ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় গত রবিবার (২মে) সকালে বায়েক ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ বিল্লাল হোসেন একটি জাতীয় পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় সংক্ষুব্দ হয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এ ঘটনার জন্য বিল্লাল হোসেন বর্তমান বায়েক ইউপি চেয়ারম্যান আল মামুন ভূইয়া ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা নুরুন্নবী আজমলকে দায়ী করেছেন। সংবাদ সম্মেলন তিনি বলেন; ঢাকা-চট্রগ্রাম রেললাইনের আখাউড়া-কুমিল্লা পর্যন্ত নির্মানের জন্য ২০১৬ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ থেকে ভূমি অধিগ্রহন করা হয়। উপজেলার বালিয়াহুড়া মৌজার ২০৪ দাগের ২৬০ শতক ভূমির মধ্যে ৪৫ শতক ৯৯ বছর মেয়াদে বন্দোবস্ত পায় তার বাবা হাজী ফজলু মিয়া। পরে হাজী ফজুল মিয়ার নামে ১৯৯৩ সনের ৩১ জানুয়ারি ৮০৪ নং দলিল মুলে রেজিষ্ট্রিভুক্ত হয়। সে মোতাবেক বাংলাদেশ সার্ভে (বিএস) খতিয়ান সৃজন হয় । ২০১৬ সালে রেলওয়ে জায়গা অধিগ্রহন করলে তাদের বন্দোবস্তের জায়গাটিও অধিগ্রহন করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তিনি বলেন; রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দেখে শুনে তাদের জায়গা অধিগ্রহন করে তাদের মুল্য পরিশোধ করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে বিল্লাল আরো বলেন; ঢাকা-চট্রগ্রাম ডাবল লাইন তৈরির বিষয়ে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় সংবাদে প্রকাশ করা হয় ২০১৬ সালের জমি অধিগ্রহনে কসবা বালিয়াহুড়া মৌজার ৩ নং খতিয়ানের ২নং দাগের প্রায় ২ একর জায়গায় মালিকানা পানি উন্নয়ন বোর্ডের বলে স্থানীয় অধিবাসীরা অভিযোগ করেন। কিন্তু বিল্লাল হোসেন তার বাবার নামে রেকর্ড করিয়ে ক্ষতিপুরন বাবদ এক কোটি ৭৪ লাখ ১৮ হাজার চারশত ২২ টাকা গ্রহন করেন। হাজী ফজুল মিয়ার মালিকানাধীন জায়গার গাছপালা না থাকা সত্বেও বিভিন্ন প্রজাতির গাছ দেখিয়ে এক কোটি ৪০ লাখ ক্ষতিপুরন নিয়েছেন বলে ওই সংবাদে উল্লেখ করা হয়। বিল্লাল হোসেন এ সমস্ত বিষয়কে রেল বিভাগ, জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সম্মিলিত কার্যক্রম বলে উল্লেখ করেন। এক পর্যায়ে তিনি বলেন;, রেলওয়ের অধিগ্রহনকৃত জায়গা কখনো পানি উন্নয়ন বোর্ডের ছিলোনা । উক্ত অধিগ্রহনকৃত জায়গা তার পিতার নামে বন্দোবস্ত পাওয়া সম্পদ। জায়গা অধিগ্রহন নিয়ে স্থানীয় একটি মহল আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দিয়েছে তা মিথ্যা বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন। তিনি বলেন বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আল মামুন ভূইয়া ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুন্নবী আজমল সহ একটি প্রভাবশালী মহল তার বিরুদ্ধে এসব প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছেন। তার জনপ্রিয়তাকে নষ্ট করার জন্য একটি জাতীয় দৈনিকে মিথ্যা বক্তব্য উপস্থাপনের মাধ্যমে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে। তিনিও এ বছর বায়েক ইউনিয়নের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি এক পর্যায়ে বলেন বন্দোবস্ত জায়গা তার বাবার নামে হলেও আগামী ইউপি নির্বাচনে তাকে বেকায়দা ফেলতে ওই মহলটি তাকে জড়িয়ে এসব অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি এ সকল অপপ্রচার কারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে সংবাদ সস্মেলনে জানান।
সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মো,ফেরদৌস ভূইয়া, মো.মফিজুল ইসলাম মাষ্টার, মো,সাখাওয়াত হোসেন, মো.ফুল মিয়া, মো.চান মিয়া, হাজী হেলাল উদ্দিন, মো.আবদুল আলীম ও মো.হেফজু মিয়া উপস্থিত ছিলেন । এ বিষয়ে বর্তমান বায়েক ইউপি চেয়ারম্যান আল মামুন ভূইয়া বলেন; স্থানীয় অধিবাসীরা অভিযোগ করেন বিল্লাল হোসেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা তার বাবার নামে কাগজ পত্র বানিয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের নিকট বিক্রি করে ক্ষতিপুরন বাবদ এক কোটি ৭৪ লাখ ১৮ হাজার চারশত বাইশ টাকা নিয়েছেন। তাছাড়া তার বাবা ফজলু মিয়ার মালিকানাধীন জায়গার গাছ পালা না থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন প্রজাতির গাছ দেখিয়ে এক কোটি ৪০ লাখ টাকা ক্ষতিপুরন নিয়েছেন । তিনি এ ঘটনা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার দাবী করেন । ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা নুরুন্নবী আজমল বলেন; আমরা তার বিরুদ্ধে কোনো অপপ্রচার বা প্রপাগান্ডা ছড়াইনি। তার এই প্রতারনার বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ দিয়েছি। আশে পাশে যাদের জায়গা রেলের অধিগ্রহনের পড়েছে তাদের টাকাও সে আত্মসাত করার অভিযোগ রয়েছে। তিনি বলেন; গাছ না থাকা সত্বেও অসাধূ রেল কর্মকর্তাদের যোগ সাজশে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ দেখিয়ে টাকা আত্মসাত করার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তার বিচার করা হোক। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী রঞ্জন কুমার দাস ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন; পানি উন্নয়ন বোর্ড তিন বছরের বেশী কাউকে বন্দোবস্ত দেয়া হয়না। এ বিষয়ে আমরা স্থানীয় জনগনের নিকট থেকে অভিযোগ পেয়েছি এবং একজন কর্মকর্তাকে তদন্তভার দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আমরা আইনানূগ ব্যবস্থা গ্রহন করবো।