ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় সেনাসদস্য আশরাফুল ইসলামের নেতৃত্বে তার শ্বশুরবাড়ীর পক্ষ হয়ে দীর্ঘদিন যাবত সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, চাঁদাবাজী, ভ’মিদস্যুতাসহ নানা অপরাধমুলক কর্মকান্ডের অভিযোগে কসবা প্রেসক্লাবে গতকাল শনিবার (২৭ মার্চ) সকাল ১১টায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলা পরিষদ সদস্য আলহাজ্ব মো.আইয়ুব আলী ভ’ইয়ার পরিবার ও কসবার কুটি ইউনিয়নের ইয়াকুবনগর গ্রামের লোকজন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা পরিষদ সদস্য আলহাজ্ব আইয়ুব আলী ভূইয়ার ছেলে প্রকৌশলী মোঃ ফারুক ইসলাম। এসময় ভ’ক্তভোগীদের মধ্যে গাজী মো.বিল্লাল, মো.তাজুল ইসলাম, আবদুল বারেক ভূইয়া, মো.ওসমান মিয়া, মো.শিশু মিয়া, মো.জাহাংগীর আলম ও ঝরনা আক্তার উপস্থিত ছিলেন।
ভূক্তভোগীদের পক্ষে মো.ফারুক ইসলাম সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানান; উপজেলার কুটি ইউনিয়নের ইয়াকুব নগর এলাকায় গৌরিপুর গ্রামের মৃত আবদুর রশিদের মেয়ের জামাতা বাংলাদেশ সেনাবাহীনির সদস্য মো.আশরাফুল ইসলাম’র নেতৃত্বে তার শ্বশুরবাড়ীর লোকজন দীর্ঘদিন যাবত জায়গা জমি দখল করে বিরোধ নিয়ে জেলা পরিষদ সদস্যের পরিবারের লোকজন ও এলাকার সাধারন নিরীহ মানুষকে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, চাঁদাবাজী ও ভ’মিদস্যুবৃত্তি চালিয়ে হয়রানী করে আসছেন। এ সমস্ত বিষয় নিয়ে একাধিকবার সালিশ বৈঠক হলেও আশরাফুলের উস্কানীতে তার শ্বশুরবাড়ীর লোকজন গ্রাম্য বিচার প্রত্যাখান করাসহ বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছে এমনটাই অভিযোগ। গত কয়েকমাস আগে উভয় পক্ষের সম্মতিতে এলাকার সাহেব সর্দারগনের উপস্থিতিতে ইয়াকুব নগর ফিসারিজ এন্ড এগ্রো’র স্থাপিত পুকুরের পাড় ও পাড়ের বাহিরের জমি স্থানীয় ৭ জন সার্ভেয়ারের মাধ্যমে জায়গা পরিমাপ করে সীমানা নির্ধারন করে পিলার বসানো হয়। কিছুদিন পূর্বে জেলা পরিষদ সদস্যের বাড়ির লোকজন নির্ধারিত জায়গায় সীমানা দেয়াল নির্মান করতে গেলে পুনরায় বাধা দেয় প্রতিপক্ষ আশরাফুলের লোকজন। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা আলহাজ্ব আইয়ুব আলীর জায়গার সীমানা পিলার তুলে রাতের আধারে প্রায় ২০ ফুট ভিতরে এনে বসিয়ে পুনরায় তাদের জায়গা বলে দাবী করছেন। এর প্রতিবাদ করায় জেলা পরিষদ সদস্যের পরিবারের লোকজনকে একা পেয়ে হামলা চালায় এবং তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছেন আশরাফুল। ভ’ক্তভোগীদের অভিযোগ আশরাফুল সেনাবাহীনির লোক হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে এসব অপরাধমুলক কর্মকান্ড করে বেড়াচেছ এবং এলাকার বিভিন্নজনকে চাকুরী দেয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগও রয়েছে। সম্মেলনে ফারুক ইসলাম আরো বলেন; গত কয়েকদিন আগে সেনাসদস্য আশরাফুল ইসলাম তার চাচাশ্বশুর দুলাল মিয়ার মাধ্যমে ভ’মি সংক্রান্ত বিরোধ মিটিয়ে দেয়ার জন্য আমার চাচা শাহজাহান ভ’ইয়ার নিকট ২০ লাখ চাঁদা দাবী করে । বিষয়টি ভ’ক্তভোগীরা আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে উর্ধ্বতন কর্মকর্তা মেজর জেনারেল মোঃ যুবায়ের সালেহীন সহ স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়ে তার অত্যাচার থেকে পরিত্রান পাওয়ার দাবী জানান। সুবিচার পেতে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মাননীয় আইনমন্ত্রী মহোদয় সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করে এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীরা। সম্মেলনে ভ’ক্তভোগীরা জানান; অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গুম,হত্যা মামলা, অস্ত্র মামলা, ডাকাতী মামলা সহ বিভিন্ন মামলা কসবা থানায় অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত সেনাবাহিনীর এসিসি বিভাগের সদস্য আশরাফুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন; তার ভাই আবু হানিফের স্ত্রী ও ২ মেয়ে গৌরীপুর গ্রামে থাকে। তাদের নিরাপত্তার জন্য জেলা পরিষদ সদস্য আইয়ুব আলী ভূইয়ার ছোট ভাই শাহজাহান ভ’ইয়াসহ এলাকার অন্যান্য লোকজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছি। এটা পুলিশ তদন্ত করবে। কসবা থানা উপ-পরিদর্শক আনিসুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন; আশরাফুল ইসলামের অভিযোগের সংগে তার উর্ধ্বতন কর্মকর্তার অগ্রবর্তী চিঠি থাকায় অফিসার ইনচার্জের নির্দেশে তদন্তে যাই। সেখানে গিয়ে অভিযোগের কোনো সত্যতা খোঁজে পাইনি। এ বিষয়ে কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ মো.আলমগীর ভূইয়া জানান; প্রকৃত অর্থে জায়গা সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত আশরাফুল ইসলাম ও তার শ্বশুরবাড়ীর লোকজনের সাথে জেলা পরিষদ সদস্য আইয়ুব আলী ভ’ইয়ার বিরোধ রয়েছে। তিনি বলেন আমি নিজেই এ বিষয়ে মনিটরিং করছি।