কসবায় আজানের সময় উচ্চস্বরে স্পিকার বাজানোকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ আহত ৫ ; গ্রেপ্তার ৩

ভজন শংকর আচার্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় আজানের সময় উচ্চস্বরে স্পিকার বাজানোকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে ৫ জন গুরুতর আহত হয়েছে। গত শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় উপজেলার কুটি ইউনিয়নের রামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১৪ জনকে আসামী করে কসবা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযোগ সুত্রে জানা যায়: উপজেলার কুটি ইউনিয়নের রামপুর গ্রামে পশ্চিমপাড়া মসজিদের পাশে গত শুক্রবার বিকেলে উচ্চস্বরে স্পিকার বাজিয়ে গ্রামের একদল যুবক ক্রিকেট খেলছিলো। সন্ধ্যায় মাগরিবের আযানের সময় স্পিকার বন্ধ করতে অনুরোধ করেন জনৈক আবুল কাসেম। স্পিকার বন্ধ করতে বলায় ক্ষিপ্ত হয়ে ক্রিকেট খেলোয়ারা আবুল কাসেমকে অশ্লিল গালাগাল সহ বেদড়ক পিটাতে থাকে । এসময় আবুল কাসেমের আর্তচিৎকারে বাড়ির লোকজন তাকে উদ্ধার করতে ছুটে আসলে তাদের উপরও আক্রমন চালানো হয়।পরে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। আহতদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার সময় বিবাদীরাও হাসপাতালে আসে পুনরায় আক্রমন করতে। খবর পেয়ে আবুল কাসেমের পুত্রা শাহপুর গ্রামের ফারুক মিয়া দেখতে আসেন। এসময় বিবাদীরা দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে হাসপাতালেই ফারুক মিয়ার উপর হামলা চালিয়ে তাকে রক্তাক্ত জখম করে। পরে খবর পেয়ে কসবা থানা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে এবং ঘটনাস্থল থেকে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো; রামপুর গ্রামের রবি মিয়ার ছেলে ইকবাল হোসেন (২৬), শিশু মিয়ার ছেলে হৃদয় মিয়া (২৪) ও পানিয়ারুপ গ্রামের রঙ্গু মিয়ার ছেলে কবির মিয়া (৩৩)। গুরুতর আহতদের মধ্যে ফারুক মিয়া ও পারভীন আক্তারের অবস্থা সকটাপন্ন হলে মুমুর্ষ অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রথমে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে ঢাকা কমফোর্ট হাসপাতালে পাঠানো হয়।এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ আসাদুজ্জামান’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান; ওইদিন তিনি ছুটিতে ছিলেন। দায়িত্বে ছিলেন ডাঃ আনিলা উষা। আনিলা উষার সংগে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন; তিনি ওই সময় শুধুমাত্র জরুরী বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন। হাসপাতালের ভিতরে রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষের বিষয়টি তিনি শিকার করেন। কিন্তু এই বিষয়ে তিনি মুখ খুলতে নারাজ। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন রোগী জানান; ওই সময় জরুরী বিভাগে কোনো ডাক্তারই ছিলোনা।উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ অরূপ পাল বলেন; তিনিও ছুটিতে ছিলেন তবে হাসপাতালে রোগীর আত্মীয়কে মারধোরের ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। এ ঘটনার সাথে জড়িত ৩ জনকে পুলিশ আটক করেছে। কসবা থানা ওসি লোকমান হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন; রামপুরের ঘটনায় ১৪ জনকে আসামী করে মামলা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.