প্রশান্তি ডেক্স ॥ গত বুধবার রাত পৌণে নয়টা, ভৈরব রেল স্টেশনে প্রবেশ করে চট্রগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আন্তনগর মহানগর এক্সপ্রেস। যাত্রা বিরতীর জন্য পাঁচ মিনিট স্টেশনে দাঁড়ায় ট্রেনটি। এর মধ্যে যাত্রীও ওঠেন কয়েজন। তাদের মধ্যে ছিলেন এক নারী ও তার ছয় বছরের ছোট্ট সন্তান। পাঁচ মিনিট পর ট্রেনটি স্টেশন ছাড়ে।
এ সময় ট্রেনের ভেতরে সন্তানকে এক হাতে ধরে নিজেদের সিট খুঁজছিলেন ওই নারী। অন্যহাতে ধরা ছিলেন ব্যাগ। ট্রেনটি প্ল্যাটফর্ম থেকে ১০০ গজ সামনে যেতেই সেই ব্যাগটি ধরে টান দেয় এক ছিনতাইকারী। এতে চলন্ত ট্রেন থেকে ছিটকে লাইনের পড়ে যান ওই নারী। ছেলে থেকে যায় ট্রেনের ভেতরে।
মায়ের এমন করুণ অবস্থা দেখে কান্না করছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার চান্দুপুর গ্রামের বাসিন্দা মেরাজ। তার বাবার নাম মিলন মিয়া। নিজ ও বাবার নামের সঙ্গে বাড়ির ঠিকানান দিতে পারলেও মায়ের নামটি বলতে পারেনি মেরাজ। ওদিকে, তার মা লাইনে ছিটকে পড়ার পর তাকে উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। পরে তাকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। মেরাজকে হেফাজতে নিয়েছে বিমানবন্দর রেলওয়ে পুলিশ।
হানিফ নামে ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ট্রেনটি ধীরগতিতে চলছিলো। এক ছিনতাইকারী ওই নারীর ব্যাগটি ধরে টান দিতেই তিনি পড়ে যান। শিশুটি চিৎকার শুরু করে, পরে তারা গিয়ে তাকে হেফাজত করেন। ভৈরবের কয়েকজনকে ঘটনাটি জানিয়ে আঘাত পাওয়া নারীকে সহযোগিতার অনুরোধও করেন তিনি। শহীদুল আলম নামে এক যুবক ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার করে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। তার সঙ্গে ছিলেন আরো অনেকে।
শহীদুল জানান, লাইন থেকে ওই নারী অন্তত দুই গজ দূরে পড়ে ছিলেন। তখন জ্ঞান ছিলো না।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওই নারীকে জরুরি সেবা দেন বিভাগীয় চিকিৎসক আবদুল্লাহ আল নোমান ভূইয়া। তিনি বলেন, ওই নারী মাথায় আঘাত পেয়েছেন। ভেতরে রক্তক্ষরণ হচ্ছিলো এবং বমিও করেছে। সব মিলিয়ে আহত নারীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ভৈরব রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস বলেন, শিশুটি এখন বিমানবন্দর পুলিশি হেফাজতে রয়েছে। আহত নারীর নামটি এখনো জানা যায়নি।