ঘরে বসে থাকার কষ্ট আমরা বুঝি ; শিক্ষার্থীদের প্রধানমন্ত্রী

প্রশান্তি ডেক্স ॥ গত মার্চ থেকে শিক্ষার্থীরা ঘরে বসে আছে। এভাবে থাকতে হয়তো তাদের ভালো লাগে না। করোনাকালে শিক্ষার্থীদের কষ্টের কথা উঠে আসলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখে। গত বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) ২০২১ শিক্ষাবর্ষের বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, নতুন বই পেলে সবার ভালো লাগবে। করোনার সময়ে ঘরে বসে থাকা কতোটা কষ্টকর, সেটা আমরা বুঝি। তবে ঘরে বসেও শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। শেখ হাসিনা বলেন, স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে, এটা দুঃখের। তারপরও নতুন বই পেয়ে শিক্ষার্থীরা আনন্দ পাবে। করোনার কারণে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। ফলে কিছুটা শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে তারা।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের হাত থেকে বিশ্ব কবে মুক্তি পাবে সেটাই বিষয়। জানুয়ারি পযর্ন্ত আমরা স্কুল বন্ধ রেখেছি। অবস্থার উন্নতি হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে, আর না হলে ছুটি আরো বাড়ানো হবে। করোনাকালে যে মানসিক সমস্যা দেখা দিয়েছে, তা কীভাবে দূর করা যায় সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্লাস না হলেও পড়ালেখা চালিয়ে যেতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এইচএসসির ফলাফলের পরেই গুচ্ছ পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, দেশের একটি মানুষও গৃহহীন, ঠিকানাহীন থাকবে না। আমরা প্রত্যেকের ঘরের ব্যবস্থা করবো। সেই সঙ্গে শিক্ষার আলোও জ্বালবো। আমরা শতভাগ শিক্ষার ব্যবস্থা করেছি। আজকের শিক্ষার্থীরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আগামী দিনের বাংলাদেশের কর্ণধার তোমরাই হবে।
প্রধানমন্ত্রী পক্ষ থেকে ২৩ জন শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী। তাদের মধ্যে মাধ্যমিকের ৯ জন এবং প্রাথমিক স্তরের ১৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) এদিন সকাল সাড়ে ৯টায় বই উৎসব শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল সাড়ে ১০টার পর এ অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বই উৎসবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
এছাড়া, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তুক বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহাসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। বিআইসিসিতে রাজধানীর বিভিন্ন স্কুলের প্রায় ৩শ’ জন শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকরা উপস্থিত রয়েছেন।
এবার করোনা পরিস্থিতির এবার ১২ দিন ব্যাপী বই দেওয়া হবে। বই বিতরণ শেষে সবাই বই উঁচিয়ে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাকে ধন্যবাদ। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। এদিকে, প্রতিবছর গণভবনে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বই উৎসব উদ্বোধন করলেও এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে ভার্চ্যুয়ালি উদ্বোধন করেন।
অন্যদিকে মুজিববর্ষ উপলক্ষে এবার বইয়ের প্রচ্ছদে নতুনত্ব আনা হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকের পিছনের (ব্যাক পেজ) মলাটে বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলনসহ বর্তমান সরকারের নানা উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের বিভিন্ন স্থিরচিত্র ক্যাপশনসহ সংযোজন করা হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০২১ সালে সর্বমোট পাঠ্যপুস্তকের সংখ্যা ১০ কোটি ২৫ লাখ ৮২ হাজার ৫৫৫টি। এর মধ্যে প্রথম-দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীর জন্য ২ কোটি ৫৯ লাখ ৯২ হাজার ৬৭১ টি বই, তৃতীয়-চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীর জন্য ৬ কোটি ৯৬ লাখ, ৯৭ হাজার ৩৭৪ টি। এর মধ্যে ৯৪ হাজার ২৭৫ জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর (চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও সাদ্রী) শিশুদের জন্য পাঁচটি ভাষায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পযর্ন্ত প্রায় ২ লাখ ১৩ হাজার ২৮৮ টি বিশেষ ভাষায় বই বিতরণ করা হয়েছে। তবে, তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা তাদের ভাষায় শুধুমাত্র বাংলা বইটি পাবে। এবছর সাঁওতাল ভাষায় পাঠ্যপুস্তক দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এবার ৯ হাজার ১৯৬ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর জন্য ব্রেইল পদ্ধতির বই বিতরণ করা হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য ২৪ কোটি ৩৩ লাখ ৩৪ হাজার কপি বই মুদ্রণ করার কাজ চলমান রয়েছে। প্রসঙ্গত, শিক্ষাকে মানসম্মত করার লক্ষ্যে এবং ঝরে পড়ার হার রোধ করতে ২০১০ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিবছর ১ জানুয়ারি উৎসবমুখর পরিবেশে ‘বই উৎসব’ করে আসছে। এবার বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের কারণে বই উৎসব করা সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু বছরের শুরুতেই শিক্ষার্থীরা নতুন বইয়ের গন্ধ পেয়েছে। গত ২০১০ সাল থেকে চলতি বছর (২০২০ সাল) পর্যন্ত এই দশবছরে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক মিলিয়ে প্রায় ৩৩১

Leave a Reply

Your email address will not be published.