যে কারণে ৩৬ বছর ধরে ভাত খান না জোহরা বিবি

প্রশান্তি ডেক্স ॥ জোহরা বিবি। বয়স ৮৫ পেরিয়েছে। তার ১৫ সন্তান ছিল। এর মধ্যে পাঁচ সন্তান মারাও গেছেন। জোহরা বিবি এখনও দিব্যি চলতে পারেন। তবে জীবনের প্রায় অর্ধেকটা সময় ভাত না খেয়ে কাটিয়েছেন তিনি। এখন চা-বিস্কুট খেয়ে দিন কাটে তার। ভাত না খেয়ে থাকার ব্যাপারটি পরিবারের কাছে স্বাভাবিক। তবে অপরিচিতদের কাছে তার এত বছর ভাত না খেয়ে থাকার বিষয়টি আশ্চর্যজনক মনে হয়। জোহরা বেগম সাতক্ষীরার শহরতলী কুখরালী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ৩৬ বছর ভাত না খেয়েও ভালো আছেন। সকালের নাস্তা হিসেবে চা-বিস্কুট খান, দুপুরে মুড়ি ভিজিয়ে তরকারি এবং রাতে আবারও চা-বিস্কুট। মাঝে মাঝে মাছ-মাংস খান তিনি।
জোহারা বিবি বলেন, ‘আমার আব্বা মান্দার মোড়ল ভারতের বশিরহাট থানার মেজ দারোগা ছিলেন। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সাকচুড়া গ্রামে ছিল আমাদের বাড়ি। ছোটবেলায় আব্বা আমাকে মোড়ল পরিবারে বিয়ে দেন। আমার বয়স যখন ১৩ বছর তখন আমার বড় ছেলের জন্ম হয়। আল্লাহ আমার ১৫ জন সন্তান দিয়েছেন।’ ‘আমার ছোট ছেলের জন্মের দুই তিন বছর পর আমার পেটে অনেক যন্ত্রণা হতো। ছেলেরা বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। ডাক্তার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পেট কাটতে (অপারেশন) হবে জানায়। কিন্তু আমিতো পেট কাটব না। পেটের যন্ত্রণায় আমার খাওয়া কমে যায়। তখন আমি শাক-সবজি, তরকারি আর মুড়ি খেতাম। ভাত না খাওয়ায় পেটের যন্ত্রণা ধীরে ধীরে কমে যায়। এরপর থেকে আমি আর কখনো ভাত খাইনি।’ জোহরা বিবির বড় ছেলে নুর ইসলাম মোড়ল জানান, ছোটবেলা থেকে তার (জোহরা বেগম) পেটে একটু ব্যথা-যন্ত্রাণা ছিল। ১৯৮৩-৮৪ সালের দিকে পেটের যন্ত্রণা বাড়ে। তাকে ডাক্তারের কাছে নিলে ডাক্তার জানান, টিউমার হয়েছে, অপারেশন করতে হবে। কিন্তু মা অপারেশন করাবেন না। ডাক্তারের ওষুধ খান এবং ভাত খাওয়া বাদ দেন তিনি। এতে মায়ের পেটের যন্ত্রণা ধীরে ধীরে কমে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.