প্রশান্তি ডেক্স ॥ ‘বহির্বিশ্বের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধের দাবি’ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দেয়া বক্তব্যকে আহাম্মকের বক্তব্য বলে উল্লেখ করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
গত বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ। তিনি সব ধরনের ফ্লাইট বন্ধ করে দেয়ারও দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে হাছান মাহমুদ বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলামের বক্তব্যে মনে হচ্ছে প্যানডেমিক নিয়ে তিনি একজন বিশেষজ্ঞ। তিনি এমনভাবে পরামর্শ দিলেন যে কী কী বন্ধ করতে হবে, আর বাংলাদেশে সরকার করোনা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ। ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবকে বলবো, উনি তো শিক্ষিত মানুষ। আমি সবিনয়ে তাকে অনুরোধ করব, আশপাশের দেশগুলোতে করোনায় কী পরিমাণ মৃত্যু বা করোনা শনাক্তের হার কতটুকু সেটি একটু বিশ্লেষণ করে দেখার জন্য।
![](http://shaptahikproshanti.com/wp-content/uploads/2020/12/Information-minister.jpg)
তিনি বলেন, বাংলাদেশে করোনা শনাক্তের হার ছিল গত কয়েক মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। শীতকালে করোনা বাড়বে এটা আগেই থেকেই সরকার সতর্ক করেছিলো, সংশ্লিষ্ট দফতরগুলো থেকে জনগণকে সচেতন করা হয়েছিলো। একই সঙ্গে মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, আমরা যতটুকু আশঙ্কা করেছিলাম করোনা বৃদ্ধির, ঠিক সেভাবে এখন পর্যন্ত আল্লাহর রহমতে হয়নি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার করোনা নিয়ন্ত্রণে আশপাশের দেশগুলো থেকে অনেক বেটার পজিশনে আছে। এই করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউও আমরা সঠিকভাবে প্রথম ঢেউয়ের মতো মোকাবিলা করতে পারবো।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের সাড়ে ৯ মাস পার হলেও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা জনগণের পাশে দাঁড়াননি মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমাদের দলের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ কমিটির পক্ষ থেকে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত মানুষের কাছে মাস্ক ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। দলের পক্ষ থেকে ১ কোটি ২০-২৫ লাখ মানুষকে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকেও দেয়া হয়েছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, করোনা শুরু হওয়ার পর তো মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা অনেক আশঙ্কার কথা বলেছিলেন, দেশে রাস্তায় রাস্তায় লাশ পড়ে থাকবে, হাসপাতালে ভর্তি হতে পারবে না রোগী। কার্যত আল্লাহর রহমতে সেটি হয়নি। তাদের শঙ্কা-আশঙ্কাগুলো ভুল প্রমাণিত হয়েছে।
তিনি বলেন, উনি (ফখরুল) আন্তর্জাতিক বিশ্ব থেকে বাংলাদেশকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার জন্য বলেছেন। প্রকৃত পক্ষে করোনা মহামারির মধ্যে পৃথিবীর কোনো দেশ আন্তর্জাতিক বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়নি। এমনকি ইউকে-তে (যুক্তরাজ্য) করোনার নতুন ভার্সন যেটি অনেক বেশি কন্টেনশাস সেটি দেখা দেয়ার পর আশপাশের দেশগুলো বিমান ও সড়ক যোগাযোগ বন্ধ করেছে, তখন ইইউ’র পক্ষ থেকে গতকাল আহ্বান জানানো হয়েছে সেটি না করার জন্য এবং যোগাযোগ পুনঃস্থাপন করার জন্য। এই প্রেক্ষাপটে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব বলেছেন, দেশকে পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার জন্য। এটি আহাম্মকের বক্তব্য ছাড়া তো অন্য কোনো কিছু নয়।
এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মানা, মাস্ক পরা এটার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। আগেও কিন্তু লকডাউন ঘোষণা করা হয়নি। সরকারি ছুটি দেয়া হয়েছিল, স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। অনেক কিছু বন্ধ করে দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু লকডাউন ঘোষণা করা হয়নি। এখনো স্কুল-কলেজ বন্ধ আছে, অনেক কিছু বন্ধ আছে।
তিনি বলেন, আমার মনে হয় প্রয়োজনের নিরিখে বিভিন্ন সংস্থা তো সেই ব্যবস্থা নিতেই পারে। সংস্থা-প্রতিষ্ঠান তো নিজস্ব সিদ্ধান্ত নিতেই পারে।