চীনের কর্মীরা ছুটিতে ;কাজ নিয়ে শঙ্কা

প্রশান্তি ডেক্স ॥ আবার ফিরে আসছে চীনা নতুন বছর। সঙ্গে শুরু হয়েছে করোনা ছড়ানোর আতঙ্ক। চীন দেশটির এই সুখ ও শঙ্কার সঙ্গে জড়িয়ে গেছে বাংলাদেশও। কারণ, পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত লোকবলের একটা অংশ চীনের নাগরিক। তাঁদের এক-তৃতীয়াংশ নতুন বছর উদ্যাপন করতে এখন চীনমুখী। দেশটির কড়া কোয়ারেন্টিন নীতিমালা ও সীমিত ফ্লাইটের কারণে এই কর্মীরা দ্রুত কাজে ফিরতে পারবেন না। ফলে পদ্মা সেতুর কাজের গতি আবার কমতে পারে।
সেতু বিভাগ সূত্র বলছে, আগামী জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ধরে নিয়ে চলতি বাজেটে পদ্মা সেতুর জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। করোনা সংক্রমণ ও বন্যার কারণে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাস কাজ আশানুরূপ এগোয়নি। ফলে বরাদ্দ থেকে তিন হাজার কোটি টাকা ফেরত যাচ্ছে।
গত ১০ ডিসেম্বর সেতুর পুরো কাঠামো দৃশ্যমান হয়েছে। এখন স্ল্যাব বসিয়ে সড়ক ও রেলের পথ তৈরি করতে হবে। প্রকৌশলী, শ্রমিক ঠিকঠাকমতো পেলে কাজে গতি আনা সম্ভব বলে মনে করছেন প্রকল্প কর্মকর্তারা। গত ডিসেম্বরে যুক্তরাজ্য থেকে একজন প্রকৌশলী আসার কথা ছিল। করোনার কারণে আগামী মে-জুনের আগে তিনি আসতে পারছেন না। ওই প্রকৌশলী এলে স্ল্যাব বসানোর কাজে আরেকটি দল গঠন করা যেত। এখন দুই শিফটে চারটি দল কাজ করে। চীনা কর্মীরা ছুটিতে যাওয়ায় তা-ও ব্যাহত হবে। চীনা কর্মীরা ছুটি শেষে সময়মতো চলে এলে কাজে সমস্যা হবে না।
মো. বেলায়েত হোসেন, সেতু বিভাগের সচিব তবে পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, অন্যান্য বছর আরও বেশি চীনা কর্মী ছুটিতে যেতেন। গত বছর খুব সমস্যায় পড়তে হয়েছে। তবে এবার কম কর্মী ছুটিতে গেছেন। তাই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব বলে মনে করছেন তিনি।
পদ্মায় মূল সেতু ও নদীশাসনে চার হাজারের বেশি কর্মী কাজ করছেন। এর বেশির ভাগ বাংলাদেশি। চীনের দক্ষ কর্মী আছেন এক হাজারের মতো। এর এক-তৃতীয়াংশ ছুটিতে গেছেন বলে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। চীনা নতুন বছরের (লুনার নিউ ইয়ার) ছুটি ১১ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি। পদ্মা সেতু প্রকল্পের কর্মীরা ১২ জানুয়ারি চীনে যাওয়া শুরু করেছেন। চীনে গিয়ে তাঁদের দুই দফা কোয়ারেন্টিন করতে হচ্ছে। প্রথমে যে শহরে বিমানে নামছেন, সেখানে; এরপর অন্য কোনো প্রদেশে বা গ্রামের বাড়িতে গেলে, সেখানে। কোয়ারেন্টিন, আসা-যাওয়া ও ছুটি উদ্যাপন—সব মিলিয়ে দুই মাসের আগে তাঁরা কাজে যোগ দিতে পারবেন না। গত বছর ছুটিতে গিয়ে অনেক চীনা কর্মী করোনার কারণে ফিরতে পারেননি। এর প্রভাব পড়েছিল সেতুর কাজে। এবার বেশি লোককে ছুটিতে না পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছিল সেতু বিভাগ। কিন্তু যাঁরা ছুটিতে গেছেন, তাঁদের বড় অংশই প্রকৌশলী ও দক্ষ শ্রমিক। এর মধ্যে প্রকল্পের ব্যবস্থাপকও রয়েছেন। তবে সেতু বিভাগের সচিব মো. বেলায়েত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, চীনা কর্মীরা ছুটি শেষে সময়মতো চলে এলে কাজে সমস্যা হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published.