সামাজিক দায়বদ্ধতায় মিডিয়া

সামাজিক দায়বদ্ধতা কি! আশ্চর্য্যরে ব্যাপার হলো এই দায়বদ্ধতা এখন পর্যন্ত দুইধরণের রূপ প্রকাশ পেয়েছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দুই ধরণের রূপযুগে একটিতেও পরিণত হতে দেখা যাচ্ছে। এই রূপরসের খেলায় এখন জনমনে অসন্তোষ এবং ক্ষোভেরও সঞ্চার হচ্ছে। সকল ভালকাজের ক্ষেত্রে একধরনের দায়বদ্ধতায় কুঠারাঘাত হানে এই নেতিবাচকতা। সচেতনতা বিমুখতায় এই দায়বদ্ধতায় নেতিবাচকতা বাধাস্বরূপ কাজ করে। করোনাৃ টিকাবিমুখ করার কাজেও এই নেতিবাচক মনোভাব এবং প্রচারনাই মুখ্য ভ‚মিকা রেখেছে। আবার পরক্ষনে টিকা নেয়ার পক্ষে সফল প্রচারনাই মানুষকে টিকা নিতে উদ্ধুদ্ধ করেছে।
ইতিবাচক ও নেতিবাচক এই দুই ধরনের দায়বদ্ধতাই মানব সমাজে বর্তমানে বিরাজমান রয়েছে। তবে ইতিবাচক থেকে নেতিবাচক প্রচারনাই এখন বিশাল ও বিপুলাকারে প্রকাশিত হচ্ছে। নেতিবাচক প্রচারনার প্রসারে সমাজ বিনির্মানে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে; উন্নয়ন সুফল ভোগ করতে অপারগতার জন্ম নিচ্ছে। শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিকাশে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে; আগামীর উন্নয়নের পথে অন্তরায় হয়ে পথের কাটায় পরিণত হচ্ছে। জীবন মানোন্নয়ন, বিকাশমান সাম্য ও সম্প্রীতির মধ্যে ফাটল সৃষ্টি হচ্ছে। পরিবার সমাজ এবং রাষ্ট্রে বিবাদ ও বিশৃঙ্খলা বিরাজমান রয়েছে। অবিশ্বাসের দানা বেধে বিজ রোপীত হয়ে চারা গজাচ্ছে এবং এর লালন পালন সুচারুরূপে হচ্ছে। সকল ক্ষেত্রে অস্থিরতা বিরাজ করছে; অনিশ্চয়তার বীজ রোপীত হচ্চে। এই সকল বিষয়গুলো কি সামাজিক দায়বদ্ধতার অন্তরায় নয়!
ইতিবাচক দিকগুলো সামাজিক দায়বদ্ধতাকে বহুগুনে গুনান্বিত করে যাচ্ছে। সকল ক্ষেত্রে এই দায়বদ্ধতা সমাজ বিনির্মানে ভুমিকা রেখে যাচ্ছে। পরিবার, সমাজ, সংস্কৃতি, শিক্ষা এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় ইতিবাচক সকল দায়বদ্ধতা কাজ করে যাচ্ছে। মানুষকে সচেতন করার ক্ষেত্রে, শিক্ষার প্রসার ঘটানোর ক্ষেত্রে, পারিবারিক এবং সামাজিক সম্প্রিতি রজায় রাখার ক্ষেত্রে, উন্নয়ন এবং নিরপেক্ষতা এমনকি স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে সামাজিক দায়বদ্ধতা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। স্ব স্ব অবস্থান থেকে এই দায়বদ্ধতার দায়িত্বটুকু সুচারুরূপে পালন করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেতনাদায়ক মনোভাবের বহি:প্রকাশই আমাদের উন্নয়র ও অগ্রগতির চাবিকাঠি হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। এই সকল ক্ষেত্রে দৃশ্যমান সকল দিক বিবেচনা করে স্ব স্ব দায়িত্ব পালনের চর্চায় আজ আমাদেরকে বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলা করে মজবুত বৃত্তির উপর দাঁড়াতে সাহায্য করে যাচ্ছে।
সামাজিক দায়বদ্ধতায় মিডিয়ার ভুমিকা অপ্রতুল। মিডিয়ায় দৃশ্যমান প্রচারনাগুলোকে বিশ্লেষণ করলে দেখতে পাওয়া যায় ইতিবাচক থেকে নেতিবাচক সংবাদই বেশী। আর ইতিবাচক দিকগুলো দৃশ্যমান রাখার ক্ষেত্রে লজ্জায় অবনত হতে দেখা যায়। কিন্তু নেতিবাচক প্রচার ও প্রকাশনাগুলোই সমাজ, সংস্কৃতি ও দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছতে সহায়তা করে যাচ্ছে। পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় সকল ক্ষেত্রে এই ধ্বংস দৃশ্যমান হয়ে গতিময়তা নিয়ে এগুচ্ছে। আমাদের এই দুটি বিপরীত মেরুর একত্রিকরণে পৃথিবীতে ধ্বংসের হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। আসুন আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে সামাজিক দায়বদ্ধতার ভিত্তিকে আরো মজবুতকরণে ভুমিকা রাখি। সকল নেতিবাচকতা পরিহার করে সামনে এগিয়ে যায়। এখনও যে সকল প্রতিবদ্ধকতা রয়েছে সেগুলোকে অতি অল্প সময়ে বিতারিত করে স্থিতিশীলতা এবং নির্ভরতা দৃশ্যমান রাখতে কাজ করি। মিডিয়ার দায়বদ্দতা সামাজিক দায়বদ্ধতার সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপন করে কর্ম ও চিন্তার সমন্বয় ঘটিয়ে একযোগে এগিয়ে যায়। আগামীর কল্যানের তরে সামাজিক দায়বদ্ধতাকে গুরুত্ব দিয়ে কার্যে পরিণত করি। সকল ক্ষেত্রে এই দায়বদ্ধতার দায়িত্ব সচেতনভাবে পালন করতে সচেষ্ট হয়ে এগিয়ে আসার আহবান জানাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published.