প্রশান্তি ডেক্স ॥ এক বছর থেকে সঙ্গী হারিয়ে নিঃসঙ্গ অবস্থায় রয়েছে মেয়ে উটপাখিটি। রংপুর চিড়িয়াখানার একটি খাঁচায় বিষন্নভাবে পাখিটির অধিকাংশ সময় কাটছে। সঙ্গী ছাড়া বংশ বিস্তারও সম্ভব হচ্ছে না। সচেতন অনেকেই মনে করছেন উটপাখিটি বংশ বিস্তারের জন্য খুব দ্রুত একটি পুরুষ সঙ্গী আনা প্রয়োজন। রংপুর চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা গেছে, আড়াই বছর আগে ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে ৬ মাস বয়সী একটি পুরুষ এবং একটি মেয়ে উটপাখি আনা হয়। দেড় বছর এক সাথে থাকার পর উটপাখিটির পুরুষ সঙ্গীটি এক বছর আগে মারা যায়। তখন থেকেই বিষন্নমনে খাঁচায় একা একা দিন কাটছে পাখিটির। সম্প্রতি ডিম দিলেও পরুষ সঙ্গী না থাকায় বাচ্চা ফুটেনি।
এই প্রজাতির পাখি সম্পর্কে জানা গেছে, মূলত আফ্রিকার সাহারা মরুভূমির দক্ষিণের তৃণভূমি উটপাখির মূল বিচরণস্থল। বিশ্বের অনেকস্থানে উটপাখি পালন একটি লাভজনক ব্যবসা। বিশ্ববাজারে এর চামড়া, মাংস, পালক ইত্যাদির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এই পাখি পোকামাকড় খায়। উড়তে না পারলেও ৭০ কিলোমিটার বেগে দৌড়াতে পারে। অঞ্চলভেদে প্রজননে ভিন্নতা রয়েছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে একটি পরুষ তার নিজস্ব এলাকা দখল করে দুই থেকে সাতটি স্ত্রী উটপাখির সাথে থাকে এবং বংশ বিস্তার করে।
উটপাখির গড় উচ্চতা প্রায় তিন মিটার। দেহের ওজন ১৫০ কেজিরও বেশি হতে পারে। এদের আছে বিশাল দু’টি পাখা। পুরোটা মেলে ধরলে এর দৈর্ঘ্য হয় প্রায় সাত ফুট। পরুষ উটপাখির পাখার রং কালো হয় এবং সঙ্গে থাকে সাদা লেজ। স্ত্রী উটপাখির পাখার রং ধূসর বাদামি। উটপাখি ৫০ থেকে ৭০ বছর উৎপাদনক্ষম থাকে এবং এরা ৮০ থেকে ১০০ বছর পর্যন্ত বাঁচে। রংপুর চিড়িয়াখানার উটপাখিটি সঙ্গী ছাড়া কত বছর বাঁচবে এটাই এখন দেখার বিষয়। কারণ এর সঙ্গী মাত্র ২ বছর বয়সে মারা গেছে। রংপুর চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর আম্বার আলী জানান, পাখিটি ডিম দিয়েছিল। কিন্তু পুরুষ সঙ্গী না থাকায় ডিমগুলো ফুটেনি। ঢাকা চিড়িয়াখানায় একটি পরুষ উটপাখির জন্য চাহিদা দেয়া হয়েছে। সেটি এলে এই পাখির বংশ বিস্তার হতে পারে।