কসবায় কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে নিয়মিত চিকিৎসক না বসায় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দরিদ্র জনগোষ্ঠি

ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়া কসবায় সরকারী কমিটিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে কমিউনিটি হেলথ প্রোভাইডারদের বিরুদ্ধে। নিয়মিত ক্লিনিকে না আসা, ঠিকমতো রোগীদের ঔষধ না দেয়া, রোগীদের কাছ টাকা নেয়া এবং সঠিক সময় পর্যন্ত ক্লিনিকে না থাকাসহ অসংখ্য অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে। ফলে সঠিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে গ্রামীন দরিদ্র জনগোষ্ঠি। বাস্তবায়ন হচ্ছেনা স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার সরকারের পরিকল্পনা।জানা যায়; শেখ হাসিনার অবদান, কমিউনিটি ক্লিনিক বাঁচায় প্রান- এ শ্লোগানে গ্রামীন দরিদ্র জনগোষ্ঠির চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে গড়ে তুলে কমিউনিটি ক্লিনিক। রোগীদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে নিয়োগ দেয়া হয় আলাদা স্বাস্থ্যকর্মী। কসবা উপজেলা রয়েছে ৩৪টি কমিউনিটি ক্লিনিক।
তার মধ্যে ২৯টি ক্লিনিকে রয়েছে কমিউনিটি হেলথ প্রোভাইডার (সিএইচসিপি)। নিয়মিত এবং সঠিক সময়ে ক্লিনিকে না আসাসহ অনেক অভিযোগ অধিকাংশ ক্লিনিকের হেলথ প্রোভাইডারের বিরুদ্ধে। সেবা পাচ্ছেনা গ্রামীন দরিদ্র জনগোষ্ঠি। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় উপজেলার মুলগ্রাম ইউনিয়নের নিমবাড়ী, ডাবিরঘর কমিউনিটি ক্লিনিক, মেহারী ইউনিয়নের যমুনা গ্রামে অবস্থিত কমিউনিটি ক্লিনিক, বাদৈর ইউনিয়নের বর্ণী কমিউনিটি ক্লিনিক সহ অধিকাংশ কমিউনিটি ক্লিনিকেই হেলথ প্রোভাইডার ও দায়িত্বে যারা রয়েছেন তারা নিয়মিত আসেনা । সপ্তাহে ২/৩ দিন আসেন তাদের ইচ্ছেমতো এবং আবার দুপুরের আগেই চলে যান ক্লিনিক তালা দিয়ে। রোগীরা এসে ফিরে যান বন্ধ থাকায়। ফলে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দরিদ্র জনগোষ্ঠি। বাস্তবায়ন হচ্ছেনা সরকারের ভিশন। এসকল স্বাস্থ্যকর্মীরা তাদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে নানা অজুহাত দেখিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছেন । নিয়মিত না আসলেও মাস শেষে ঠিকই বেতন উত্তোলন করে মহাসুখে দিনযাপন করছেন তারা। উপজেলার বাউরখন্ড কমিউনিটি ক্লিনিকে সকাল সাড়ে ১১টার সময় গিয়ে দেখা যায় ক্লিনিক তালাবদ্ধ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় গ্রামবাসী জানান, এই ক্লিনিকের ডাক্তার আছমা আক্তার সপ্তাহে ২দিন আসেন। আসেন ১০টার পরে আবার দুপুরের আগেই চলে যান। রোগীদের কাছে ১০/১৫ টাকা নেয়া হয় বলে জানায়। মেহারী ইউনিয়নের যমুনা কমিউনিটি ক্লিনিকে দুপুরে গিয়ে দেখা যায় ক্লিনিক তালাবদ্ধ । সেখানেও লোকজন জানায় দায়িত্বপ্রাপ্ত মরিয়ম বেগম সপ্তাহে ২/৩ দিন আসেন। তাদের ইচ্ছেমতো আসেন এবং তাদের ইচ্ছেমতোই চলে যান। রোগীরা এসে ফিরে যায়। বর্ণী কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়েও পাওয়া যায়নি দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রোভাইডার জিয়াসমিন আক্তারকে। সেখানের লোকজন জানায় সপ্তাহে ৩দিন আসেন তিনি। অধিকাংশ ক্লিনিক বন্ধ থাকার বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে অবহিত করেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অরূপ পালের সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের জানান; আমি নতুন যোগদান করেছি। উপজেলার সবগুলো ক্লিনিক এখনো ভিজিট করতে পারিনি। নির্ধারিত সময়ে দায়িত্বপালনে অবহেলা করলে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হবে। এ বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.