বিজয়ানন্দেও করোনার থাবা

বাংগালীর স্বপ্নগাথা বাস্তব অর্জন দৃশ্যমান থেকে দৃশ্যমানতার উর্বর পর্যায়ে এসে এখন করোনার থাবায় আক্রান্ত। বিজয়ানন্দেও যেন করোনাক্রান্ত নিস্তেজ এক নিরব নিথর দেহের মত অবস্থা বিরাজমান। সমগ্র দেশেই এর প্রভাব পড়েছে এবং প্রভাবিত হয়েছে দৃশ্যমান এক অজানা বাস্তবতা। আজ দেশের সকল প্রান্তে একই অবস্থা বিরাজ করেছে। কোথাও কোথাও করোনাকে ভেদ করে নূতন সুর্য্যের উদয় হয়েছে যার স্থায়ীত্ব বেশীক্ষণ বহমান ছিল না। দেশের এই কঠিণ সময়ে আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতি এব্ং সর্বজন শ্রদ্ধেয় প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত স্বাধীনতা স্তম্ভে স্ব শরীরে উপস্থিত হতে পারেননি বরাবরের মত স্মরণ ও বরং এবং সম্মান জানানোর রেওয়াজের ধারাবাহিকতা রক্ষায়। তবে স্ব স্ব অবস্থান থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে এই সম্মান জানানো হয়েছে এবং স্ব স্ব প্রতিনিধি দ্বারা রেওয়াজ পালনের নতুন রেওয়াজের যাত্রা অব্যাহত রেখেছে এবং যাত্রা শুরুর কাজটুকু যথোপযুক্তভাবে করেছেন।
রাষ্ট্রীয়ভাবে যথোপযুক্তভাবে এই দিবসটি পালনের আদেশ নির্দেশ থাকলেও এর শৈথিলতা পরিলক্ষিত হয়েছে। মুজিব বর্ষে এই শৈথিলতা মেনে নেয়া যায় না। তবে দলীয় উৎসাহ উদ্দিপনায়ও যেন কেমন এক ভাটা পরিলক্ষিত হয়েছে। সারাদেশ ঘুরে এবং জুড়ে যে সংবাদ প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়েছে তাতেও বিশাল এক ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়েছে। দেশের আনাচে কানাচে বিজয়ের গান, গল্প, কবিতা নাটক এবং সাজ সাজ রবে ভরপুরতার যথেষ্ট কমতি ছিল। কেন এমন হলো তা বলার অবকাশ থাকে না; সকলেরই জানা এই অজানা শঙ্কার কাহিনী। সবই বিপযস্ত করতে সহায়ক হিসেবে ভুমিকা পালন করেছেন জনাব অদৃশ্য করোনা। করোনার চেয়েও ভয়াভহ যুদ্ধে লিপ্ত হয়েই আজকের বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল কিন্তু সেই জন্ম নেয়া দেশের বিজয়ের স্বাদ আস্বাধনে বাধা হয়ে দাঁড়াবে কেউ তা কি ভাবা যায়। যা বাস্তবে দেখা যায় এই করোনা আমাদেরকে আমাদের দুরান্তপনাকে থমকে দিয়েছে, শিক্ষা ব্যবস্থাকে থমকে দিয়েছে, বেঁচে থাকার ক্ষীণ আশাটুকুতেও থমকে দাঁড়াতে সাহায্য করেছে। উন্নয়ন অগ্রগতি এবং হাসি-কান্না ও অনন্দ উল্লাসে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্বাধীনতার স্বাধ আস্বাধনে এমনকি উপভোগের জোয়ারে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনা নামক এক অজানা শঙ্কা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং সরকারের বেধেঁ দেয়া নিয়মগুলো অনুসরণ করে মানুষ এগিয়ে যাচ্ছে এবং যাবে। আর এরই মাধ্যমে সাধিত হবে আগামীর উন্নয়ন ও অগ্রগতি। ডিজিটাল বাংলাদেশ এর কল্যাণে জাতি আজ এগিয়ে যাচ্ছে এবং যাবে। তবে এর পিছনের কারিগররা আগামীর তরে কিছুটা মন্থর গতিতে এগুচ্ছে বলে বোঝা যাচ্ছে। বর্তমানে সকল উদযাপন, অফিসিয়াল কাজ কর্ম এবং আন্তর্জাতিক সম্পৃতি ও চুক্তি সাধিত হচ্ছে এই ডিজিটাল বাংলাদেশের শুভ কল্যাণে। এইতো ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক চুক্তি ও সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উভয় দেশের স্বনামধন্যরা উপস্থিত থেকে ডিজিটাল মাধ্যমকে স্বার্থক করেছে এবং আশা দেখাচ্ছে আগামীর কল্যানের তরে নতুন উদ্ভাবনী মাধ্যমকে সামনে নিয়ে আসার।
