করনীয়তে অস্বস্তীকর সমালোচনা

করনীয় ঠিক করতেই যেখানে হিমসীম খাচ্ছে সেখানে আবার মরার উপর খারার ঘাঁ হলো সমালোচনা। আর এই অস্বস্তীকর সমালোচেনার ঝড়ে উত্তাল এখন আকাশ – বাতাস এবং দেশীয় ও বিদেশীয় কুটরাজনীতি। এই কূট রাজনীতির জন্য ভাল কাজ বা ভাল উদ্যোগ সহজে সফলতায় পৌঁছতে পারে না বা উদ্যোগ নেয়া এবং বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রীতার সৃষ্টি হয় এমনকি কখনো কখনো উদ্যোগে পিছপা হয়। পারস্পরিক শান্তি, সৌহাদ্য এবং অসাম্প্রদায়ীক সম্প্রীতির বাংলাদেশে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দিনে ঘটে গেল এক পৈশাচিক পাকিবাহিনীর দোসরদের দ্বারা বর্বরোচিত নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ। যা কাম্য নয় এবং কোনভাবেই গোয়েন্দারা এই ঘটনার দ্বায় এড়াতে পারেন না। যদি বলি গোয়েন্দাদের পূর্ব প্রস্তুতি ছিল না অথবা আগাম কোন পুর্বাভাস ছিল না এমনকি গোয়েন্দা ব্যর্থতা তাহলে বুঝতে হবে এতে নতুন কোন ষড়যন্ত্রে সহযোগীতা করার প্রমান এর যাত্রা শুরু মাত্র। তাই রাষ্ট্রের টাকায় এবং জনগণের সম্পদের দ্বারা যাদের জীবন জীবিকা নির্বাহিত হচ্ছে সেই পদস্থ এবং অপদস্থ সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে বৈকি।
শান্তির ধর্ম ইসলাম কখনো বিশৃঙ্খলা এবং হত্যা ও ধ্বংস সমর্থন করে না বরং শান্তি ও স্থিতিশীলতা এবং নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তায় কাজ করে। নবী করিম (স:) যুদ্ধ-বিগ্রহ, এবং অশান্তিময় পরিস্থিকে শান্তিতে ফিরিয়ে আনার জন্য শান্তির ব্যবস্থায় জ্ঞান ও আল্লাহর সাহায্য নিয়ে এগিয়েছেন যেমন: সন্ধি বা চুক্তির মাধ্যমে। যুদ্ধ, হরতাল, ভাংচোর ও জ্বালাও পোড়াও এর মাধ্যমে শান্তি আসেনি এবং আসবেও না। গত সপ্তাহান্তের ঘটনার মধ্যে ছিলনা শান্তি এবং জ্ঞান ও আল্লাহর সাহায্য। তবে পুলিশের আচরণ ও নিষ্ক্রিয়তা একধরনের জ্ঞানের এমনকি আল্লাহর সাহায্যেরই প্রতিফলত।
ক্ষমা চাওয়াতেই কি শেষ। অল্লাহ বলেছেন ক্ষমা করতে আর হয়তো সেই কারণেই ক্ষমা পাবেন। কিন্তু যে অপুরনীয় ক্ষতি সাধিত হয়েছে সেই ক্ষতি কে পোষাবে। যাদের অর্থ ও সহযোগীতায় ঐ মাদ্রাসাসকল এবং এর ছাত্রসকল পড়ালেখা ও জীবন জীবিকাসহ দৈনন্দিন চাহিদাগুলো মেটানো হচ্ছিল সেই লোকদের আয় উপার্জনের ব্যবস্থায় আঘাত করে বা ধ্বংস করে এমনকি রাষ্ট্রের সম্পদ ক্ষতি করে কি ফায়দা পেয়েছেন। প্রকারান্তরে নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মেরেছেন তাই নয় কি? নিজেদের ভুলের দ্বারা পবিত্র ধর্ম ইসলামকে কলঙ্কিত করেছেন। ভাইসকল আর নির্বোধের মত কাজ করবেন না বরং সর্বোর্চ্চ সম্মানের জায়গাটুকু অলংকৃত করে মানুষকে শান্তি ও স্থিতিশীলতায় এমনকি পরকালীন জিবনের স্থায়ী নিশ্চয়তাই আবদ্ধ করুন। দুনিয়াবী লোভের জন্য বা বৈশ্বিক রাজনীতির এমনকি অর্থনীতির কূটচালে জড়াবেন না বরং নিজেদের ভাবমূর্তী সমুজ্জ্বলে খোদার সাহায্য কামনায় নিজেকে নিয়োজিত করুন। ধীক্কার জানাই সেই মধ্যপ্রাচ্যের আরব স্প্রীং খ্যাত সরকার পতনের ঘটনাগুলোকে। আর সেই থেকেই মুসলমান সকল সাবধান হওয়া উচিৎ নতুবা আগামীতে আরো বর ধরণের অধপতন অপেক্ষা করছে যা শুরুটা দেখে এখন শেষটা দেখার আগেই ইতি টানুন।
