কসবায় মাদক ব্যবসায়ীদের নির্যাতনের শিকার এক দৃষ্টিপ্রতিবন্ধি ব্যাবসায়ী

ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়া কসবা উপজেলার সীমান্তবর্তী বায়েক ইউনিয়নের দক্ষিন মাদলা গ্রামে মধ্যরাতে মোস্তফা নামে এক দৃষ্টি প্রতিবন্ধি দোকানীকে মারধোর করে সর্বস্ব লুট করেছে কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী। পরদিন সকালে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে নালিশ করতে যাওয়ার সময় পথে আবারো হামলার শিকার হন মোস্তফা। নিরুপায় হয়ে ভুক্তভোগী মোস্তফা কসবা থানায় ৪ জনকে আসামী করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, গত ৩০ ডিসেম্বর মধ্যরাতে উপজেলার সীমন্তবর্তী গ্রাম দক্ষিন মাদলায় মো.শামসু মিয়ার দৃষ্টি প্রতিবন্ধি পুত্র গোলাম মোস্তফার দোকান খুলতে বাধ্য করে ওই ইউনিয়নের মাদক ব্যবসায়ী বাচ্চু মিয়া ( ৪৩), ইয়াছিন মিয়া ( ৩৫), বিল্লাল মিয়া ( ৪০) ও গিয়াস উদ্দিন (৩৭)। দোকান খুলিয়ে মোস্তফার কাছে বাকিতে সিগারেট চায়। মোস্তফা তাদের নিকট আগের বকেয়া পরিশোধ করতে বললে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে দৃষ্টি প্রতিবন্ধি মোস্তফার উপর অমানুষিকভাবে মারধোর করে ছেঁচাফুলা জখম করে। এক পর্যায়ে তার গলা চেপে ধরে তার দোকান থেকে নগদ ১৮ হাজার টাকা ও ২টি স্মার্টফোন যাহার মূল্য ৩৫ হাজার টাকা এবং দোকানের দামী মালামাল লুটে নিয়ে যায়। মোস্তফার আর্তচিৎকার প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরদিন সকালে ইউপি চেয়ারম্যান আল মামুন ভ’ইয়ার বাড়িতে ঘটনার বিচার চাইতে যাওয়ার পথে পুনরায় মোস্তফার পথরোধ করে এবং ইয়াছিন, কাউছার, নয়ন ও বাহরাম মোস্তফাকে মারধোর করে। পরে কসবা থানায় এদের আসামী করে একটি অভিযোগ দায়ের করে মোস্তফা। ওইদিনই তদন্ত করতে এএসআই মহসিন ঘটনাস্থলে গেলে রাতে এবং সকালের হামলার সত্যতা পান। এ ঘটনায় একই গ্রামের উপজেলা কৃষকলীগ যুগ্ম আহ্বায়ক কুদ্দুছুর রহমান বলেন বিষষটি খুবই দুঃখজনক। এলাকার মাদক ব্যবসায়ীদের দৌরাত্মের কাছে প্রতিবন্ধিরাও অসহায়। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, হামলাকারীরা এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। রাতে সীমান্তে দাবড়িয়ে বেড়ায় এরা। তাদের ভয়ে এলাকাবাসী সাধারন মানুষ মুখ খুলতে ভয় পায়। ইউপি চেয়ারম্যান আল মামুন ভ’ইয়া বলেন, একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধির উপর একাধিকবার হামলা বিষয়টি খুবই ন্যাক্কারজনক। সে প্রতিবন্ধি হয়েও ভিক্ষা না করে দোকান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। গ্রামের সাহেব সর্দারদের বলেছি এসকল দুস্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য । কসবা থানা ওসি লোকমান হোসেন বলেন, তদন্ত করে কি পেলো এ বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা মহসিন আমাকে কিছুই জানায়নি। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগের ৪ দিন পার হলেও মামলা রেকর্ড না হওয়ায় গ্রামবাসীর মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। আসামীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমুলক বিচারের দাবী গ্রামবাসীর।

Leave a Reply

Your email address will not be published.