আইন এবং আদেশ অথবা হুকুম বা নির্দেশ মানা / পালন করা সকলেরই কর্তব্য। সেই মোতাবেক আল্লাহর আইন এবং হুকুম আহকাম এমনকি নির্দেশ পালন করা বিশ্ব জাহানের সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাকলুকাতের কর্তব্য। মানুষ স্বাধীন আর এই স্বাধীনতাই মানুষকে ঐসকল আইন-কানুন পরিপালন না করার ক্ষেত্রে বিশেষ ভুমিকা রাখছে। আমরা দেখেছি যে, সকল ধর্মেরই কিছু কিছু স্বতন্ত বিধান রয়েছে আবার কিছু কিছু সামগ্রীক বিধান রয়েছে যা সকল ধর্মেই স্বৃকীত। কিন্তু স্ব স্ব ধর্ম পালন করার ক্ষেত্রেও বিশেষ তারতম্য পরিলক্ষিত হয়। তাই মহান সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে ঐ আদেশ – নির্দেশ পালন না করার জন্য অসন্তুষ্টির আগুণে পুড়ান না এমনকি পালন করার জন্য সন্তুষ্টির ভেড়াজালেও আবদ্ধ করেন না। বরং পালন করলে নিজেদেরই সুরক্ষা (দুনিয় এবং আখেরে) নিশ্চিত হয় এবং মহান সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়। আর পালন না করার ফলেও একইভাবে ইতিবাচকের পরিবর্তে নেতিবাচক সম্ভাবনাগুলি জিইয়ে থাকে যেমন, অনিশ্চয়তা, দু:খ-দুর্দশা, হতাশা, অশান্তির আগুন, আসমানী এবং জমীনি বালা মুসিবত সবই ঘ্রাস করে কুড়ে কুড়ে খায় এবং খাচ্ছে ও খাবে। যা সৃষ্টির শুরু থেকেই দৃশ্যমান এবং আজও অব্যাহত রয়েছে।
এবার বলতে চাই আমাদের সুখ্যাতি অর্জনকারী বৈশ্বিক পরিচয়ের বিষয়ে। আমরা বাঙ্গালী; বাংলা আমাদের মায়ের ভাষা আর এই ভাষতেই আমরা পথ চলি, কথা বলি এবং সংগ্রাম চর্চার মাধ্যমে দেশও স্বাধীন করেছি তাই এখন আমরা মানিনা কোন শাষন-বারন। আমরা নিজেরাই মুক্ত বিহঙ্গের মত আইন কানুণের উদ্ধে উঠে চলতে অভ্যস্ত এবং চলে আসছি ও আগামীদিনে চলব। যেসকল বিষয়ে আমাদেরকে সতর্ক করা হয় এবং যে যে আদেশ ও নির্দেশ আমাদের উদ্দেশ্যে জারি করা হয় তা মানা; না মানা আমাদের একান্তই ব্যক্তিগত। আর না মানাই আমাদের দৈনন্দিন চাহিদার যোগানের অগ্রজে পরিচালিত এবং পরিপালিত হচ্ছে। আর আমরা না মানার জন্যই বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দেশ স্বাধীন করেছি এমনকি আজ সেই স্বাধীনতা ভোগ করছি। আমাদের মঙ্গলের বিষয়ে আমরাই জানি; আমাদের ভাল মন্দ, সুখ – দু:খ সবই একান্তই আমাদের। তাই কাউকে আমাদের নিয়ে ভাবতে হবে না এমনকি কোন জ্ঞানও দিতে হবে না। আর যদিও দেন বা দিতে চেষ্টা করেন তাহলে আমাদের মনোভাবের কথা অথবা অভিপ্রায় ও অকাঙ্খাগুলিকে ভালভাবে বুঝে, দেখে ও শুনে তারপর কিছু একটা ভাইবা (সাত-পাঁচ) বইলেন। নতুবা বলাতে কোন কাজে লাগবে না। আর এর প্রমান হলো করোনা কালীন লকডাউন, স্বাস্থ্যবিধি, ঈদ নিষেধাজ্ঞা এমনকি পূর্বের বিভিন্ন কারণে দেয়া কারফিউসহ সবগুলোকে অমান্য বা অবজ্ঞা করে জনগণের এমনকি জনমনের ইচ্ছার বাধবাঙ্গা জোয়ার সয়লাভরত রাখা। সদ্য ঈদের কাফেলা গেলোনা থামানো এমনকি সেই কাফেলা আবার গন্তর্বে ফিরে আসাও যাবেনা ঠেকানো। এই কাফেলাতে নেই কোন ভয় এবং এর সঙ্গে ঈদের কেনাকাটাতেও কমতি ছিলনা ভয়হীনতার।
