টিকা এবং লকডাউন ও বাস্তবতা

টিকা এবং লকডাউন এই দুইটি শব্দ এখন দুই মেরুতে অবস্থান করেছে আর এই দুইটি শব্দের বাস্তবতা এখন অন্ধকারে তলিয়ে গেছে। টিকা নিয়ে বিশ্ব এখন তেলেছমাতির খেলায় মেতেছে। আর এই খেলার স্বীকার সাধারণ জনগন। তবে এতে করে আমাদের দেশের মানুষের কোন উপকার হয়েছে বা হবে বলে মনে হয় না। সরকার মানুষকে অভয় দেয়ার জন্য বিনামূল্যে টিকার ব্যবস্থা করেছে যাতে ঐ করোনা নামক ভীতি থেকে মানুষ মুক্ত থেকে স্বাভাবিক জীবন যাত্রায় নিয়োজিত হতে পারে। তবে আবার এতেও বাগড়া বসিয়েছে বিশ্ব মাতবররা। কেউ আবার ইতোমধ্যে টিকা দেয়ার ঘোষনা বা চুক্তি থেকে সরে এসেছে যা সবাই জানে আবার কেউ কেউ এতে যুক্ত হয়েছে যাতে করে শুন্যতা পূরণ হয়ে অন্তরের মনোকামনা ও বাসনা পূর্ন হয়। এতেও আবার আন্তর্জাতিক ষঢ়যন্ত্রের পুর্বাভাস মিলেছে। সব মিলয়ে টিকা যেন আগামীতে অদৃশ্য বস্তুতে পরিণত হয় সেই ব্যবস্থার দিকেই এগুচ্ছে বলে প্রতিয়মান হচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে টিকা নির্ভরতা দিন দিন কমে এসেছে বলে জনমনের বিভেক এবং ইচ্ছাশক্তির প্রকাশ ঘটেছে। মানুষ এখন টিকার চেয়ে সৃষ্টিকর্তায় বেশী মনযোগী হচ্ছে; কারণ সৃষ্টিকর্তায়ই আমাদের একমাত্র অবলম্বন। টিকা এবং করোনা কোনটায়ই সৃষ্টিকর্তার চেয়ে বেশী শক্তিশালী নয় অথবা নির্ভরযোগ্যও নয়। সৃষ্টিকর্তা-ই একমাত্র নির্ভরযোগ্য এবং তাঁরই কাছে আমাদের প্রত্যাবর্তন তাই তাঁর সান্নিধ্যই একমাত্র রক্ষাকবচ হিসেবে সর্বাধিক স্বীকৃত ও প্রতিষ্ঠিত।
লকডাউন শব্দটি নতুন আবিস্কার হলেও কিন্তু বহুল প্রচলিত এবং অল্পদিনেই জনপ্রীয়তার তুঙ্গে। মানুষ ভালভাবে লকডাউনকে করায়ত্ব করেছে তবে এর কার্যকারীতাকে অনাগ্রহে পরিণত করে লকডাউনকে ফলপ্রসুতাই অকার্যকর করেছে ইতোমধ্যেই। আমাদের দেশে এই লকডাউন সম্পূর্ণ অকার্যকর যা দৃশ্যমান বাস্তবতায় সর্বমহলে স্বীকৃতী লাভ করেছে। তবে সরকারও এই ধারনার সাথে একমত এবং আল্লাহর উপর গভীর বিশ্বাস এবং আশা ভরসা নিয়েই ধরি মাছ না ছুই পানি খেলার ছুতোয় একদিকে লকডাউন এবং অন্যদিকে সবকিছুই সচল রেখে উন্নয়ন কর্মপন্থা নিয়ে এগুচ্ছে। তবে লকডাউনে কিছু মানুষের ক্ষতি হচ্ছে যেমন; ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ী, দৈনিক উপার্জনকারী ও শ্রমিকশ্রেণীর প্রীয় মানুষগুলোর। অপরদিকে কিছু কিছু ব্যবসায়ীর জন্য এই লকডাউন কপাল খুলে দিয়েছে আবার কিছু কিছু জনসেবীর ও রাজনৈতিক ব্যক্তির জন্যও এই লকডাউন ভাগ্যের চাকা সচল করে দিয়েছে। করোনা ছুতোয় বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশও ক্ষতিগ্রস্ত তবে এর মাত্রা তুলনায় কম। প্রথম যাত্রায় লকডাউন ছিল পরিপূর্ণ এবং জনগণ (বিশেষ করে শহরের) ছিল ভীতসন্ত্রন্ত; কিন্তু দ্বিতীয় বারের লকডাউন ছিল শুধু নামেমাত্র শোডাউন এবং জনগণ সম্পূর্ণ সচেতন এমনকি ভয়ের উদ্ধে। ডর-ভয়হীন জাতি হিসেবে এই লকডাউনে বাঙ্গালী নতুন স্বীকৃতিতে স্বীকৃত হয়েছে বৈকী। টিকা এবং লকডাউন এই দুটি শব্দই এখন মর্যাদাহীন হয়ে অস্তীত্ব বিলীনের পথে। যতই দিন যাচ্ছে ততই এর কার্যকারীতা হারিয়ে শব্দদুটি বিলীন হতে চলেছে। অল্প সময়ে যেমনি করে জনপ্রীয়তার তুঙ্গে উঠেছিল ঠিক তেমনি করেই আবার জনপ্রীয়তা হারিয়ে অস্তিত্ব বিলীনের পথে তলিয়ে যাচ্ছে। তবে সরকার এবং বিশ্ববাসিকে নতুন করে ভাবতে হবে কি করে মানুষকে ভয়ের আতঙ্কে ডুবানো যায় এবং নতুন সংস্করনে ও নতুন নামে আবারো ঘরবন্ধি করা যায়। তবে পুরোনো নাম ব্যবহার করে এমনকি পুরোনো করোনার ছুতোয় বা আফ্রিকা, ভারত যেই নামেই হোকনা কেন আর ভয়াতঙ্কে ঘরবন্ধি করা যাবে না বরং যদি পুনরায় চেষ্টা করা হয় তাহলে জনবিস্ফোরণ ঘটার উর্বর সম্ভবনা আসন্ন। গানের সুরে ও কথায় বলতে হয় সময় থাকতে মনা হুশিয়ার। এখন থেকে সাবধানতা অবলম্বন করে নতুন চিন্তা ও পরিকল্পনায় বিশ্ব নের্তৃত্ব এমনকি আমাদের এই প্রীয় মার্তৃভুমিকেও এগুতে হবে।
