গত এক সপ্তাহ লকডাউন নামক শয়তানের পরিচয়কে যথোপযুক্তভাবে এই দেশের মানুষ চিনেছে কিন্তু মানতে নারাজ সকলেই। আমাদের সরকার ধরি মাছ না ছুই পানি ফর্মুলাই এগিয়েছিল বাংলাদেশকে রক্ষায় কিন্তু তাতেও বাধ সাধল মিডিয়ার প্রচারনা। তবে দেশের মানুষ এবং সরকার ভালভাবে বুঝেছে এই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ’র ক্ষমতা। তবে সরকারকে সাধুবাদ জানাই তাদের নেয়া সাহসী পদক্ষেপগুলোর জন্য। আমরা করোনাকে ভয় করি না বরং ভয় করি আল্লাহর অবাধ্য হওয়াকে। আল্লাহর কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়াকে। তাই করোনা কোন ক্ষতি করতে পারবে না যতক্ষন আল্লাহর সান্নিধ্যে বসবাস করা যায়। তৌবা করে ফিরে আসুন আল্লাহর পবিত্রতায়। বিশ্বাস রাখুন আল্লাহ আপনার রক্ষায় যথেষ্ট এবং তিনিই আপনার সকল কিছুর যোগান দিবেন আর তাঁর কাছেই আমাদেরকে ফিরে যেতে হবে। যেহেতু জন্ম গ্রহণ করেছি সেহেতু মৃত্যুবরণ করতে হবে আর জন্ম ও মৃত্যুর সময় নির্ধারিত। কেউ এক সেকেন্ড আগাতে বা পিছাতে পারবে না। হতাশ হয়ে দিগ-বিদিগ ছুটাছোটি করে বা ঘরবন্দি হয়ে লুকিয়ে থাকার কোন কারন নেই। সকলে একসঙ্গে সাহসের সঙ্গে ধৈয্য ও খোদার তায়ালার সহায়তায় এই মনুষ্য সৃষ্টি দুর্যোগ মোকাবিলায় এগিয়ে আসুন।
এই দুর্যোগ ঈমান ও আমল পরিক্ষার একটি উত্তম পন্থা। প্রকারান্তরে খোদার সান্নিধ্য লাভের এক উর্বর সময়ে আশরাফুল মাকলুকাত। আমরা দেখেছি বিশ্ব ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার দৃশ্য কিন্তু আমাদের এই মার্তৃভূমি বাংলাদেশতো এই বিশ্ব ব্যবস্থার বাইরে নয়। তাই আমাদেরকেও আরো সচেতন হয়ে বিশ্বব্যবস্থার সঙ্গে তাল মিলাতে হবে। জনগণকে ধৈয্য ধরে সরকারের বেধে দেয়া নিয়মগুলোকে অনুসরণ ও অনুকরণ করে এগিয়ে যেতে হবে; তাহলেই অতি অল্প সময়ে এই ক্ষনস্থায়ী দুর্যোগ কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে। তবে দেশের অর্থনীতির চাকা বা কর্মসংস্থানের চাকা সচল রাখতে কি কি পদক্ষেপ নেয়া যায় সেইদিকে গুরুত্বারূপ করা এমনকি বাস্তবে দৃশ্যমান রাখা খুবই জরুরী। কোনভাবেই শিল্প কারখানা (সফ্টওয়ার, পোশাক, ঔষধ, খাদ্য ও সকল উৎপাদনকারী) বন্ধ রাখা যাবে না বরং খোলা রেখে আগামীর করণীয়তে কাজ করতে হবে। এই শিল্পগুলো বন্ধ হলে এমনকি কর্মসংস্থান বন্ধ হলে দেশ ও দেশের জনগণের কল্যাণ সাধনে এমনকি এদের প্রয়োজনীয় যোগানে যথেষ্ঠ মওজুদ আমাদের নেই। তাই খুব দ্রুতই কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়ে এগুতে হবে। ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারে এবং জনগণের কল্যাণে কাজ করাই আমাদের বর্তমান সরকারের লক্ষ্য। আর এই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে যা দৃশ্যমান।
যদি সাধারণ ছুটি বা সকল কিছু বন্ধ করে কঠিন সিদ্ধান্তে পৌছতে হয় এবং তা কার্যকরে কঠোরতা দৃশ্যমান রাখতে হয় তাহলে একটি প্রস্তাব উল্লেখ করা যেতে পারে। সরকারের কোষাগার থেকে এবং দলীয় কোষাগার থেকে পাশাপাশি, দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে (যারা বিভিন্ন কমিটিতে রয়েছে); ও সমাজের হৃদয়বান মানুষ যাদের সামর্থ রয়েছে তাদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে দেশের প্রতিটি পরিবারকে ১৫০০০টাকা দেয়া হউক এবং সেই সাথে লক ডাউন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হউক। তাহলে কারো কিছু বলার নেই এবং লকডাউন পালন ব্যতিরেকে কোন উপায়ও নেই। এই ব্যবস্থা আশু করা হউক এবং জনগণকে আগামী এক মাসের জন্য ঘরবন্ধি করা হউক। যদি সম্ভব না হয় তাহলে সবাইকে নিয়ে সারাদেশে উপাসনা বা রোজা রেখে সকলে একযোগে সৃষ্টিকর্তার কাছে মোনাজাত ও তৌবা করে যার যার কর্মে ফিরে গিয়ে সততার, বিশ্বস্ততা এবং আন্তরিকতা ও ন্যায়-নিতির বাস্তবায়ন করুক। তাহলেই চলবে আগামীর পথচলা।
