মাহতাব হোসেন ॥ গত রাতে কারওয়ান বাজারে যেতে হয়েছিল কাজের সূত্রেই। এরইমধ্যে মনে হলো সবজির দরটা কেমন যাচ্ছে কারওয়ান বাজারে, একটু জেনে নেওয়া যেতে পারে। এখানের দাম জানলে ঢাকার ছোট ছোট বাজারে সবজির দাম কেমন নিচ্ছে সেটা বোঝা যাবে। তবে আমার আগ্রহ ছিল লেবুর দাম সম্পর্কে। এই লেবুর দাম কোনোভাবেই কমছে না। ভাটারার একটা কাঁচাবাজারে পরশু লেবু কিনলাম এক হালি ৪০ টাকা দিয়ে। এক সহকর্মী বললেন, কারওয়ান বাজার গেলে ওদিক থেকেই লেবু কিনে আনবেন। ৩০ টাকায় এক ডজন পাবেন। সহকর্মী রমজান শুরু হওয়ার দু-একদিন আগের কথা বলেছিলেন। যাহোক। পুরো গা বাঁচিয়ে ইত্তেফাকের সামনে দিয়ে ঢুকে পড়লাম বিশাল এই কাঁচাবাজারে। ডানে একদিকে চাটাই দিয়ে ঘেরা মসজিদ। তারাবির নামাজ তখন শেষের দিকে। একটু এগিয়েই সাবেক জনতা টাওয়ারের দিকে ডানে বামে তরমুজের স্তুপ। কিছু ট্রাক ঢুকে পড়ছে। গোটা ঢাকার মধ্যে শুধু এই কারওয়ান বাজারটাই জেগে আছে। সামনে এগিয়ে গেলাম। প্রগতির ভবন পেরিয়ে বাম দিকে লেবু নিয়ে বসে পড়েছেন একজন বৃদ্ধ। দুই প্রকারের লেবু।
জিজ্ঞেস করলাম-
‘লেবু কত ডজন?’
‘১০০ টাকা এটা।’
‘১০০ টাকা ডজন? বলেন কী? মাথা খারাপ নাকি?’
লেবু বিক্রেতা একটু বিরক্ত হয়ে বললেন,
‘আরে ডরজন না, হালি ১০০ টাকা।’
যেন নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারলাম না। বলে কি এই লোকটা। লেবুর আকার একটু বড়ো। তাই বলে ১০০ টাকা ডজন? আমার মনে হলো লোকটার মাথা খারাপ হয়েছে। সেখান থেকে চলে গেলাম। জিজ্ঞেস করলাম পাইকারি লেবু কোথায় বিক্রি হচ্ছে। এক অল্পবয়স্ক ছেলে আমাকে নিয়ে গেল একটা জায়গায়। সেখানে লেবুর আড়ত। ন্যূনতম ১০০ লেবু কিনতে হয় সেখানে। ১০০ লেবুর দাম কত? কোনো দামদর করা যাবে না। ১০০ লেবু ১৬০০ টাকা। অর্থাৎ সর্বোচ্চ পাইকারি মূল্যে, অর্থাৎ ঢাকায় এই মূহূর্তে সর্বনিম্ন লেবুর মূল্য ১৬ টাকা, সেটা পাইকারিতে। সেখান থেকে কেনার পরে আরো কয়েক হাত ঘুরতেই সেই লুবুর দাম তো ২৫ টাকার নিচে নামবেই না বরং ৩০ টাকার ওপরে উঠে যেতে পারে। যাহোক সেখানে দাঁড়িয়ে মনে মনে হিসাব করলাম। এক কেজি লেবুর চেয়ে এখন মনে হয় মালটার দাম কম। কারওয়ান বাজারে ম,আলটা ১৪০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছে। বা তারচেয়েও কম হতে পারে যা। মনে মনে এই সান্ত¡না নিয়ে কারওয়ান বাজার ত্যাগ করলাম।