বল সুন্দরি চাষে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার খুলছে পাহাড়ে

প্রশান্তি ডেক্স ॥ বিদেশী ফল বল সুন্দরি। নামের সাথে প্রকৃতিতে মিল আছে ফলটির। কাঁচা অবস্থায় সবুজ। পাকলে সিঁদুর লাল, কমলা কিংবা হলুদ। আকারে ছোট দেখতে অনেকটা আপেলের মত।দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, স্বাদেও তেমন মজাদার। রসালো এ ফলের গন্ধও অতুলনীয়। তাই এর নাম বল সুন্দরি। সম্ভাবনাময় এই বল সুন্দরি চাষ ছড়িয়ে পড়ছে রাঙামাটিতে। ফলনও হচ্ছে বাম্পার। চাহিদা বেশি, তাই ভালো দাম পাওয়ায় বল সুন্দরি চাষে আগ্রহী পাহাড়ের অনেক কৃষক। রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার রূপকারী ইউনিয়নের বাসিন্দা লাভলী চাকমা। চলতি বছর সখের বসে নঁওগা থেকে চারা সংগ্রহ করে সীমিত আকারে বল সুন্দরি চাষাবাদ শুরু করে। ৭০টি গাছ লাগায় নিজের বাগানে। মাত্র ৫ফুট ৪ইঞ্চি চারা গাছে বল সুন্দরি ফলন এসেছে বাম্পার। ছোট চারা গাছে ব্যাপক ফলন দেখে আকর্ষণ বেড়েছে স্থানীয়দের। এ ব্যাপারে বল সুন্দরি চাষী লাভলী চাকমা জানান, ‘আপেলের মত দেখতে কিন্তু আপেলের চেয়ে মিষ্টি বল সুন্দরি। ছোট হলেও খেয়ে তৃপ্তি পাওয়া যায়। নতুন এ বিদেশী ফল সকলের মাঝে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তাই দামও মিলছে চাহিদা মত। আগামী বছর আরও ব্যাপক আকারে বাগান করার ইচ্ছা রয়েছে।
খবর পেয়ে এরই মধ্যে রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক লাভলী চাকমার বাগান পরিদর্শন করে গেছেন। একই সাথে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন। রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষ্ণ প্রসাদ মল্লিক জানান, ‘বাউকুল, আপেল কুল, কাশ্মীরি কুলের চেয়ে এখন বেশি চাহিদা দেখা দিয়েছে বল সুন্দরির। সাধারণত এ ফল অস্ট্রেলিয়ায় হয়।’তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু বাংলাদেশেও কিছু কিছু জায়গায় এ ফলের চাষ হচ্ছে। এখন রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলাসহ বালুখালী ইউনিয়নেও বল সুন্দরির চাষাবাদ হচ্ছে। এরই মধ্যে নার্সারি গুলোতে এ গাছের কলব করা শুরু হয়েছে। খুব দ্রুত স্থানীয় চাষীদের মধ্যে বল সুন্দরির চারা ছড়িয়ে দেওয়া হবে।’এবার রাঙামাটি জেলায় কুল চাষ হয়েছে ৭৬৪ হেক্টর জমিতে। জুন-জুলাই থেকে এ কুল চাষ শুরু হয়। মাত্র সাত মাসের মাথায় কুল সংগ্রহ করা যায়। সাধারণত তিন থেকে সাড়ে তিন মাস কুল পাওয়া যায় স্থানীয় বাজারে। বল সুন্দরি চাষের প্রতিও মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। কারণ এ সম্ভাবনা কাজে লাগানো গেলে অর্থনৈতিক সম্ভাবনা উন্মোচিত হবে পাহাড়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.