গত লকডাউন বা হেফাজত ডাউন কোনটাই কার্যকর হয়নি। কারন হেফাজতিরা আল্লাহর কাছ থেকে দুরে সরে গিয়ে আল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে তাই আল্লাহ তাদের প্রত্যাখ্যান করে মানুষের কল্যাণে নিয়োজিতদের সহায়তা করে আগামীর শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিতে সহায়তা করে যাচ্ছে। আর শয়তানের ডর চালান খ্যাত লকডাউনকেও প্রত্যাখ্যান করে খোদার ইচ্ছার বহি:প্রকাশ ঘটিয়েছে। আল্লাহ চান না যে, তাঁর সৃষ্টি কারো কাছে মাথা নত করুক বা বন্ধি হউক। কারণ তাঁরই কাছে মাথানত করার জন্য আল্লাহ বলেছেন এবং যতবার তাঁর সৃষ্টি বন্ধী হয়ে বা বিচ্ছিন্ন হয়েছে ততবারই তিনি উদ্ধার করেছেন এবং বর্তমানে এই উদ্ধার কাজের শুরু হয়েছে। আল্লাহ তাঁর সৃষ্টিকে এই মহা দুর্যোগ থেকেও উদ্ধার করে শান্তি ও স্থিতিশীলতায় নিয়ে আসবেন। বিশ্বাস রাখুন খোদার উপর। আমাদের আল্লাহর বসবাস হল মানুষের দিলে (রূহে)। মন্দির, গীর্জায়, পেগুডায় ও মসজিদে খোদার বসবাস নয়। তাই নিজের রূহকে বা অন্তরকে পবিত্র করুন এবং আল্লাহর সঙ্গে রূহানীক সম্পর্ক উন্নত করুন তাহলেই মুক্তির পথ দেখতে পাবেন। মানুষকে কষ্ট বা শাস্তি দেয়া আল্লাহর কাজ নয় বরং ভালবেসে ক্ষমাশীল হয়ে সকল কিছুর যোগান দেয়ায় তাঁর কাজ। তাই রহমাতাল্লীল আলআমীন, গাফুরুর রাহীম ও সামীউন বাছির সহ আরো হাজারো উপাধীখ্যাত আল্লাহর দয়া ও ভালবাসায় সিক্ত হতে প্রস্তুত হউন।
মানুষে মানুষে দুরত্ব নয় বরং মানুষে মানুষে ভাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করুন। নি:শর্ত ভালবাসার বন্ধন জাগ্রত রেখে সুদৃঢ় করণে সচেষ্ট থাকুন। যা সরকারের তা সরকারকে পরিপূর্ণরুপে দিন আর যা আল্লাহর তা আল্লাহকে পরিপূর্ণরূপে দিন। কোন কাজে আল্লাহর নামে কসম খাবেন না। কারন আল্লহ নিষেধ করেছেন তাঁর নামে কসম খেতে বরং কসম খাওয়ার কাজ থেকে বিরত থাকুন। অসহায়ের মত আচরণ করুন। মিছে ক্ষমতা দেখাতে যাবেন না। অন্যের ক্ষতির কারন হবেন না। নিজের দ্বারা অন্যের উপকারের কারন বা উপকরণ হউন। সৃষ্টির সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখুন। সৃষ্টিকর্তা আপনাকে; আমাকে ব্যবহার করার জন্য আহবান করছে আর ঐ আহবানে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসুন। সরকারকে সহযোগীতা করুন যাতে করে তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে সেবার মান বৃদ্দি করতে এবং আগামীর করনীয়তে দৃষ্টান্ত রাখতে পারে। নেতিবাচক সকল কর্মকান্ড পরিহার করুন। বিশ্বাস করুন এখন খোদায়ী বিচার চলছে; এটা খোদার বিচারের সময় এবং খোদা তাঁর ন্যায় বিচার অব্যাহত রেখে যাচ্ছেন। এই বিচারেও সহযোগীতা করা আমাদের সকলের ঈমানী দায়িত্ব। আমরা পাপ বা অবাধ্য হতে হতে এখন পৃথিবীতে অবাধ্যতার দন্ড কার্যকর রেখেছি তাই খোদা সেই অবাধ্যতা থেকে ফিরিয়ে আনতে তাঁর ন্যায় বিচারের দন্ড কার্যকর করে আমাদেরকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন তার বাদ্য এবং ন্যায়-পরায়নতায়, শান্তি এবং স্থিতিশীলতায় মোট কথা খোদার অভিপ্রায়ে। তাই বলি ফিরে আসুন এবং মনযোগ দিন খোদার অমীয় বানীতে “যা সত্য, যা উপযুক্ত, যা সৎ, যা খাঁটি, যা সুন্দর, যা সম্মান পাবার যোগ্য, মোট কথা যা ভাল এবং প্রশংসার যোগ্য সেই দিকে তোমরা মন দাও।”