এবাদতপূর্ব স্মৃতিরোমন্থন

এবাদতের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হওয়ার পূর্বে স্মৃতিরোমন্থনে কিছুক্ষন অতিবাহিত করেছি; তারপর ছেলে-মেয়ে নিয়ে এবাদতের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছি। শৈশবে যখন বিশেষ করে ঈদ উদযাপনের জন্য ব্যতিব্যস্ত ছিলাম তখন কি করতে হয়েছে আর কি করেছি তাই স্মৃতিতে উকি মেরে জানান দিলো এখন নতুন অধ্যায়ে অগ্রসর হয়ে কি কি করছি আর কি কি মিস করছি। তাই সেই সুদুর অতীতে যখন রমজানের রোজা শেষ হয়ে ঈদ উপস্থিত হয় তখন কি যে আনন্দ। সকালে উঠে বাড়ি ঘর পরিস্কার করে, ছোট ভাই-বোনদের গোসন করানো এবং নিজে গোসল করে নতুন জামা পড়ে, সুগন্ধি মেখে বাড়ির মুরুব্বিদের সঙ্গে ঈদগাহে যাতায়ত করা। ঈদগাহে পৌঁছে পরিচিতজন, বন্ধুবান্দব, মুরুব্বীজন এবং আত্মীয়স্বজন সকলের সঙ্গে কোশল বিনিময় এবং ঈদের বয়ান শোনা, নামাজ বিশাল জামাতে পড়া এবং খুৎবা শেষে কোলাকোলির পালা। সবশেষে বাড়ি ফিরে মৃত মুরুব্বীদের করব জিয়ারত করে ঘরে ফিরা। তারপর সেওয়াই, সেমাই, পিঠাসহ বিভিন্ন মুখরোচক খাবার খেয়ে একটু বিশ্রাম নেয়া।

শুরু হল বন্ধুদের নিয়ে সকলের বাড়ি যাওয়া ও হরেক রকম খাবার খাওয়া এমনকি বিভিন্নরকম আনন্দ উপভোগ করে এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়িতে গিয়ে কুশল বিনিময় করা, মুরুব্বীদের সালাম করা; আবার কোলাকোলী করা। কিযে এক নির্মল
আনন্দ ছিল যা এখন অতীত। পথিমধ্যে ছোট ছেলে-মেয়েদের সালাম করার রেওয়াজ ছিল আরেকটি আনন্দ। যেখানে ছিল সালামী দিয়ে খুশি করানো একটি নিদারুন প্রশান্তি। এই সকল-ই যেন আজ অতীত। বিশেষ করে শহুরে জীবনে সম্পূর্ণ এক অপরিচিত অধ্যায়। আর গ্রামেও যেন সেই অমলিন নৈসর্গিক আনন্দগুলো প্রায় বিলিনের পথে। কি আর করা সবই এখন ডিজিটাল যুগের সুচনায় জেগে উঠা এক নতুন আনন্দের ছোয়া যা আমাদের বয়সীদের খ্যাপখাইয়ে নিয়ে সমানে সমানে সামনে এগুতে হবে বৈকি।

যাক ছেলে-মেয়ে নিয়ে এবাদতখানায় গিয়ে এবাদত করে বাসায় ফিরে এসে সেই রুমবন্দি গতানুগতিক জীবন অতিবাহিক করা ছাড়া আর কি। তবে এবার নিজে অসুস্থ্য থাকায় একটু সতর্কতার সহিত কেটেগেছে কয়েকটি দিন। আর বিশ্বের বেধে দেওয়া নিয়মের সঙ্গে তাল মিলাতে গিয়ে সরকারের সকল আদেশ ও নির্দেশ পালনে ব্যতিব্যস্ত হতে হয়েছে সকলের মত আমারও। তবে মা-বাবা, ভাই-বোন এবং নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে সামান্য যোগাযোগ ছিল তবে বেশী ঘটা করে যোগাযোগ করতে পারিনি। আর শরীর মনও সাহসের সঙ্গে সায় দেয়নি। তাই যাদের সঙ্গে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অসুস্থ্যতার অজুহাতে সুস্থ্যহওয়ার আশায় নিরব থেকে যোগাযোগ করতে পারিনি তাই তাদের কাছে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি কামনা করছি। আর আগামীতে আল্লাহর ইচ্ছায় সকলের সঙ্গে দেখা, কথা এবং আশীর্বাদ বিনিময় হবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ সবাইকে হেফজতে রাখুন। সকলকে আসমানী এবং জমীনি বালা-মসিবত থেকে সুরক্ষায় রাখুন। এই মোনাজাত সকলের জন্য অবিরত।

Leave a Reply

Your email address will not be published.