সন্দেহ ও গুজব এবং সরকারের ভাবমূর্তী

সমাজে এখন গুজব নির্ভর সন্দেহের দানা বেধেছে। আর সরকারের ভাবমূর্তী নষ্টের জন্য মরিয়া হইয়া উঠেছে কতিপয় মহল এবং এর সঙ্গে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বাহিনীগুলো। আমার কাজের সুবাদে এইসকল বিষয় দৃষ্টিগোচর হয় এবং পরিবর্তন ও সতর্কতার জন্য এমনকি সন্দেহ ও গুজব এর দ্বারা সরকারের ভাবমূর্তী নষ্ট না হওয়ার অভিপ্রায়ে আত্মসন্তুষ্টি লাভের নিমিত্তে এই লিখার অবতারনা মাত্র। কাউকে ছোট বা বড় করার লক্ষ্যে এই লিখা নয়। করোনা টিকা নেয়ার ক্ষেত্রেও একই কারনে এই টিকাবিমুখতা বিরাজমান রয়েছে। টিকা আসার আগে সবাই প্রায় পাগলপ্রায় টিকার নেশায়। কিন্তু যখন টিকা আসল তখন আর বিপরীতমুখী অবস্থান। তবে এর পিছনে রয়েছে নানান ধরনের সন্দেহ এবং গুজব। এই সন্দেহ এবং গুজব নিরসনকল্পে সরকারের নেয়া পদক্ষেপগুলো ফলপ্রসু হয়েছে। বর্তমানে মানুষ টিকা নিতে আগ্রহী হয়ে নির্ভয়ে টিকা নিচেছ। প্রথমত এই টিকা নেয়ার ক্ষেত্রে ফ্রান্ট লাইনারদের বিমুখতা এবং সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উদাসিনতা আর নেতিবাচক প্রচারকারীদের মিথ্যা গুজব দায়ী। সবই এককাতারে এসে সন্দেহের দানা বেধে টিকা বিমুখতা তৈরী হয়েছিল। কোথাও কোথাও আবার প্রশ্ন উঠেছে সরকারের মন্ত্রী, এমপি এবং উদ্ধতন কর্মকর্তারা সাধারন জনগনের জন্য যে টিকা সেটা না নিয়ে উন্নততর টিকা নিচ্ছে; যা ভিআইপি ট্যাগ লাগানো বক্সের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তাই আমরা ঐ সাধারণ টিকা নিতে এখন ইচ্ছুক নয়। যাক সবকিছুর অবসান হয়েছে আজ টিকার গুরুত্ব অনুধাবন করে সর্বস্তরের মানুষ এখন হুমরি খেয়ে পড়েছে যা সরকারের টিকা বিতরণ এবং প্রয়োগ কেন্দ্রগুলোকে হিমসীম হতে হচ্ছে। আর এই চাপে একদিনে টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন দশলক্ষ জন। তাই কেন্দ্রে গিয়ে নিবন্ধন এবং ভোটার আইডি দিয়ে টিকা দেয়ার ব্যবস্থাও বন্ধ হয়েছে এমনকি অনলাইনে নিবন্ধন পক্রিয়া আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।
তাই সকল প্রকাশ গুজব বা অনুমান নির্ভর কথাবার্তায় এমনকি আচরনে অথবা সন্দেহের বশবর্তী হয়ে কোন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত না নেয়ার জন্য করজোরে মিনতি জানাচ্ছি; যা নিজ জীবন, পারিবারিক, রাষ্ট্রিয় বা কর্মজীবনেই হউক না কেন। সরকারের সকল অফিস বা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখা জরুরী হয়েছে পড়েছে। আমাদের দেশের নিয়মানুযায়ী বিদেশীরা কর্মানুমতি নিয়ে চাকুরী করতে আসে। কিন্তু সেই ক্ষেত্রে কোম্পানী, এনজিও এমনকি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের যারা দায়িত্বে রয়েছেন সেই দায়িত্বরতদের অসম্মান করতেও আন্য আরেকটি সরকারী সংস্থা দ্বিধাবোধ করেন না। এই ক্ষেত্রে সমন্বয়ের বড় অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিশেষ করে এন এস আই, এস বি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে। কোম্পানীর ক্ষেত্রে বিডার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তিনে মিলে এক হলে এবং একে অন্যের পরিপূরক হয়ে কাজ করলে অনেক মঙ্গল বয়ে আনবে বলেই বিশ্বাস। বিডার কর্মানুমতিকে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা এস বি এবং এন এস আই’র কর্তব্য বলে বিবেচনায় নেয়া উচিত। সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স এর ক্ষেত্রে এস বি এবং এন এস আই নিতীগত ইতিবাচক সিদ্ধান্তই কোম্পানীর কর্মীকে ওয়ার্ক পারমিট এর মেয়াদ পর্যন্ত কাজ করতে সহায়তা