প্রশান্তি আন্তজার্তিক ডেক্স ॥ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মন্ত্রিসভায় প্রথম কোনো সমকামী মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেলো। ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের সাউথ ব্যান্ড নগরীর সাবেক মেয়র বুটিগিগকে গত মঙ্গলবার নিয়োগ দেয়া হয়। ২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বাছাই পর্বে প্রার্থী ছিলেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম সমকামী মন্ত্রী। স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পিট বুটিগিগকে তার মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভূক্তির ঘোষণা দেন।
২ ফেব্রুয়ারি মার্কিন সিনেটে পরিবহন বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে পিট যে বুটিগিগের মনোনয়ন সিনেটে নিশ্চিত হয়েছে। পিট বুটিগিগ শুধু ইতিহাস সৃষ্টিকারী প্রথম সমকামী মন্ত্রী নন, তিনি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মন্ত্রিসভায় সবচেয়ে কম বয়সী মন্ত্রীও। ৩৯ বছরের পিটকে বাইডেন প্রশাসনে মিলেনিয়াল প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে মনে করা হচ্ছে। অ্যারিজোনা থেকে নির্বাচিত প্রথম উভয়লিঙ্গের সিনেটর ক্রিস্টেন সাইনেমা ২ ফেব্রুয়ারি পিট বুটিগিগের মনোনয়ন নিশ্চিত করার শুনানিতে সভাপতিত্ব করেন। সিনেটে ৮৬-১৩ ভোটে তাঁর মনোনয়ন নিশ্চিত হয়।
সিনেট শুনানিতে দেওয়া বক্তব্যে পিট বুটিগিগ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বর্ণবাদ ও অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে সংযোগ সৃষ্টির জন্য অবকাঠামো খুবই জরুরি বিষয়। পরিবহনমন্ত্রী হিসেবে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক প্রতিশ্রুতি, মহামারি মোকাবিলাসহ অন্য বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করবেন তিনি। ৫৫ হাজার কর্মী ও বার্ষিক বিশাল বাজেটের ফেডারেল পরিবহন বিভাগের নেতৃত্ব দেবেন পিট বুটিগিগ। পরিবহনমন্ত্রী হিসেবে নিজের নাম ঘোষণার পর দেওয়া এক বক্তব্যে পিট বুটিগিগ বলেছিলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সমকামীদের জন্য আজকের ঘোষণা কতোটা আনন্দের, তা আমি জানি।’
পিট বলেন, ১৭ বছর বয়েসে টেলিভিশন সংবাদে দেখেছিলেন, প্রেসিডেন্ট ক্লিনটন মার্কিন অ্যাম্বাসেডর হিসেবে জেমস হোরম্যানের নাম ঘোষণার বিষয়টি। এখন সে দিনটির কথা মনে পড়ছে। ১৯৯৮ সালে সমকামী জেমস হোরম্যানের মনোনয়ন নিশ্চিতের বিষয়টি তৎকালিন সিনেট সদস্যরা অস্বীকার করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে সমকামীদের প্রকৃত সমস্যা যে কত গভীর, তা তিনি তখনই বুঝেছিলেন। মন্ত্রী হিসেবে তাঁর নিয়োগ সমকামীদের সাহস জোগাবে। এদিকে পিটের নিয়োগে সমকামী গ্রুপগুলো উচ্ছ্বসিত। নাগরিক অধিকারের পক্ষে এ বিষয়কে একটি অগ্রসর পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। শীর্ষ মার্কিন ‘লেসবিয়ান গে বাই সেক্সুয়েল ট্রান্সজেন্ডার কুইয়ার’ গ্রুপের সংগঠনের প্রেসিডেন্ট কেইট এলিস পিট বুটিগিগকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে সমকামীদের অধিকার আদায়ের দীর্ঘ লড়াই আরেকটি সাফল্যের ধাপে পৌঁছেছে।’ প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের সমাজ ও রাজনীতিতে সমকামীদের সংগঠনগুলো সাম্প্রতিক সময়ে খুবই শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। সর্বত্র রক্ষণশীলদের বিরোধিতার পরও সমাজে, রাজনীতিতে ও প্রশাসনে সমকামী হিসেবে বৈষম্য করা এখানে দন্ডনীয় অপরাধ।