করোনা ব্যাধিতে ভোগতে থাকা জাতিকে কে দেখাবে পথ ও দিশা? সেই আশা করা যায়কি আমাদের ঘেরা এই অমানিশায়। আশার প্রদিপ জেলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার যে গতিময়তা আমাদের সামনে হাতছনি দিচ্ছে তা কাজে লাগাতে এখনই দুর্বার গতিতে ঝাপিয়ে পড়তে হবে। নতুবা উদীয়মান সম্ভাবনাটুকু পথ হারিয়ে অন্ধকারের গহবরে জাতি পতিত হবে। শিক্ষার যে দুরত্ব তৈরী হয়েছে তা গোছাতে এখনই একটি যোগউপযোগী বাস্তবধর্মী উপায় খুঁজে বের করতে হবে। নতুবা আগামীতে জাতি দিশাহীন যাত্রীর ন্যায় হাতরে বেড়াতে গহীন অরণে বা সাগরে টাল-মাতাল দৃশ্যমানতায় উপনীত হবে।
শত্রুর থাবা থেকে দেশকে রক্ষার নতুন কৌশল খুঁজে বের করতে না পারলে হয়তো আগামীতে পাকপন্থি এবং বিএনপি পন্থি ওয়াজিনে ক্বেরামের দ্বারা দেশের ও দশের বারোটা বাজবে। যতই ভালবাসা এবং ক্ষমা ও সুযোগ সুবিধা দিয়ে শত্রুকে লালন পালন করা হউক না কেন; শত্রু কিন্তু শত্রুই। আর শত্রুর ঘরে বন্ধর জন্ম হয়নি এমনকি হবেও না বরং শত্রুর ঘরে মহা শত্রুরই জন্ম হবে। তাই শত্রুকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলা চলবে না বা সুযোগ সুবিধা দিয়ে শত্রুতা করার পাকাপোক্ত ব্যবস্থা করা যাবে না। আমরা দেখেছি ঐ তথাকথিত আলেমগ¦য় জ্বালাময়ী বক্তব্য দিয়ে পরিবেশ উত্তপ্ত করে সমাজে ছড়াচ্ছে বিষবাষ্প। এই বিষবাষ্প এখনই বন্ধ করতে হবে। তবে কথায় নয় কাজে এবং নতুন বুদ্ধিদৃপ্ত পরিকল্পনার মাধ্যমে। আমরা আজ ঐ পাকপন্থিদের দাম্ভিকতার কাছে পরাজিত এবং আমাদের ক্ষমা ও ভালবাসা এবং সরলতার কাছে তারা এখন উদ্ভাসিত। তাই সময় থাকতে ব্যবস্থা নেয়া জরুরী। যার যার অবস্থান থেকে শুরু করুন নতুন নতুন প্রতিবন্ধকতা যাতে ঐ পাক পন্থিরা আরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে। আর নিজেদের স্বার্থের জন্য ইসলামের বাহানা হাজির করতে না পারে। সকলেই ইসলামকে জানুন, পড়–ন এবং শিখুন এমনকি এর যথার্থতা নিজেদের জীবনে চর্চায় আনয়ন করুন।
ধর্মন্ধতায়ও করোনার থাবা বিদ্যমান থাকাবস্থায় কেমন করে ঐ সুযোগ সন্ধানীরা থলের বিড়ালের মতো মাঝে মাঝে গর্ত থেকে বেড় হয়ে আসে তা খতিয়ে দেখতে হবে। আমাদেরকে আরো সচেতন হতে হবে এমনকি সচেতনতার বেড়াজালে দেশ ও জাতিকে জড়িয়ে রেখে সতর্কতার সাথে চিন্তা ও কাজের সমন্বয় ঘটিয়ে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। করোনাতঙ্ক নয়, মোল্লাতন্ত্র নয় এমনকি শয়তানতন্ত্রও নয় বরং যা সত্য যা উপযুক্ত যা সৎ যা খাঁটি যা সুন্দর যা সম্মান পাবার যোগ্য, মোট কথা যা ভাল এবং প্রশংসার যোগ্য সেই দিকে তোমরা মন দাও।” এই চিরন্তন সত্য বানীর বাস্তবায়নে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে আগামীর সুভ সুচনা সুনিশ্চিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published.