করে। এই ক্ষেত্রে এন এস আই বরাবরের মত নেতিবাচক রিপোর্ট দিয়ে বিদেশী কর্মীকে দেশ ত্যাগে বাধ্য করেন। এর জন্য কোম্পানীর যে ক্ষতি সাধিত হয় তার ক্ষতিপুরন কে দিবে এমনকি দেশীয় কর্মীদের কর্মসংস্থান বিলুপ্তি ঘটলে ঐ এন এস আই বাবুর কি কোন ক্ষতি হবে নাকি দেশীয় অর্থনীতির বারোটা বাজবে! এই ক্ষেত্রে এন এস আই ও এস বি কে আরো সতর্ক হয়ে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে। এন এস আই ও এস বি কিন্তু দেশ ও জনগনের সেবক কিন্তু তারা ভাব দেখিয়েছে এমনকি খবরদারী করে যাচ্ছে যা কোনভাবেই কাম্য নহে। তবে এস বি’র চেয়ে এন এস আই এর ফিল্ড কর্মকর্তারা মোলায়েম বটে। তবে সবাই সমান নন, এইটা আমার অভিজ্ঞতার আলোকেই বলছি। এনজিও, ট্রাষ্ট, ফাউন্ডেশন এর ক্ষেত্রে আমার একই অভিজ্ঞতা। অনেক লোকের কর্মসংস্থান এর বিলুপ্তি ঘটেছে এবং মানবেতন জীবন যাপন করতে এখন বাধ্য হচ্ছে। রাষ্ট্রের এই বিষয়গুলোতে গুরুত্বারূপ জরুরী হয়ে পড়েছে। কোন কোন অফিসার বলে বেড়াচ্ছে। দুই হাজার বিদেশীকে দেশ থেকে বেড় করে দিয়েছি, আরো দিব… অপরাধ! তারা সৎ এবং এই দেশকে ভালবেসে দেশ ও সমাজ উন্নয়নে কাজ করে ভুমিকা রাখছে। আরো একটি বিষয় হলো কারো ব্যক্তিগত লাভ হাছিল না হলেই নেতিবাচক রিপোর্ট দিয়ে দেশ থেকে বের করে দিচ্ছে… এই হচ্ছে এবং হবে আগামীতে।
আরেকটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ যে বিদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের স্ত্রীদেরও এখন ভিসা না দিয়ে হয়রানি করছে। বিভিন্ন অপবাদ দিয়ে তাদেরকে দেশ ত্যাগে বাধ্য করছে। এই নেতিবাচক মনোভাবগুলো আমাদের সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। আশা করি আগামী দিনে দেশের ভাবমূর্তী সমুজ্ঝলে সকল কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা একযোগে কাজ করবে। নতুবা দেশের সুন্দর আগামী কলঙ্কিত হচ্ছে এবং হবে। বিদেশী কর্মীদের স্ত্রীরা কি তাহলে জেলহানায় বন্ধি জীবন যাপন করবে নাকি তাদের সময় কাটানোর এমনকি ভ্রমন করার সুযোগ বা নূন্যতম সুস্থ্য ও সতেজ জীবনযাপনের ব্যবস্থা থাকবে! আমার এই লিখার পিছনে যথেষ্ট প্রমান রয়েছে যা দেশ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। একটি ঘটনা বলি; বাংলাদেশী এক কোম্পানীতে এক ব্রিটিশ নাগরিক ২লক্ষ্য ৫০ হাজার টাকা বেতনে চাকুরী নেন। ঐ ব্রিটিশ এর মাধ্যমে প্রায় ৬০লক্ষ্য টাকার একটি কাজের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। কিন্তু নিরাপত্তা ছাড়পত্র না পাওয়ায় ঐ বিদেশী দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছিল এবং ৬০ লক্ষ্য টাকার চুক্তিটি বাতিলও হয়েছিল। এতে ক্ষতি কার ? বাংলাদেশের!। শুধু কি তাই ঐ বিদেশী বর্তমানে অন্য একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে বাংলাদেশে কাজ করছেন এবং দেশ তার ব্যাক্তিগত কর থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এমনকি ঐ বিদেশীকে খুব সম্মান করে সরকার সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে। তাহলে ঐ বিদেশেী বাংলাদেশী কোম্পানীতে চাকুরীর সময় এন এস আই কর্তৃক নিরাপত্তা ছাড়পত্র কেন দেয়া হলো না? কারন সরকারের আর্থিক ক্ষতি ও ভাবমুর্তি নষ্ট করার জন্য নয় কি? এরকম আরো অন্তত ৫০০ ঘটনার স্বাক্ষী আমি নিজে। তাই দু:খভারাক্রান্ত মন নিয়ে এই লিখার অবতারনা করলাম। আগামীতে এই ধরনের ভুল থেকে ফিরে আসার প্রত্যাশায় সকলকে মিনতি জানিয়ে সরকারের আগামী প্রদক্ষেপের আশায় বাস্তবতার দৃশ্যমানতার অপেক্ষায় রইলাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published.