করোনা নয় বিএনপি দমনে মরিয়া সরকার; ফখরুল

প্রশান্তি ডেক্স ॥ সরকার মহামারি করোনা মোকাবিলা নয়, বরং ‘মিথ্যা’ মামলা দিয়ে রাজনৈতিকভাবে বিএনপির নেতাকর্মীদের দমন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গত বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের সই করা এক বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন। বিবৃতিতে বিএনপি মহসচিব ফরিদপুরের সালথায় বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ নামে-বেনামে চার হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার এবং হয়রানি-নির্যাতনের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। অবিলম্বে তিনি মামলা প্রত্যাহারসহ গ্রেপ্তারদের নিঃশর্ত মুক্তি ও সালথায় স্বাভাবিক শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জোর দাবি জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বর্তমানে সালথায় পুলিশি অভিযানের কারণে সারা এলাকা মানুষশূন্য হয়ে গেছে। সেখানে ভয়, আতঙ্ক ও বিভিষীকাময় পরিবেশ বিরাজ করছে। গ্রেপ্তারের নামে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানে নিরীহ মানুষকে হয়রানি ও নির্যাতন করা হচ্ছে। সালথার ঘটনায় বিএনপি কোনোভাবে জড়িত না থাকলেও কেবলমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, অথচ গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে-সালথার ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের উসকানি ছিল।’
বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, ‘সরকারের উদাসীনতা, ব্যর্থতায় বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। বাংলাদেশে গত বছরের তুলনায় করোনাভাইরাস মহামারি এখন আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা প্রতিদিন জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। কিন্তু সঙ্কটময় পরিস্থিতি সামাল দিতে আগের মতোই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে সরকার।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পরিস্থিতির ভয়াবহতা রোধে সরকার কোনো চিন্তা-ভাবনা ছাড়াই তড়িঘড়ি করে গত ৫ এপ্রিল থেকে ৭ দিনের জন্য দেশে লকডাউন/নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সরকারঘোষিত লকডাউনের বিরুদ্ধে দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। প্রকৃত অর্থে লকডাউন বলতে যা বোঝায় রাস্তাঘাটে তার কোনো সামান্যতম চিত্রও পরিলক্ষিত হচ্ছে না। কেবলমাত্র দেশের বড় বড় মার্কেট, শপিং মল ছাড়া সবকিছু খোলা রাখা হয়েছে। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বড় বড় ব্যবসায়ীসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, দোকান কর্মচারী ও নিম্ন আয়ের মানুষ। ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ হতাশাগস্ত হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের বাস্তবভিত্তিক ও পরিকল্পিত কোনো পদক্ষেপ নেই। ফলে সরকার লকডাউন সঠিকভাবে কার্যকর করতে ব্যর্থ হচ্ছে। জোরপূর্বক নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে লকডাউন কার্যকর করতে গিয়ে এখন জনগণের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে সরকার। জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই জনগণের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতাও নেই তাদের। ১২ বছরের অধিক কাল ভয়াবহ দুঃশাসনের জন্য জনগণের নিকট সরকারকে জবাবদিহি করতেই হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published.