এসএসসি পাস করে নি ; দুই তৃতীয়াংশ প্রার্থী

প্রশান্তি ডেক্স ॥ এসএসসির গন্ডিপেরোতে পারেননি মৌলভীবাজার পৌরসভা নির্বাচনে কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলার পদে মনোনয়ন জমা দেয়া দুই তৃতীয়াংশ প্রার্থী। এর মধ্যে অধিকাংশই স্বশিক্ষিত। আবার কেউ কেউ পঞ্চম, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ। প্রার্থীদের এমন নাজেহাল শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে শহরের সচেতন ভোটার ও জনসাধারণের মধ্যে কৌতূহল বিরাজ করছে। প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতার ক্ষেত্রে তার রাজনৈতিক অতীত, জনসম্পৃক্ততা, জনসেবার পাশাপাশি আমাদের দেশে ‘শিক্ষা’ একটি গুরুত্বপূর্ণ মাপকাঠি। দুর্ভাগ্যবশত যদিও শিক্ষিত ও মেধাবী রাজনীতিকের সংখ্যা দিন দিন কমেই যাচ্ছে। কেবল শিক্ষা ও মেধার ঘাটতি নয়, দেশ ও সমাজের প্রতি অঙ্গীকার, জনসাধারণের প্রতি সমীহ, জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাও কমে যাচ্ছে জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে। মৌলভীবাজার পৌরসভা নির্বাচনে কাউন্সিলারদের হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কাউন্সিলার পদে ২২ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলার পদে ১০ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে কাউন্সিলার পদে ৮ জন স্বশিক্ষিত। পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ ৩, সপ্তম ৩, অষ্টম ৯, এসএসসি ১ ও এইচএসসি উত্তীর্ণ ৪ জন। বাকী ৩ জন উচ্চ শিক্ষিত।
এ নিয়ে পৌর শহরের একাধিক ভোটারের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, সুশিক্ষিত প্রার্থী ছাড়া নির্বাচনী এলাকার উন্নয়ন কোনো অবস্থাতেই সম্ভব নয়। জনগণের সেবক হতে হলে শিক্ষারও প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু মৌলভীবাজার পৌরসভায় কাউন্সিলার প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতার এমন দুরবস্থা দেখে আমরাই অনেকটা লজ্জিত। মৌলভীবাজার শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি মো. আবু তাহের বলেন, আমরা দীর্ঘ দিন যাবত দাবি করে আসছি যারাই নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে তাদের নিম্নতম একটি শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ করা প্রয়োজন। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। শিক্ষাগত লোক ছাড়া কোনো অবস্থাতেই জনগণের উন্নয়ন সম্ভব নয়। তথ্য প্রযুক্তির এ যোগে শিক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই শিক্ষিত লোকদের নির্বাচনে অংশগ্রহণে আগ্রহী করে তুলতে হবে। শিক্ষাবিদ মো. সিতাব আলী বলেন, এটা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি স্বরূপ ও অশনি সংকেত। এ ধরনের যোগ্যতা দিয়ে জনগণের সেবক হওয়া যায় না। স্থানীয় নির্বাচনে শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম উচ্চ মাধ্যমিক করার দাবি তুলেন তিনি। এ বিষয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণকারী পঞ্চম, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ একাধিক প্রার্থী (নাম না প্রকাশের শর্তে) বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগত যোগ্যতা খুব বেশি না থাকলেও আমাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা রয়েছে। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে জনগণের সেবা করতে পারব।

Leave a Reply

Your email address will not be published.