“ছোট একটা ঘটনা বলি: আলেম-ওলামাদের শ্রদ্ধা করে সম্মান করে যারা জীবন সায়ান্নে এখন সেই বৃদ্ধ হিজাব ও নেকাব পরিহিতা এবং ইসলামী সুন্নতী পোষাক পরিহিত আল্লহাজ্বদ্বয়কে কিভাবে তথাকথিত হুজ্বরদ্বয় অপমানিত করেছিল সেদিন তা দেখে হুজুরদের উপর শ্রদ্ধা ধরে রাখাই কঠিন ছিল। কিন্তু আমি শ্রদ্ধা ও সম্মান বোধ প্রকাশ করেছি এমনকি আমার মা ও বাবা বৃদ্ধ বয়সে পেয়েছে কষ্ট ঐ আলেমদ্বয় থেকে। আমার মায়ের মাথায় আঘাত লাগে গাড়ির কাচ ভাঙ্গার ভিভিষিকাময় অত্যাচারে। আমি বেসরকারী চাকুরীজিবি এবং দায়িত্ব ও সখে সাংবাদিকতায় জড়িত এবং একটি পত্রিকার সম্পাদক আর আমার গাড়িটিতে প্রেস এবং পত্রিকার নাম বড় করে সাটানো ছিল এই দেখে তারা ভাঙ্গাতে আরো মনোযোগী হয়। ” ঘটনাটি বলে কাউকে ছোট করা বা সহানুভুতি নেয়ার কোন ইচ্ছাই আমার নেই বরং সচেতন এবং আগামীর করনীয়তে ভাবনায় রেখে কাজ করার জন্য দৃষ্টান্তস্বরূপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে কাজে লাগার আকাঙ্খায় মাত্র।
বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশও ক্ষতিগ্রস্থ তবে খোদা তায়ালা বাংলাদেশকে রক্ষা করে যাচ্ছে এই উপলব্দিটা চেতনায় ফিরিয়ে আনা জরুরী আগামীর জন্য। বিশ্ব এখন ভয় চালানে ব্যস্ত। আর আমরা ঐ ভয়ের সংস্কৃতি থেকে বেড় হয়ে এসে সাহস ও খোদায়ী শান্তি এবং নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তার সংস্কৃতিতে এগিয়ে যাওয়ায় ব্যস্ত। করোনা মহামারীতে বালাদেশ আগেও রক্ষা পেয়েছে এখনও রক্ষা পাবে এটা একশতভাগ নিশ্চিত। আর এটা সম্ভব হয়েছে ও হবে আল্লাহর তায়ালার সুরক্ষায়। মানুষের কোন গুনে বা কাজে অথবা পরিকল্পনায় হয়নি এমনকি হবেও না। তবে পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাওয়াতে কোন সমালোচনা গ্রহনযোগ্য নয়। আল্লাহ বলেছেন তুমি অগ্রসর হও আর আমি তোমাকে রহমত ও বরকত দিয়ে সমৃদ্ধ করব এমনকি ভবিষ্যত মঙ্গলময় গন্তব্যে পৌঁছে দিব। বিজ্ঞান এবং মানুষ খোদার চেয়ে বড় নয় বরং খোদার দেয়া জ্ঞানের একটি ক্ষুদ্র অংশ মাত্র। তাই আসন্ন করোনাকে নিয়ে সংশয় বা ভয়ের কোন কারণ নেই। আমি আপনাদেরকে একশতভাগ নিশ্বয়তা দিয়ে বলতে পারি আপনার কোন ক্ষতি হবে না। বরং সাধারণ সর্দি জ্ব্র ও কাশির মতই এই করোনা। খোদা আপনাকে এবং বাংলাদেশকে রক্ষা করবে একশতভাগ নিশ্চিত। আপনি নির্ভয়ে পথ চলুন এবং খোদার সান্নিধ্যে থাকার সকল চেষ্টা চালিয়ে যান আর খোদার অভিপ্রায় বুঝে কাজে নেমে পড়–ন। “খোদা বলেছেন যা স¤্রাটের তা