ব্র্যাক ব্যাংক একাউন্ট, ক্রেডিট কার্ড এবং লোন এই তিনটিতেই বড়ধরণের গন্ডগোল পাকিয়ে হাতিয়েছে গরীবের টাকা। তাদের শুভঙ্করের ফাঁকি বোঝার জ্ঞান ও বুদ্ধি আমাদের কারোরই নেই। তবে মেশিনে টাকা জমাদেয়ার ব্যবস্থায় নিশ্চয়তার উন্নতি হয়েছে। পূর্বে আমি আমার ক্রেডিট কার্ড ও হোম লোনের ইন্সষ্টলমেন্ট অফিসের লোকদিয়ে জমা দিয়েছি কিন্তু একদিন আমি নিজেই ষ্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে ব্র্যাক ব্যাংকে বনানী শাখায় মেশিনে জমা করেছি। দুটো ব্যাংকই পাশাপাশি আর আমি নিজে জমাদিয়েছি। কিন্তু দু:খের বিষয় হলো সন্ধ্যায় আমাকে ফোনে জানানো হলো আপনার খামটি খোলা এবং আপনি কত টাকা জমা দিয়েছেন? আমি যখন বলি সে বলে যে, না এখানে ১৫হাজার টাকা কম আছে। আমি আকাশ থেকে পড়ি এবং অবিশ্বাস করে প্রতিবাদ করি এবং ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ অনেক আশ্বাসের পর আজও কোন ফয়সালা দেয় নাই। গত ১৫বছর যাবত আমি লেনদেন করে হাজারো পরীক্ষার পর এই বক্তব্যটি জনগণের সুবিধার জন্য মিডিয়ার মাধ্যমে জানালাম।
আরো একটি বিষয় হলো যে, আমি কোনদিন ক্রেডিট কার্ডের বিল এবং জমা ও উত্তোলন এর ষ্ট্যাটমেন্ট দেখিনি; কিন্তু যখন মেশিনে টাকা জমার গরমিল পরিলক্ষিত হলো তখন কার্ডের ষ্ট্যাটমেন্ট দেখে খুজে বের করলাম একটি মেশিন দ্বারা পরিশোধিত মাসিক কিস্তি গায়েব আর ঐ ব্রাঞ্জটিও বনানী এবং একই বুথের একই মাসের দুইটি হিসাবে এই গরমিল হওয়ায় আমি সকল জমা স্লিপসহ আবেদন করে কর্তৃপক্ষের শুভ দৃষ্টি পাইনি এমনকি আমি আমার টাকা বুঝে পাইনি। এই হলো ব্র্যাক ব্যাংক এর লেনদেন কাহিনী। তবে এখন মেশিনে জমাদানে আর আগের মত গাফলা হচ্ছেনা কিন্তু পুর্বের দায় থেকে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অব্যাহতি পাওয়ার কোন উপায় নেই।
বর্তমানে ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে চলছে নতুন ভেলকিভাজি। এযেন এক ক্ষমতার তেলেসমাতি। তাই কার্ড ব্যবহারকারীরা সাবধান!। তবে আমি বিভিন্ন ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার করছি কিন্তু ব্র্যাক ব্যাংকের কার্ডের জালিয়াতি বা তেলেসমাতি অন্য ব্যাংকগুলোতে নেই বলেই আমার কাছে প্রতিয়মান হচ্ছে। কি তেলেছমাতি তার একটি জলন্ত বিবরণ তুলে ধরছি। আমি দীর্ঘদিন যাবত ব্র্যাক ব্যাংক এর ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে আসছি। গত করোনাতে কার্ড এর কিস্তি পরিশোধে গড়মিল হয়েছে। কিন্তু আমি তাদের সর্বনিম্ন চার্জ পরিশোধ করেছি। তবে আমি নিজে ব্যাংক কিস্তি পরিশোধ না করে অফিস বাহকের মাধ্যমেই করে থাকি। সবাই জানে যে, করোনাকালীন সময়ে অফিস বন্ধ এমনকি এখনও বন্ধ। কিন্তু ব্যাংক তাদের সুদ বাড়ানো বন্ধ করেনি বরং কল সেন্টার থেকে ফোন করিয়ে ত্যাক্ত-বিরক্ত করে যাচ্ছে অহরহ। একদিন আমাকে ফোন করে এবং আমি ফোন ধরে বলি সবটাকাটাই পরিশোধ করে দিব। সেই মোতাবেক আমি ডিসেম্বর ২৬’ ২০২০তারিখ ফোন করে আমার অপরিশোধীত টাকা সম্পর্কে জানতে চাই। কারন আমি সবটাই পরিশোধ করে দিব। তখন ফোনে আমাকে জানানো হয় ৩৯৩৩৩টাকা। কিন্তু আমি ২৭/১২/২০ তারিখ ৩৯৫০০টাকা পরিশোধ করে দিই। যাতে ব্যাংক আমার কাছে আর কোন টাকা পায় নি এবং পাবেও না। কিন্তু জানুয়ারী ১৫ তারিখ জানতে পারি ব্যাংক আমার কাছে আরো ৩৩২টাকা পায়। এটা কিভাবে? আমার প্রশ্ন তাহলে ঐদিব ফোনে কেন বলল না যে আরো ৫০০টাকা বেশী দিন। তবে আমি রাগ করে ঐ টাকাটা জমা করেনি। যার জন্য আমাকে গুনতে হলো ৩০০০টাকা। আমি আরো জানতে পারি যে, আমার কার্ডটি ব্লক করা আছে এবং ঐ কার্ডের মেয়াদও শেষ। আর ব্র্যাক ব্যাংক আমাকে নতুন করে কোন কার্ডও দেয়নি। কার্ডবিহীন কিভাবে তারা আমার উপর সুদ + ফাইন+ সুদ + সুদ চাপিয়ে ৩০০০টাকা নিল?
অনেকদিন পরে আমি ম্যাসেস চেক করি এবং দেখি ১৫ ফেব্রুয়ারী আমার উপর ১১৪৩টাকার বকেয়া বিল পাঠায়, ১৫মার্চ আবার ১৯৬৪টাকার বকেয়া বিল পাঠায়। এভাবে এপ্রিল মাসে আবার ২৮০১টাকার বকেয়া বিল পাঠায়। মে মাসে পাঠায় ২৮৪৫টাকার বকেয়া বিল। এই হল তাদের ফাকিবাজির ধোকা বা শুভঙ্করের ফাকির ব্যবসা। যেখানে আমার কোন কার্ড নেই এমনকি ব্যাংক আমাকে নতুন কোন কার্ডও দেয়নি সেখানে তারা ইন্টারেষ্ট যুক্ত করেই যাচ্ছে। এই নিয়মের পরিসমাপ্তি দরকার আর কার্ডহোল্ডারদের সম্মান করার দরকার। যেখানে অন্য ব্যাংকগুলো কার্ড এর মেয়াদ শেষের আগেই কার্ড পাঠিয়ে ব্যাংক সেবার দ্বার উন্মুক্ত রেখেছে সেখানে ব্র্যাক ব্যাংক এর নোংরামি জনমনে ব্যাংকটিকে নিয়েই প্রশ্ন জাগিয়েছে।
আরেকটু বলতে চাই যে, আমি সর্বশেষ মেসেজটি দেখে সিদ্ধান্ত নিই যে, ব্যাংকে গিয়ে কার্ড সম্পর্কে কথা বলব এবং কার্ডবিহীন পরিস্থিতিতে সুদের টাকা মওকুফ করিয়ে কার্ডটি সচল করতে আবেদন করিব। কিন্তু আবেদন নিয়ে যখন ব্যাংকে গেলাম তখন একজন মহিলা কর্মী আমাকে সহযোগীতার ন্যায় অসহযোগীতা করে বলল যে, আমাদের কিছুই করার নেই আপনি বরং কল সেন্টারে ফোন করে বিষয়টি বলুন। আর আপনার আবেদনটি আমি গ্রহণ করতে পারব না। যদি আপনি কার্ডটি সচল করতে চান তাহলে পুরো টাকা পরিশোধ করে আমার কাছে প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র নিয়ে আসুন। আরেক বিষয় বলে যে, আপনি আপনার বিষয়টি মেইলে আমাদেরকে জানান। কি আর করার মনে হচ্ছে এই যেন কোন এক মগের মুল্লুকে বসবাস করছি। সেই মহিলার কথানুযায়ী নিজেকে সম্মানিত এবং অতিমানবিক করতে টাকা পরিশোধ করে আবারও ঐ ব্যাংকের আরেকটি ব্রাঞ্চ এ গেলাম। কিন্তু দু:খের