ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাক্ষণবাড়িয়ার কসবায় একটি গ্রামে শিশু ছাত্রী ধর্ষনের পর মামলা হওয়ায় হেফাজত কর্মী নুরুল্লার লোকজন সাংবাদিকদের দেখলেই জড়ো হয়ে উল্টা-পাল্টা কথা বলতে থাকে। ফোরকানিয়া মাদরাসা এলাকায় চলছে মাওলানা নুরুল্লাহর লোকদের টহল। মামলার স্বাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে যাচেছ নুরুল্লাহর লোকজন। গতকাল সরেজমিনে এ প্রতিবেদকসহ কয়েকজন সাংবাদিক ওই গ্রামের মাদরাসা প্রাঙ্গনে গেলে বেশ কিছু লোকজন জড়ো হয়। স্থানীয় একটি ফেইসবুক টিভির সাংবাদিক কিনা জানতে চায়। ওই টিভির সাংবাদিককে নুরুল্লাহর লোকজন গালমন্দ করতে থাকে। মাওলানা নুরুল্লাহর গোষ্ঠির লোক ইকবাল হোসেন জানান, গত ১০ এপ্রিল মেয়ের মা এবং দাদী নুরুল্লাহর বড় ভাই মাওলানা ছফিউল্লাহ’র নিকট এ ঘটনার বিচার চাইলে ওইদিন রাতে ডাঃ আজাদ সাহেবের বাড়িতে বসে। সেখানে রজব আলী সর্দার না আসাতে পরদিন ১১ এপ্রিল সন্ধ্যায় রজব আলীর বাড়িতে লোকজন জড়ো হয়। রজব আলীর বাড়িতে অতিরিক্ত চেয়ার না থাকায় পাশ্ববর্তী ছাত্রলীগ কর্মী শাহীনের বাড়িতে বসে। কিন্তু ধর্ষিত শিশু ছাত্রীর গোষ্ঠির লোকজন ধর্ষিতা শিশুর ভয়াবহতা জেনে থানায় মামলা করে। ইকবাল হোসেন আরো জানান, মুলগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সেক্রেটারী ও ইউপি চেয়ারম্যান মঈনুল ইসলামকে এ বিষয়টি জানালে তারা এর সামাজিক বিচার করে দিতে পারবেনা বলে জানান। ইকবাল আরো জানায়, যদি ঘটনা সত্য হয় আইন অনুযায়ী নুরুল্লাহর কঠিন বিচার হোক । এ বিষয়ে নির্যাতিতা ওই ছাত্রীর মা বিলকিছ বেগম জানান; নুরুল্লাহর বড় ভাই ছফিউল্লাহ মেয়েকে দেখে তাকে গোছল করিয়ে তার কাপড়গুলো ধুয়ে ফেলতে বলেছিলো। সে তার ভাইয়ের কঠিন বিচার করার আশ্বাস দিয়েছিলো। সরল বিশ্বাসে মেয়ের কাপড়গুলো ধুয়ে ফেলেছিলাম। কিন্তু তারা বিচারের নামে তালবাহানা করেছে। আমি এ ঘটনার আইন অনুযায়ী বিচার চাই। এরা আমাকে ভয়ভীতি দেখাচেছ তাই মেয়েকে আমার বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছি। গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত মফিজ মাষ্টার বলেন; মেয়েটি পঞ্চম শ্রেনীতে পড়ে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক চম্পা আমাদের বলেছে সে মেয়েটির শরীরের কাপড় খোলে দেখেছে এবং তার বর্ননায় গ্রামের অনেকেই হতবাক হয়েছে। এখন চম্পাও মুখ বন্ধ করে দিয়েছে। চম্পা বেগমের নিকট গেলে তিনি এ প্রতিবেদক সহ সাংবাদিকদের সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। ওই গ্রামের বাসিন্দা সজল মিয়া, দানু মিয়া এ প্রতিবেদককে বলেন, তারা পারেনা এমন কোনো কাজ নেই। নুরুল্লাহর বড় ভাই মাওলানা ওবায়দুল্লাহ নব্বইয়ের দশকে আফগানিস্তানে তালেবান বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলো। সেখানে সে মারা যায়। নুুরুল্লাহ দেশের শত্রু, মানবতার শত্রু। আমরা তার বিচার চাই। এ বিষয়ে কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ আলমগীর ভ’ইয়ার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন; ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজ্ঞ আদালতে শিশু ছাত্রীটির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। মেডিকেল রিপোর্টটি এখনো পৌছেনি। আসামীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।উল্লেখ্য গত ১০ এপ্রিল ওই গ্রামের ফোরকানীয় মাদরাসায় ১০ বছরের ৫ম শ্রেনীতে পড়–য়া শিশুটি আরবী পড়তে গিয়ে হুজুরের কাছে ধর্ষিত হয়েছিলো।
Share on Facebook
Follow on Facebook
Add to Google+
Connect on Linked in
Subscribe by Email
Print This Post