ময়ূর-২ মালিকের ‘পূর্বপরিকল্পনা’য় ডোবানো হয় মর্নিংবার্ডকে

প্রশান্তি ডেক্স ॥ বুড়িগঙ্গায় শতাধিক যাত্রী নিয়ে লঞ্চডুবির ঘটনায় ময়ূর-২ লঞ্চের মালিক মোসাদ্দেক হানিফ সোয়াদসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা নৌ-পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শহিদুল আলম চার্জশিটটি দাখিল করলেও তা জানা গেছে গত বুধবার। লঞ্চডুবিটিকে এতদিন নিছক দুর্ঘটনা মনে হলেও পুলিশ বলছে, সেটি ছিল ময়ূর-২ লঞ্চের মালিক সোয়াদের ‘পূর্বপরিকল্পিত’। আর ওই ঘটনায় প্রাণ দিতে হয়েছিল ৩৪ যাত্রীকে।
চার্জশিটে আসা অপর আসামিরা হলেন- ময়ূর-২ লঞ্চের মাস্টার আবুল বাশার মোল্লা, সহকারী মাস্টার জাকির হোসেন, চালক শিপন হাওলাদার, শাকিল হোসেন সিপাই, সুকানি নাসির মৃধা, মো. হৃদয় হাওলাদার, সুপারভাইজার আব্দুস সালাম, সেলিম হোসেন হিরা, আবু সাঈদ ও দেলোয়ার হোসেন সরকার। বিষয়টি নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আয়োরুল কবীর বাবুল জানান, আগামী ৯ মার্চ মামলার ধার্য তারিখে চার্জশিটটি আদালতে উপস্থাপিত হবে। তদন্ত শেষে চার্জশিটে পুলিশ বলেছে, রাজধানীর শ্যামবাজার বরারব ফরাশগঞ্জ ঘাটসংলগ্ন বুড়িগঙ্গা নদীর দক্ষিণ পাশে গত বছরের ২৯ জুন সকাল ৯টা ১৩ মিনিটে মর্নিংবার্ড বেপরোয়াভাবে লঞ্চকে ধাক্কা দেয় এমভি ময়ূর-২। এতে করে ছোট লঞ্চ মর্নিংবার্ড দুমড়েমুচড়ে যায় এবং ৬০-৬৫ যাত্রী নিয়ে পানিতে তলিয়ে যায়। এতে ৮৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। পরে ৩৪ যাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। চার্জশিটে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেছেন, পূর্বশত্রুতা থাকায় আসামি মোসাদ্দেক ও তার লঞ্চটির কর্মচারীরা (অন্য আসামি) পূর্বপরিকল্পনা মতে ময়ূর-২ দিয়ে মর্নিংবার্ডকে আঘাত করে। সেই সঙ্গে লঞ্চটিকে নদীতে ডুবিয়ে দিয়ে প্রাণহানির ঘটনা ঘটায়। যদিও মর্নিংবার্ড লঞ্চ মালিকের সঙ্গে ময়ূর-২ মালিকের কী কারণে পূর্বশত্রুতা, তা জানা যায়নি।
এমএল মর্নিংবার্ড লঞ্চটি ঘটনার দিন মুন্সীগঞ্জের কাঠপট্টি থেকে যাত্রী নিয়ে সদরঘাটের দিকে আসছিল। শ্যামবাজারের কাছে নদীতে আকারে বহুগুণ বড় লঞ্চ ময়ূর ২-এর ধাক্কায় ছোট লঞ্চটির ডুবে যাওয়ার সেই দৃশ্য ধরা পড়ে সদরঘাটের একটি সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে। আর সেই ভিডিও দেখে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী তখন বলেছিলেন, ‘যেভাবে ঘটনা ঘটেছে, তাতে আমার মনে হয়েছে এটা পরিকল্পিত। এটা কোনো দুর্ঘটনা নয়, হত্যাকা-।’
এ ঘটনায় গত ২৯ জুন নৌ পুলিশ সদরঘাট থানার উপ-পরিদর্শক সামশুল আলম বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় ময়ূর-২ লঞ্চের মালিক মোসাদ্দেক হানিফকে প্রধান আসামি করে এজাহারভুক্ত করা হয় সাতজনকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.