কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি ॥ সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার হরিনাথপুর গ্রামের বাদশা মিয়া পেশায় রিকশাচালক। জীবিকার প্রয়োজনে বছরের অধিকাংশ সময় তিনি রিকশা চালান রাজধানী ঢাকায়। বাদশা মিয়ার পুরো পরিবার বাস করে গ্রামের বাড়িতে। বাড়ি থেকে এক শ গজ পূর্বে পাকা রাস্তায় ওঠার একটি গলিপথ। সম্প্রতি প্রতিবেশী গোলাম হোসেন স্থাপনা নির্মাণের সময় গলিপথটির অধিকাংশ জায়গা দখল করে নেন। আর গলিপথের শেষ অংশে বসিয়ে দেন টিনের গেইট। দিনের বিভিন্ন সময় ওই গেইট লাগানো থাকে। ফলে বাদশা মিয়া এবং আরো সাতটি পরিবারের প্রায় অর্ধশত মানুষের চলাচলে দেখা দেয় বিড়ম্বনা। নিজেদের ইচ্ছায় তাঁরা নিজ বাড়ি থেকে বের হতে পারেন না। এ নিয়ে এলাকায় অনেকবার শালিসি বৈঠক হলেও হয়নি কোনো সুরাহা। বাধ্য হয়ে এই সমস্যার নিরসনে গত বৃহস্পতিবার (১০ জুন) কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বাদশা মিয়া।
গত বুধবার (৯ জুন) বিকেলে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে দেখা যায়, বাদশা মিয়ার বাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্য ছোট্ট একটি গলিপথ রয়েছে। গলিপথটি দিয়ে একটি বস্তা মাথায় নিয়ে বা একটি সাইকেল নিয়ে ঢোকার উপায় নেই। যেটুকু গলি রয়েছে তারও পাশে বৃষ্টির পানিতে মাটি কেটে যাওয়া ঠেকানোর অজুহাতে বস্তা ফেলে রাখা হয়েছে। ফলে আরো সরু হয়ে গেছে চলাচলের পথ।
ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাবার দাদার সম্পত্তিতে ইচ্ছে অনুযায়ী বাটোয়ারা করে নিয়েছেন গোলাম হোসেন। এমনকি সম্পত্তি পাকাপোক্ত করতে নিজের স্ত্রীর নামে দলিলও করে দিয়েছেন তিনি। এ সময় নাম প্রকাশ না করার শর্তে গোলাম হোসেনের একাধিক প্রতিবেশী জানান, গোলাম হোসেন চালাকি করে জমির পূর্ব পাশ দিয়ে দখল নিয়েছেন। যাতে বাদশাদেরকে রাস্তায় বের হতে না দেওয়া যায়। ভুক্তভোগী বাদশা মিয়া বলেন, গলির মুখে একটি টিনের গেইট দিয়েছে। ওইটা সবসময় বন্ধ করে রাখে। এমনকি তালা দিয়েও রাখে। রাতে কোনো জরুরি কাজে বের হওয়ার সুযোগ নেই। কিছুদিন আগে উনি (গোলাম হোসেন) আমাদের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানিও করেছেন। এদিকে, অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলেননি গোলাম হোসেন। তাঁর ছেলে আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘ওদেরকে বাইরে বের হওয়ার জন্য তো রাস্তা দিতেই হবে। কিন্তু ওরা তো মানুষ ভালো না।’
কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হাসান সিদ্দিকী বলেন, ‘বিষয়টি জেনেছি। গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে খোঁজ নিচ্ছি। ঘটনার সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’