প্রশান্তি ডেক্স ॥ অনেক কষ্ট করে রিকশাভ্যান চালিয়ে ছেলে হাসান আলীকে লেখাপড়া শিখিয়েছিলেন বাবা আব্দুল জব্বার। পুলিশের এসআই পদে চাকরি হয়েছিল হাসানের। ছেলেকে সৎ ও নীতিবান পুলিশ কর্মকর্তা হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন বাবা ও মা মোছা. আলেয়া বেগম। এ জন্য ছেলের কাছে কোনো দিন টাকা চাননি তারা। গত রোববার সকালে ভ্যান চালাতে গিয়ে এসআই হাসানের মৃত্যুর খবর পান বাবা আব্দুল জব্বার। ওই দিন সকালে পাবনা জেলার আতাইকুলা থানার ছাদে নিজের পিস্তলের গুলিতে আত্মহত্যা করেন এসআই হাসান আলী। গত রোববার সকাল ৯টায় এসআই হাসান আলীর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। পাবনার আতাইকুলা থানায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত এসআই হাসান আলীর বাড়ি কেশবপুরের বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে। তার পিতা আব্দুল জব্বার পেশায়
রিকশাভ্যানচালক। অনেক কষ্টে ছেলেকে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িয়েছেন। দুই বছর আগে হাসান আলী পুলিশের এসআই পদে নিয়োগ পান। তার পিতা এখনও রিকশাভ্যান চালান। এই চার দিনেও পিতা মাতার চোখের পানি শুকায়নি। বারবার আহাজারি করছিলেন তারা। বাবা আব্দুল জব্বার ও মা আলেয়া বেগম জানান, তারা কোনদিন ছেলেকে টাকার জন্য বলেননি। ছেলে তাদের একটি মোবাইল ফোন কিনে দেয়। ঈদুল আজহার সময় কোরবানির জন্য ২০ হাজার টাকা দেয়।
তারা বলেন, প্রয়াত হাসান আলী যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েই পুলিশের এসআই পদে চাকরি পেয়েছিলেন। অথচ তাকে মানসিক নির্যাতন করা হতো। বলা হতো- তার পিতা আব্দুল জব্বারের আত্মীয়দের কৃপায় চাকরি পেয়েছেন। এদিকে পাবনার আতাইকুলা থানায় এসআই হাসান আলীর আত্মহত্যার কারণ অনুসন্ধানে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে । গত বুধবার বিকালে প্রয়াত এসআই হাসান আলীর কেশবপুরের বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের বাড়িতে গিয়ে জানা গেছে, হাসান আলীর পিতা আব্দুল জব্বার, মা মোছা. আলেয়া বেগমসহ তাদের নিকট আত্মীয় ৮ জনকে গত বৃহস্পতিবার সকালে পাবনা পুলিশ সুপারের (এসপি) কার্যালয়ে উপস্থিত হতে অনুরোধ করা হয়। পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ৮ জনকে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, এ ঘটনায় গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত দল ৫ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করবে। তিনি আরও বলেন, কয়েকটি সম্ভাব্য তথ্য যাচাই করা হবে। হাসান আলী বিসিএস পরীক্ষার জন্য ছুটি নিয়েছিলেন এ তথ্য ভুল। তবে তার ছুটি মঞ্জুর করা হলেও তিনি ছুটিতে যাননি। এদিকে তদন্তের স্বার্থে তিনি আর কিছু বলেননি।