ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় দুই মেয়র প্রত্যাশী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষনের ঘটনায় গত শুক্রবার সাড়া শহরে আতংক বিরাজ করলেও সন্ধ্যার পর থেকে ধীরে ধীরে কিছুটা স্বাভাবিক হয়। দোকান পাট খোলা সহ কিছু যানবাহন চলাচল করে। শনিবার (৬ মার্চ) সকাল থেকে পৌর শহরের পরিবেশ মোটামুটি স্বাভাবিক দেখা গেলেও কাটেনি এখনো জনমনে আতংক। স্থানীয়রা বাসাবাড়ি থেকে শহরে প্রয়োজনীয় কাজে রেরুতেও ভয় পাচ্ছে। স্থানীয়রা ধারনা করছেন ৭ মার্চ উদযাপনকে কেন্দ্র করে নতুন কোনো সংঘাত তৈরি হয় কিনা। কারন এই অনুষ্ঠান উদযাপনে যদি উভয় পক্ষের সমর্থকদের মাঝে পুরনো বিষয় নিয়ে সংঘর্ষ বাধে তাহলে হতাহতের বিষয়টি নিয়ে আতংক রয়ে গেছে। পরিস্থিতি স্বাভাকি রাখতে আজও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে বলে জানান কসবা থানা ওসি। শহরের মোড়ে মোড়ে পুলিশকে দাড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। অপরদিকে গত শুক্রবারের ঘটনার জের ধরে ওই দিনই সন্ধ্যার সময় পৌর এলাকার শাহপুর গ্রামে মনোনয়ন প্রত্যাশী এম এ আজিজের বড় ভাই শিশু মিয়ার নেতৃত্বে তার সমর্থকরা এই গ্রামের বর্তমান মেয়র ও পুনরায় মেয়র মনোনয়ন প্রত্যাশী এমরান উদ্দিন জুয়েলের সমর্থক উপজেলা আওয়ামী লীগ যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মো.আজহারুল ইসলামের ছেলে ও ভাতিজাকে আক্রমন করলে সেখানেও কাজী আজহারুল ইসলামের সমর্থক ও এমএ আজিজের সমর্থকদের মাঝে ঘন্টাব্যাপী ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ সহ ৩টি মোটর সাইকেল ভাংচুর করা হয়। এসময় উত্তেজিত জনতা ১টি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা। পরে গ্রামবাসী ও পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এ ঘটনায় কোনো হতাহত হয়নি।
আনোয়ার হোসেন সহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শহরের বাসিন্দা জানান; গত শুক্রবারের ঘটনার রেশ কিছুটা দমলেও পৌর নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত যে কোনো সময় আবারো সংঘর্ষে জড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সংঘর্ষের ঘটনায় আমরা খুবই মর্মাহত। কারন এখানে আমাদের আইনমন্ত্রী মহোদয়ের সম্মানের বিষয়টি জড়িত। আমরা আমাদের মন্ত্রী মহোদয়কে অসম্মান করাটা কামনা করিনা। এ বিষয়ে মেয়র মনোয়নয় প্রত্যাশী এমএ আজিজ বলেন; গত শুক্রবারের ঘটনায় আমারই গ্রামের আওয়ামীলীগ নেতা কাজী আজহারুল ইসলাম আমার প্রতিপক্ষ মেয়র এমরান উদ্দিন জুয়েলকে সমর্থন দেয়ার কারনে গ্রামের লোকজন উত্তেজিত হয়ে তার বাড়িতে আক্রমন করতে যাওয়ার সময় এ সংঘর্ষ বাঁধে। পরে পুলিশ ও গ্রামবাসী মিলে সংঘর্ষ থামায়। গ্রামের সাহেব সর্দারগন এ বিষয়টি সমাধান করার আশ্বাস দেন।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মো.আজহারুল ইসলাম বলেন; আইনমন্ত্রীর সভা চলাকালে দুই মেয়র মনোনয়ন প্রত্যাশী সমর্থকদের মাঝে সংঘর্ষকে কেন্দ্র আমার গ্রামের বাড়ীতে এমএ আজিজের বড় ভাই শিশু মিয়ার নেতৃত্বে আমার ছেলে ও ভাতিজা নামাজ পড়ে আসার সময় তাদের উপর আক্রমন করে। এ ঘটনা নিয়ে দুই পক্ষের লোকজনের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। গ্রামবাসী সমাধানের আশ্বাস দেয়ার থানায় কোনো অভিযোগ দেইনি। আইনমন্ত্রী মহোদয়কে জানিয়েছি। তিনি যে ব্যবস্থা নেন এটাই আমি মেনে নেব। কসবা থানা ওসি মোহাম্মদ আলমগীর ভূইয়া বলেন; পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক। গত শুক্রবারের ঘটনায় থানায় কোনো পক্ষই অভিযোগ দেননি। এরপরও কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সে জন্য শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। উল্লেখ্য গত শুক্রবার আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এমপি’র এক বছর পর এলাকায় আগমন উপলক্ষে অভ্যর্থনা জানাতে অবস্থান নেয় দুই মেয়র পদ প্রত্যাশীর শত শত সমর্থক। দুই মেয়র প্রত্যাশী বর্তমান মেয়র এমরান উদ্দিন জুয়েল ও উপজেলা যুবলীগ সভাপতি এমএ আাজিজ সমর্থকদের মাঝে সামান্য বিষয় নিয়ে আধিপত্য টিকিয়ে রাখতে সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ভাংচুর সংগঠিত হলে মুহুর্তের মধ্যে দোকান পাট বন্ধ হয়ে অস্বাভাবিক পরিবেশ তৈরি হয়।