দ্বীনের সেবা বাদ দিয়ে ধর্মের নামে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না: আইজিপি

প্রশান্তি ডেক্স ॥ দ্বীনের সেবা বাদ দিয়ে ধর্মের নামে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। গত বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় হেফাজতের ইসলামের হামলা, ভাঙচুর ও সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনের পর প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। আইজিপি এলাকাবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা একা নন। ২০ কোটি জনগণ আপনাদের পাশে আছে। আমরা জনগণের সহযোগিতায় ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করবো। ধর্মের নামে রাজনীতি হতে পারে না।’
সহিসংসতাকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনার বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন। নবী করিম (স.) শান্তিপূণভাবে ধর্ম প্রচার করেছেন, তিনি কখনও সহিংসতা করেননি। সকল ধর্ম ও সকল ধর্মের মানুষ তার কাছে নিরাপদ ছিলো। তিনি তার উম্মতদের সকল ধর্মের মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে থাকার শিক্ষা দিয়েছেন।’
আইজিপি বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়ও এত তানন্ডব হয়নি, যেটা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হয়েছে। পাক হানাদার বাহিনী সেময় যে তান্ডব করেছে, আপনারা সেই তান্ডব করছেন। আপনাদের মাঝে পাকহানাদার বাহিনীর চরিত্র ফুটে উঠেছে।’ ভূমি অফিস পরিদর্শনের পর ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্তের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভূমি অফিসের সাথে কিসের শত্রুতা? ভূমি অফিসের সব কাগজপত্র পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা দেখে মনে হচ্ছে গান পাউডার দিয়ে পোড়ানো হয়েছে। তাছাড়া এভাবে ভস্মীভূত হতে পারে না।’
ভূমি রেকর্ড অফিসের গুরুত্বপূর্ণ এসব কাগজপত্র পুড়িয়ে দেওয়া প্রমাণ করে এটা ধর্মের নামে নাশকতা ও রাজনীতি। আপনারা প্রতিবাদ করেন কিন্তু ‘সুরসম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন’ পুড়িয়ে প্রমাণ করে এটা প্রতিবাদ নয়। সংস্কৃতিকে ধ্বংস করা।’ তিনি বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৩ লাখ লোক বাস করে। এখানে ৫৭৬টা মাদরাসা আছে। এসব মাদরাসায় ১ লাখ ৩ হাজার ছাত্র পড়াশোনা করে। জনগণের দান-খয়রাতের মাধ্যমে এসব মাদরাসার ছাত্ররা লেখাপড়া করে। বছরে প্রায় সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা জনগণ এসব মাদরাসার ছাত্রদের পড়াশোনার জন্য দান করে থাকে।’ এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, র্যাবের ডিজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ-আল-মামুন, অতিরিক্ত আইজিপি এসবি মনিরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ারা হোসেন, পুলিশ হেডকোয়াটার্সের ডিজি হায়দার আলী খান ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান। গত ২৮ মার্চ হেফাজতের হরতালে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া। সকাল থেকেই হরতাল সমর্থকেরা বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুরসহ অগ্নিসংযোগ করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.