বাস্তবতা কি; বাস্তবতার নীরিখে এগুতে গিয়ে কি কি পরিলক্ষিত হচ্ছে এবং কোথায় কোথায় এর যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে তা খতিয়ে দেখার সময় এখনই। চারিদিকের পরিস্থিতি ও বাস্তবতা পর্যবেক্ষণ করে এরই আলোকে আগামীর ভাবনাগুলো সাজালে নির্ভেজাল ও নি:জঞ্জাল পৃথিবী উপহার দেয়ার সম্ভাবনা শতভাগ। করোনা ও লকডাউন এবং বাস্তবতা এই তিনটিই বর্তমানে পরস্পর বিরোধী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। পৃথিবীর মানুষগুলো কি ভেবে দেখেছে; পৃথিবীতে কি কি রোগ আবৃস্কিত হয়েছে বা আর কি কি রোগ এখনও আবিস্কৃত হয়নি। আর এটাও কি জেনেছেন যে, কোন রোগে কতজন মানুষ দৈনিক মরেছে; নাকি শুধু করোনা নিয়েই ব্যতিব্যস্ত রয়েছেন। করোনা ছাড়া আরও কি অন্য কোন কারণ রয়েছে মানুষের মৃত্যুর পিছনে? একটু ভাবুন তো এই বিষয়গুলো নিয়ে। হ্যা দৈনিক খুন হচ্ছে, এক্সিডেন্টে মানুষ মারা যাচ্ছে, বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মানুষ মারা যাচ্ছে এমনকি বয়বৃদ্ধতার কারণেও মারা যাচ্ছে তবে ঐ মারা যাওয়া মানুষগুলোকে যদি হিসেবের আওতায় আনা যেত তাহলে এই চলমান করোনাকে পিছনে ফেলে সমানে এগোত এবং নতুন নতুন ভয়াতঙ্কের সূচক দৃশ্যমান হতো। অগণিত মৃত্যুর মিছিলে মাত্র অল্প কতেক সংখ্যায় করোনা যুক্ত হয়ে পৃথিবীকে যে নাড়া দিয়েছে তা দেখে হতাশ ও হতম্ভব না হয়ে বরং হাসতে ইচ্চে করছে আমাদের বোকামীর জন্য। আসুন আমরা সকল মৃত্যুকে পিছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যায় সকল কর্মকান্ড অব্যাহত রেখে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, অফিস, আদালত, ব্যবসা, কৃষিকাজসহ যাবতীয় উন্নয়ন এমনকি দৈনন্দিন কার্য সম্পাদন ও মৌলিক চাহিদার যোগান যোগাতে একযোগে অগ্রসর হই। কোন বাধাকে গুরুত্ব না দিয়ে বরং উপেক্ষা করে অথবা প্রতিহত করে সামনে এগিয়ে যায়; তাহলেই সকল প্রতিবন্ধকতা নিরবে পালাবে এবং মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হবে। পৃথিবীর নিয়ন্ত্রণ নিজেদের অধিনে রাখতে পারবে। সকল কিছুর দেখাশুনা করে পৃথিবীকে শাষণের অধিনে রাখতে পারবে। শাষন কেমন হবে বলা যায় “সোহাগ করা তারই সাজে শাষন করে যে।” হ্যা পৃথিবীর এই দুর্যোগে সাহস ও সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস এবং নির্ভরতা নিয়ে এগিয়ে গেলেই সফলতা শতভাগে উন্নীত হবে। নিশ্চয়তা, নিরাপত্তা ও আগামীর আশা এবং আকাঙ্খা প্রতিফলিত হবে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে; ক্ষমা এবং ভালবাসার সংমিশ্রনে। আসুন আমরা টিকা নির্ভরতা এবং লকডাউন নির্ভরতা পরিহার করি এবং বাস্তবতার নিরীখে সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায় বুঝে সামনে অগ্রসর হই। আল্লাহ আমাদের সকলকে তৌফিক দান করুন এবং আপনার ইচ্ছায় পরিচালিত হতে সহায়তা করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.