনো প্রাণীর ভাস্কর্য নির্মাণের বিষয়টি ইসলামসম্মত নয় বলে সর্বসম্মত ফতোয়া প্রদান করা হয়েছে, যা একটি পত্র দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছে। হেফাজতে ইসলাম ভাস্কর্য নির্মাণ বিষয়ে সরকারকে ইসলামের আকিদা, ঈমান ও শিক্ষার বিরুদ্ধে গিয়ে পৌত্তলিকতা প্রসারের রাষ্ট্রীয় গোমরাহির পথ পরিহার করার আহ্বান জানাচ্ছে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হেফাজতে ইসলামের নেতা ও বেফাকের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি এবং চেষ্টা করে যাচ্ছি। সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়েই এই সমস্যার সমাধান যেন সুন্দরভাবে সমাপ্ত হয়।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আগ্রহ প্রকাশের প্রেক্ষাপটে সাংবাদিকরা জানতে চান, কবে এই বৈঠক হবে। জবাবে মাহফুজুল হক বলেন, সময় এখনো ঠিক হয়নি, যোগাযোগ চলছে। তারা আশাবাদী, দ্রুত সময়ের মধ্যে বৈঠকের ব্যবস্থা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে হেফাজতের উপদেষ্টা আবুল কালাম, আব্দুল হামিদ, আব্দুল আউয়াল, আহমদ আবদুল কাদের, অ্যাডভোকেট আব্দুর রাকিব, যুগ্ম মহাসচিব জুনায়েদ আল হাবীব, মামুনুল হক, সহকারী মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী, সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউল্লাহ আমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.