প্রশান্তি আন্তজার্তিক ডেক্স ॥ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন ঘটনার কারণে দক্ষিণ এশিয়াতে এক ধরনের অশান্তি বিরাজ করছে। বিশেষ করে লাদাখ সীমান্ত নিয়ে ভারত-চীন সংঘাত, শ্রীলঙ্কায় গির্জায় প্রার্থনারত মানুষদের ওপর বোমা হামলাসহ কাশ্মির ইস্যু অন্যতম। আর এসব ঘটনার পেছনে ভারতের হাত রয়েছে বলে দোষ চাপাচ্ছেন নেটিজেনরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে তারা এ ধরনের প্রচারণা চালাচ্ছে। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে গবেষণামূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দ্যা ডিসইনফোল্যাব ডট ওআরজি নামক একটি ওয়েবসাইট। সেখানে ‘দ্য অ্যানাটমি অফ পাকিস্তান ৫ম জেনারেশন ওয়ারফেয়ার’ নামক শীর্ষক প্রতিবেদনে ভারতের বিরুদ্ধে এ ধরনের অপপ্রচারকে ‘ফেইক নিউজ’ বলে সম্মোধন করা হয়েছে।
মাস্যাচুসেট্স ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি) তাদের একটি গবেষণায় বলেছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সত্য নিউজের থেকে ছয়গুণ বেশি দ্রুত ছড়ায় ফেইক নিউজ। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, তথ্যের সকল ক্যাটাগরিতেই মিথ্যা সংবাদ অনেক বেশি দ্রুত গতিতে ছড়ায়। এসব সংবাদ আঞ্চলিকভাবে রাজনৈতি ও ভৌগলিক দিক দিয়ে মানুষের মাঝে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। যা অনেকসময় প্রতিবেশি দেশগুলোর মাঝে যুদ্ধাবস্থা পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।
বিশেষ করে ২০১৯ সালে ২১ এপ্রিল শ্রীলঙ্কায় গির্জায় প্রার্থনারত মানুষদের ওপর বোমা হামলার ঘটনার কথা উল্লেখ করা যায়। ওই ঘটনায় ৩০০ জন নিহত ও প্রায় ৫০০ জন আহত হয়েছিলেন। সে সময় তাৎক্ষণিকভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে তথ্য ছড়িয়ে পড়ে যে, এই হামলার পেছনে ভারতের হাত রয়েছে। এর কারণ হিসেবে নেটিজেনরা তামিল বিদ্রোহের কথাও তুলে আনেন। যদিও পরবর্তীতে জানা যায়, এ হামলার পেছনে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসআইএসের হাত ছিল।
গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা যায়, ভারতের বিরুদ্ধে এ ধরনের মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছিল মূলত পাকিস্তানিরা। এক্ষেত্রে তারা সহজেই নিজেদের নাম ও পরিচিতি পাল্টে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট করছে। আর এসব তথ্য মানুষের মাঝে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার জন্য তারা নিজেদেরকে শ্রীলঙ্কান সেনাবাহিনী কিংবা মডেল অথবা মধ্যপ্রাচ্যের কোনো সুপরিচিত ব্যক্তিত্বের নামে ফেইক আইডি খুলছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, ওইসব আইডির ফলোয়ার সব পাকিস্তানি এবং যারা মন্তব্য করছেন তারাও পাক নাগরিক। যেখানে শ্রীলঙ্কার কেউই নেই।
একই ঘটনা ঘটে গত বছর লাদাখ সীমান্ত নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যকার সংঘাতের সময় এবং কোভিড-১৯ লকডাউন চলাকালীন। সে সময় মধ্যপ্রাচ্যের সুপরিচিত কয়েকজন ব্যক্তিত্বের আইডি থেকে পোস্ট করা হয় যে, ভারতে ইসলামোফোবিয়া চলছে। কিন্তু পরে দেখা যায় এসব আইডি ভুয়া এবং সেগুলো পাকিস্তানি নাগরিকদের দ্বারা পরিচালিত।