প্রশান্তি ডেক্স ॥ বগুড়ার সারিয়াকান্দির যমুনার চরে শেফালী বেগম (২৪) ও তার ৬ মাস বয়সী মেয়ের রুমানা হত্যাকান্ডে রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। অতিরিক্ত গাঁজা খেয়েই স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা করেন আল আমিন (২৮)। গত বৃহস্পতিবার বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ওমর ফারুকের আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে আল আমিন। আজ শুক্রবার বেলা ১২টায় জেলা পুলিশের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
এর আগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সারিয়াকান্দির বোহাইল ইউনিয়নের দক্ষিণ শংকরপুর গ্রামে ভূট্টাক্ষেত থেকে শেফালী বেগম (২৪) ও তার ৬ মাস বয়সী মেয়ে রুমানার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শেফালী বেগমের বাবা ওসমান মন্ডল বাদী হয়ে পরের দিন সারিয়াকান্দি থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে তদন্তের স্বার্থে ২১ মার্চ শেফালীর স্বামী আল আমিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশের পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আলা আমিন চরাঞ্চলে মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তার অভাবের সংসার ছিল। টাকা-পয়সার জন্য প্রায়ই তার স্ত্রীর সাথে ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকত। আট বছর পূর্বে তিনি প্রেম করে শেফালী বেগমকে বিয়ে করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আল আমিন হত্যাকান্ডের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের স্বার্থে আল-আমিনকে কোর্টে প্রেরণ করে রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়।
আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে এনে আলা আমিনকে ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং হত্যাকান্ডে সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে পুলিশের উদ্ধারকৃত তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়। এক পর্যায়ে আলামিন হত্যাকান্ডের সাথে তার সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করে। জবানবন্দিতে সে জানায়, পারিবারিক কলহের জের ধরে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে আল আমিন প্রথমে তার ৬ মাস বয়সী কন্যা সন্তান রোমানাকে গলা টিপে হত্যা করে। এরপর আল আমিন তার স্ত্রী শেফালী বেগমকে (২৪) গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে। হত্যাকান্তে পরদিন সে নিজেই অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনের সাথে ভুট্টা ক্ষেতে লাশ খুঁজতে যায় এবং এ সম্পর্কে সে কিছুই জানে না এমন অভিনয় করতে থাকে। আল আমিন আরো জানায় সে নিয়মিত গাঁজা সেবন করতো এবং হত্যাকান্ডের দিন সে একটু বেশি গাঁজা সেবন করেছিলো। সারিয়াকান্দি থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, গ্রেপ্তারকৃত আল আমিন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।