বিষয় হলো যে, আবারো মহিলা কর্মির সম্মুখপানে চেয়ে বিস্তারিত বললাম। কিন্তু তিনি আমাকে আরো ভীতি প্রদর্শন করলেন ভদ্রতার ছলে। মনে হলো বাংলাদেশে এই ব্র্যাক ব্যাংক যেন সন্ত্রাসী বাহীনিতে পরিণত হয়েছে। এই সন্ত্রাসী বাহিনীর হাত থেকে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীরও রেহাই নেই। অপরাধ কি? অপরাধ হলো তাদের ব্যাংকে ক্রেডিট কার্ড করেছি। কার্ড দিবে না বরং টাকা নিবে; আর না দিতে চাইলে সম্মানকে বিসর্জিত করে অসম্মান এবং ক্ষমতা দেখিয়ে বারোটা বাজাবে। দেশে কি এই অরাজকতার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা সচল নেই? আমি বললাম আমার অপরাধ কি? আপনারা কেন আমাকে বিস্তারিত বলেন নাই যে, আমি জানিনা এখন এই টাকাটা পরিশোধ করেন পরে যদি ষ্ট্যাটমেন্ট আসে তখন সেইটা কইরেন। কিন্তু না বলে গ্রাহককে ভোগান্তিতে এমনকি অসস্ততিতে ফেলে ফায়দা লুটবেন তা কেন শেখ হাসিনার ন্যায়পরায়ন সরকারের আমলে হবে, তা আমার বোধগম্য নহে। আরেকটি বিষয় হলো ঐ ২য় দিনের মহিলা কর্মি আমাকে ভুল পরামর্শ দিয়ে ফিরিয়ে দিল। মনে হলো যেন আমার সময়ের কোন দাম নেই। তারাতো জানে না যে, আমি প্রতি ঘন্টা ২০ ডলার করে পরামর্শ ফি নেই। তবে ভবিষ্যতে তাদেরকে কাছেও ঐ ফি আদায়ের জন্য চেষ্টা তদবির চালিয়ে নতুন আইনের ব্যবস্থা করতে হবে বৈকি।
পরিশেষে আমি আবার নতুন উদ্যোগে একই ব্যাংকের আরেকটি ব্রাঞ্চ এ গিয়ে এই বিষয়ে বলি তবে, তিনি পরিপূর্ণ সেবার মানসিকতা দেখিয়ে আমাকে সন্তুষ্ট করেছেন। আর তিনি মহিলা নন, তিনি পুরুষ সেবক কর্মী। আমি বিস্তারিত বলার পরে দু:খ প্রকাশ করে বলেন যে, তার দ্বারা সমস্যার সমাধান হবে না। তবে তিনি কার্ড সচল এবং পাওয়ার ব্যাপারে সহযোগীতা করতে পারবেন। তবে ঐ দুই মহিলাদ্বয়ের মত হাজারো কাগজের বাহানাবীহিন ব্যাবস্থা করলেন। ঐ কার্ডের জন্য আমার কোন হা-হা-কার নেই বরং হা-হা-কার হলো অন্যায়মূলক হয়রানির জন্য। টাকা পরিশোধেও কোন দু:খ নেই এমনকি অতিতেও ছিলনা তবে এই নেতিবাচক রক্তচোষা সন্ত্রাসী পক্রিয়ার বিরুদ্ধে বিনম্র প্রতিবাদ মাত্র। আমরা টাকা নিব এবং দেব আর এর মাধ্যমে সচল থাকবে ব্যাংক ব্যবসায়ী ও এর আওতাধীন কর্মচারী এবং কর্মকর্তারা। কিন্তু যারা কামাই’র পুত তাদেরকে অসম্মান এবং ভয়-ভীতি ও হয়রানী এমনকি অসহযোগীতাসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বেড়াজালে অবদ্ধ করা মোটেও উচিত নহে। আর শ্রদ্ধেয় ফজলে হাসান আবেদ সাহেবের অভিপ্রায় এর বিরুদ্ধই বলব। কারণ আমি তাকে চিনি ও জানি এবং তাঁর সঙ্গে আমার সম্পর্ক ছিল আত্মার; যেটা থাকবে অনন্তকাল। তাই স্বপ্নদ্রষ্টা ও স্বপ্নস্রষ্টার অভিপ্রায় বাস্তবায়ন করাই হউক আগামী দিনের ব্র্যাকের সকল কর্মকান্ড।