আমাদের আশা ও ভরসার সকল স্থানগুলি আজ যেন শুন্যের কোটায় এসে থামছে। কে শিখাবে আমাদেরকে শৃঙ্খলা, আইন- আদেশ-নির্দেশ মানার শাসন-বারন। যেখাইেন আমারা যাই না কেন সেখাণ থেকেই খোচট খেয়ে ফিরে আসতে হচ্ছে। তাই আমাদেরকে ভাল-মন্দ বোঝানোর দায়ীত্বে আর গাফিলতি কাম্য নয়। রাষ্ট্রের আইন কানুন পরিপালনে গাফিলতি আর কাম্য নয়। কোথাও যেন একটা শুন্যস্থান রয়েছে যা পুরন করা আশু কাম্য। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আন্তরিকভাবে জাতিকে যত্ন নিয়ে, ভালবাসায় আলিঙ্গন করে শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে আগামীর কল্যান সাধনে নিয়োজিত রয়েছেন। সেই কথাটিও আমাদেরকে আজ বোঝানোর প্রয়োজনীয়তা উপলব্দি করছি। প্রধানমন্ত্রীর মুখের কথাই আইন বা নির্দেশনা; তাই আমাদেরকে এই নির্দেশনগুলি মানতে এবং পালন করতে আরো সতেচন করে তুলতে হবে। প্রশাসনের সকল স্তরে এই বিষয়ে অধিক জ্ঞান দান করতে হবে পাশাপাশি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মাধ্যমে সমগ্র দেশবাসীকে এই বিষয়ে ওয়াকেবহাল করে তুলতে হবে। এটা আগামীর কল্যাণের জন্য জনগুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে। নতুবা শেষ ভরসার স্থানটুকুও হারিয়ে ফেলব।
ঈদে অনেক প্রাণ ঝড়েছে শুধু আমাদের অতিরিক্ত স্বাধীনতা ভোগের এমনকি স্বেচ্ছাচারিতার কারণে। তাই আগামীতে এই ধরণের কোন সুযোগ বা দৃষ্টান্ত জাতির সামনে আসুক তা কামনা করি না। এখন থেকেই ঘাটতিগুলো খুজে বের করে এর সমাধানকল্পে কাজ করুন। এই ঈদে যারা রাষ্ট্রের আইন, আদেশ ও নির্দেশ শতভাগ পালন করেছেন তাদের সকলকে সাধুবাদ জানাই এবং আগামীতে আরো সুশৃঙ্খল হয়ে দৃষ্টান্তের অগ্রজে থাকতে আহবান জানাই। যারা ভুল করেছেন অথবা রাষ্ট্রের আইন, আদের্শ বা নির্দেশকে উপেক্ষা করেছেন বা আমলে নেনতি তাদেরকে আহবান জানাই আগামীর কল্যাণের তরে নিজেদেরকে আরো সতর্ক হয়ে শুধরিয়ে নেন এবং জাতিকে শক্তিশালী অবস্থানে দাঁড় করাতে আপনার ভুমিকা পালন করুন। জয় আমাদের হবেই হবে ইনশাআল্লাহ। সকলকে ঈদ মোবারক এবং সাম্য ও মানবতার কান্ডারী হিসেবে নিয়োজিত থাকতে উদাত্ত আহবান জানাই।
ঈদ মানে খুশী; ঈদ মানে আনন্দ; ঈদ মানে সমতা বিধান; সাম্য এবং নিজেকে সকলের মাঝে বিলিয়ে দেয়া। ঈদ মানে ধনী ও গরীবের বিভেদ গুছিয়ে দেয়া; পরস্পর পরস্পরের কাছে আসা; ঈদ মানে শত্রুতা, হিংসা এবং বিবেধ ও ঘৃণা ভুলে সকলে এক কাতারে সাম্যের বন্ধনে ভ্রাতৃত্বের আবরণে আবদ্ধ হওয়া। ঈদ মানে মানুষে মানুষে নি:শর্ত ভালবাসার বন্ধনে জড়িয়ে আগামীর শান্তি ও স্থিতিশীলতা এমনকি নিশ্চয়তা আর নিরাপত্তার বিধান করা।
আসন্ন ঈদে আমাদের সকলের মন হউক আরও উদার এবং ক্ষমা ও ভালবাসায় পূর্ণ। আন্তরিকতা এবং নি:শর্ত ভালবাসার বন্ধনের সুতিকাঘার। এই ঈদে সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত-কে জানাই ঈদ মোবারক। ঈদ মোবারক; ঈদ মোবারক॥
ঈদ নিয়ে আসুক অনাবিল আনন্দ এবং ঘুচিয়ে যাক সকল জ্বরা ও গ্লানী আর দুর হউক সকল ভয় ও আসমানী এবং জমীনি বালা-মুসিবত। এই প্রত্যাশায় আগামীর কল্যাণের তরে নতুন অভয়ারন্যে বিচরণের ঘোষণা প্রবাহমান থাকুক। ঈদ আনন্দকে ধরেই সকলে সামনে এগুনোর পথ প্রসস্থ করুন। মহান রাব্বুল আল-আমীন আমাদেরকে তৌফিক দান করুন। আমীন॥