স¤্রাটকে দাও আর যা আমার (আল্লাহর) তা আমাকে দাও”। তাই যতটুকু সম্ভব সরকারের আইন কানুন মেনে চলুন এবং খোদার আইন কানুন একশতভাগ মেনে চলুন। খোদা-ই আপনাকে এবং আমাকে রক্ষা করবে আর তাঁরই কাছেই আমরা ফিরে যাব। তাই আল্লাহর সঙ্গে বা সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে সু-সম্পর্ক সৃষ্টিতে যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করুন। তৌবা করুন কৃতকর্মের জন্য, ফিরে আসুন খোদার সান্নিধ্যে। বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষ সকল বিষয়ের সঙ্গে করোনা মোকাবেলার বিষয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে এবং দিবে। একমাত্র খোদার উপর নির্ভরশীলতা ও বিশ্বাসের দৃঢ়তায় মনেবলে সাহসের উচ্ছাস দিয়ে।
সরকার যে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেছেন মেডিক্যাল ভর্তি পরিক্ষা চলমান রেখে সেটাই হল দৃড়তা এবং বঙ্গবন্ধুর চরিত্রের শিক্ষায় এগিয়ে যাওয়ার বহি:প্রকাশ। বাহাবা নয় বরং মাথা নত করে সাধুবাদ জানাই সঠিক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য। যারা আজ সমালোচনা করেছেন এবং নেতিবাচক মন্তব্যও করেছেন তাদের উদ্যেশ্যে বলি; বিগত দিনে করোনা থেকে কি আপনি ঘরে বসে মুক্ত ছিলেন অথবা কোন মানুষের জীবন রক্ষা করতে পেরেছেন? না কোনটিই নয় বরং ভয়ের রাজ্যে বসবাস করে খোদার ইচ্ছায় পথের কাটাস্বরূপ নিজেকে ব্যবহার করেছেন। সঠিক সময়ে সঠিক কাজটুকু করতে সহায়তা করুন। সরকারকে সাহসী পদক্ষেপ নিতে এমনকি ¯্রােতের বিপরীতে গিয়ে সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায় বাস্তবায়নে সহযোগীতা করুন। পৃথিবীর সংস্কৃতি ভয় আর বাংলাদেশের সংস্কৃতি জয় এবং সাহস দিয়ে, মনোবল দিয়ে এমনকি মহান আল্লাহর সুরক্ষার আবরন দিয়ে পৃথিবী থেকে ভয়কে দূর করে নতুন পৃথিবীর যাত্রা শুরুর কাজটুকু সুসম্পন্ন করা। আসুন আমরা আর সমালোচনা নয় বরং ঘর থেকে বের হয়ে এসে করোনা ভীতিকে বিতাড়িত করি। সকল কাজ সঠিক সময়ে করার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখি।
পরিবহন নিয়েও সমালোচনা কেন? মানুষের কল্যাণের কথা চিন্তা করে যে ব্যবস্থা করা হয়েছে সেই ব্যবস্থায় সহযোগীতা করি এবং আগামী দিনে আরো সহনীয় ব্যবস্থা সচল রাখার কাজে সাহসি পরিকল্পনায় অগ্রসর হই। আমাদের সাহস ও উৎসাহ এবং সার্বজনীন পরিকল্পনাই সরকারকে সামনে এগিয়ে যেতে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায় বাস্তবায়ন করতে এমনকি খোগা তায়ালার ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে সহায়ক হবে। তাই সঠিক সময়ে সঠিক কাজটুকু করতে স্ব স্ব ভুমিকা উদ্ভাসিত রাখুন। আমি এবং আমরা কোন কাজের অন্তরায় নয় বরং সহযোগী হিসেবে কাজ করি। জয় আমাদের হচ্ছে এবং হবেই ইনশাআল্লাহ॥

Leave a Reply

Your email address will not be published.